সমাপ্তি হচ্ছে সেই বালিশকাণ্ডের

পাবনার রূপপুর গ্রীণসিটি প্রকল্পে (২০১৯ সালে নির্মাণাধীন) আসবাবপত্র ও সামগ্রী ক্রয় এবং ভবনে উঠানোর কাজে অস্বাভাবিক ব্যয়ের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় গণপূর্ত অধিদপ্তরের দুই উপ-সহকারী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার।
এর মধ্যে উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. শাহীন উদ্দিনকে বাধ্যতামূলক অবসর এবং উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. আলমগীর হোসেনকে নিম্নবেতন গ্রেডে অবনমিতকরণ শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত পৃথক আদেশে এ শাস্তি প্রদান করা হয়।
উপ-সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) মো. শাহীন উদ্দিন (সাময়িক বরখাস্তকৃত), পাবনা গণপূর্ত উপবিভাগ এবং মো. আলমগীর হোসেন, উপ-সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল), রাজশাহী গণপূর্ত জোনে কর্মরত থাকার সময় রূপপুর গ্রীণসিটি প্রকল্পের (২০১৯ সালে নির্মাণাধীন) ২০ ও ১৬ তলা ভবনের আসবাবপত্র ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী ক্রয় এবং ভবনে উঠানোর কাজে অস্বাভাবিক ব্যয়ের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। বিষয়টি বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়। এ ঘটনার পর ১৯ মে ২০১৯ তারিখে গণপূর্ত অধিদপ্তর এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের গঠিত পৃথক তদন্ত কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে, যেখানে আসবাবপত্র ও সামগ্রী ক্রয় এবং ভবনে উঠানোর কাজে অস্বাভাবিক ব্যয় প্রমাণিত হয়।
তদন্ত কমিটির সুপারিশ মোতাবেক অস্বাভাবিক ব্যয়ের প্রাক্কলন প্রস্তুতের সাথে সরাসরি জড়িত থেকে দায়িত্ব পালনে অবহেলা করায় সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর বিধি ৩ উপবিধি (খ) অনুযায়ী “অসদাচরণ' এর অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় মো: শাহীন উদ্দিনকে 'অসদাচরণ' এর অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশনের পরামর্শ মোতাবেক সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর বিধি ৪ এর উপবিধি ৩ এর (খ) অনুযায়ী তাকে 'বাধ্যতামূলক অবসর প্রদান' গুরুদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
উপ-সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) মো. আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে অস্বাভাবিক ব্যয়ের প্রাক্কলন প্রস্তুতে সরাসরি জড়িত থেকে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। এ কারণে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর বিধি ৩(খ) অনুযায়ী ‘অসদাচরণ’-এর অভিযোগে তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের পরামর্শ অনুযায়ী একই বিধিমালার ৪(৩)(ক) ধারা অনুসারে তাকে ‘নিম্নবেতন গ্রেডে অবনমিতকরণ’ গুরুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিভাগীয় মামলার যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে সরকারি কর্ম কমিশনের পরামর্শ অনুযায়ী এবং রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে গত ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত পৃথক আদেশে তাদের বিরুদ্ধে গুরুদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।