ক্ষুধার্থ গাজাবাসীর জন্য পাঠানো ট্রাকভর্তি ত্রাণ ফেলে দিচ্ছ ইসরায়েলিরা
বোমা হামলায় হাজার হাজার নিরীহ ফিলিস্তিনিকে হত্যার পর এবার দুর্ভিক্ষকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে দখলদার ইসরায়েল। গত ৭ মাসের অধিক সময় ধরে চলা ইসরায়েলি হামলায় পুরো গাজা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। সেইসঙ্গে দেখা দিয়েছে দুর্ভিক্ষ। তবে চরম মাত্রার দুর্ভিক্ষ থেকে বাঁচাতে গাজাবাসীর জন্য ত্রাণ সহায়তা পাঠাচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা। কিন্তু গাজায় যাওয়া ট্রাকভর্তি ত্রাণ ফেলে দিচ্ছে ইসরায়েলিরা।
আজ মঙ্গলবার (১৪ মে) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি বিক্ষোভকারীরা গতকাল সোমবার গাজার উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া ত্রাণবাহী ট্রাক অবরোধ করেছে। তারা পশ্চিম তীরে ট্রাক থেকে ত্রাণের প্যাকেটগুলো রাস্তায় ফেলে দিয়েছে এবং শস্যের প্যাকেট ছিঁড়ে ফেলেছে।
ট্রাক থেকে ফেলে দেওয়া এ ত্রাণগুলো হেবরনের পশ্চিমাঞ্চল দিয়ে জর্ডান থেকে এসেছিল। এগুলো গাজা খাদ্য ও ত্রাণ সংকটে থাকা উপত্যকার হাজার হাজার মানুষের জন্য পাঠানো হচ্ছিল।
ইসরায়েলিদের এমন কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। তারা এ ত্রাণের ট্রাক লুটের ঘটনাকে ইসরায়েলিদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ বলে উল্লেখ করেছে।
বিক্ষোভকারীদের দাবি, তারা গাজায় ইসরায়েলি জিম্মিদের জন্য মুক্তির দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, বিক্ষোভকারীরা লরি থেকে ত্রাণের বাক্স ফেলে দিচ্ছে। এ ছাড়া এগুলো পড়ে যাওয়ার পর তারা তা আবার ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিচ্ছে। এ ছাড়া কিছু ভিডিওতে সন্ধ্যার দিকে গাড়িতে আগুন দিতে দেখা গেছে। যদিও এগুলো স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি বিবিসি।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, এ বিক্ষোভের জন্য টিজাভ ৯ গোষ্ঠী দায়ী। এ গোষ্ঠীটিকে ডানপন্থি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তারা গাজায় ইসরায়েলি জিম্মি থাকায় সেখানে ত্রাণ সহায়তা বন্ধের দাবি জানিয়ে আসছে।
বার্তা সংস্থা এএফপিকে এক বিক্ষোভকারী বলেন, তিনি সোমবার চেকপয়েন্টে ছিলেন কারণ তিনি শুনেছেন যে হামাসের জন্য ত্রাণবাহী ট্রাক আসছে। তাদের হাতে ইসরায়েলি সেনাসহ নাগরিকরা হত্যার শিকার হয়ে আসছে।
হানা গিয়েত নামের এক বিক্ষোভকারী বলেন, জিম্মিরা সুস্থ ও জীবিত অবস্থায় ইসরায়েলে না ফেরা পর্যন্ত গাজায় কোনো ধরনের খাবার প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।
মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান বলেন, বিক্ষোভকারীদের আচরণ ‘সম্পূর্ণ এবং সম্পূর্ণরূপে অগ্রহণযোগ্য’। হোয়াইট হাউস ইসরায়েল সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছে।