এবার ফিলিস্তিনি শিশুকে ডুবিয়ে হত্যার চেষ্টা মার্কিন নারীর
গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় নির্মম আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার ইসরায়েল। তবে এর পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রেও বেড়েছে ফিলিস্তিনিদের প্রতি ঘৃণা। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রে এক শিশুকে ছুরিকাঘাত করে হত্যার চেষ্টা করেছিলো এক মার্কিনী। এবার যুক্তরাষ্ট্রে এক নারীর বিরুদ্ধে তিন বছর বয়সী এক ফিলিস্তিনি-আমেরিকান মুসলিম মেয়ে শিশুকে পানিতে ডুবিয়ে হত্যারচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। মায়ের ফিলিস্তিনি পরিচয় জানার পর একটি অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সের সুইমিং পুলে শিশুটিকে পানিতে চুবিয়ে হত্যার চেষ্টা চালান টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের বাসিন্দা এলিজাবেথ উলফ (৪২)। তার বিরুদ্ধে শিশুহত্যার চেষ্টা এবং আঘাতের অভিযোগ এনেছে টেক্সাস পুলিশ। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার সময় উলফ ঘোর নেশাগ্রস্ত ছিলেন।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিনএনএনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
গত ১৯ মে এ ঘটনা ঘটে। এদিন শিশুটির মা হিজাব পরিহিত অবস্থায় বাচ্চাদের নিয়ে পুলে যান। এ সময় উলফ তাকে ধর্ম ও জাতীয়তা নিয়ে প্রশ্ন করা শুরু করেন। পরিচয় নিশ্চিত হয়েই ওই নারীর পুলে থাকা দুই সন্তানের ওপর চড়াও হন তিনি।
শিশুটির মা পুলিশকে জানান, ফিলিস্তিনি পরিচয় পেয়ে প্রথমে তার ছয় বছর বয়সী ছেলেকে ধরার চেষ্টা করেন উলফ। কিন্তু ছেলেটি উলফের কাছ থেকে নিরাপদ দূরত্বে সরে যায়, তবে তার হাতে আঁচড় লাগে। ছেলেটি ছিটকে যাওয়ার পর তিন বছরের মেয়েটির ওপর চড়াও হন উলফ। মেয়েটিকে তিনি পানির নিচে চেপে ধরেছিলেন। ঘটনার দিন উলফকে আটক করা হলেও জামিনে পরদিনই তিনি স্থানীয় ট্যারান্ট কাউন্টি কারাগার থেকে ছাড়া পেয়ে যান। এতে উদ্বেগ প্রকাশ করে ফিলিস্তিনি ওই মা বলেন, ‘আমরা মার্কিন নাগরিক হলেও মূলত ফিলিস্তিনি। আমি জানি না, বাচ্চাদের নিয়ে কোথায় গেলে আমরা নিরাপদে থাকতে পারব। আমার দেশ একটি যুদ্ধের মধ্যে আছে এবং আমরা এখানেও সেই ঘৃণারই মুখোমুখি হচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার মেয়ে আতঙ্কিত হয়ে আছে। যখনই আমি অ্যাপার্টমেন্টের দরজা খুলি, সে দৌড়ে পালিয়ে যায় আর আমাকে বলে যে সে ভয় পাচ্ছে কখন না জানি ওই নারী এসে আবার তার মাথা পানিতে ঠেসে ধরে।’ মানবাধিকার কর্মীরা জানান, গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ইসলামভীতি, ফিলিস্তিনবিরোধী পক্ষপাত এবং ইহুদি বিদ্বেষ বেড়েছে।
সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানান, এ ঘটনার খবরে তিনি ‘গভীরভাবে মর্মাহত’। সংঘটিত এ ঘটনায় একটি ঘৃণাত্মক অপরাধের তদন্ত দাবি করেছে আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশনসের (সিএআইআর) টেক্সাস শাখা।