গাজার আরও এক স্কুলে ইসরায়েলি হামলা, জাতিসংঘ কর্মীসহ নিহত ১৮
গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার ইসরায়েল। অবরুদ্ধ গাজার একটি স্কুলে আবারও বর্বর হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে কমপক্ষে ১৮ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৬ জন জাতিসংঘের কর্মী। মর্মান্তিক এ হামলায় আহত হয়েছেন আরও ২০ জন।
আজ বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী মধ্য গাজায় জাতিসংঘ-পরিচালিত আল-জাউনি স্কুলে বোমা হামলা চালিয়েছে। এতে কমপক্ষে ১৮ জন নিহত হয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, হামলায় ‘নারী ও শিশুদের ছিন্ন-ভিন্ন করা হয়েছে’।
ইসরায়েলের লাগাতার আগ্রাসনের কারণে হামলার শিকার স্কুলটিতে ফিলিস্তিনি শরণার্থী পরিবারগুলো আশ্রয় নিয়েছিল এবং স্কুলটি আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল। আল জাজিরা বলছে, নিহতদের মধ্যে ছয়জন ইউএনআরডব্লিউএ কর্মী। তাদের মধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রের ব্যবস্থাপকও রয়েছেন।
সংস্থাটি বলেছে, গত ১১ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা এই যুদ্ধে একক কোনও হামলার ঘটনায় এটিই তাদের কর্মীদের সর্বোচ্চ মৃত্যুর ঘটনা।
এদিকে গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস বলছে, মধ্য গাজা উপত্যকায় আশ্রয়কেন্দ্রে পরিণত হওয়া একটি স্কুলে বিমান হামলায় নারী ও শিশুসহ অন্তত ১৮ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ২০ জন। গত বছরের অক্টোবরে গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এনিয়ে পঞ্চমবারের মতো ইসরায়েলি বাহিনী এই আশ্রয়কেন্দ্রে বোমাবর্ষণ করল।
অন্যদিকে গাজায় যুদ্ধবিরতির চেষ্টা চলছে। ভূখণ্ডটির স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস মধ্যস্থতাকারীদের বলেছে, তারা কোনো পক্ষের কাছ থেকে কোনো নতুন শর্ত ছাড়াই মার্কিন-প্রস্তাবিত ও জাতিসংঘ-সমর্থিত যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব বাস্তবায়ন করতে প্রস্তুত।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
মূলত ইসরায়েলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।
এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।