গাজামুখী ত্রাণবাহী ট্রাক আটকে দিলো কট্টর ইসরায়েলিরা
গাজায় গত ৭ মাস ধরে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার ইসরায়েল। ইসরায়েলের চলমান হামলায় ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে গাজার ৮৫ শতাংশ ঘরবাড়ি। এছাড়া উদ্বাস্তু হয়েছেন অধিকাংশ গাজাবাসী। অল্পবিস্তর যে খাদ্যপণ্য উৎপাদন হতো গাজায়, ইজরায়েলি হামলায় সেগুলোও বন্ধ। ফলে দুর্ভিক্ষের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে ১৯ লাখের অধিক ফিলিস্তিনবাসী। তাদের জন্য ত্রাণই একমাত্র ভরসা। তবে ত্রাণ প্রবেশে বারবার বাঁধা দিয়ে আসছে দখলদার ইসরায়েলি সেনারা। তবে অবাক করা বিষ হলো, শুধু ইসরায়েলি সেনারাই নয়, ইহুদিবাদী ইসরায়েলিরাও গাজায় ত্রাণ সরবরাহ আটকে দিচ্ছে।
গতকাল সোমবার (৬ মে) রাতে ফিলিস্তিনিদের জন্য পাঠানো ত্রাণবাহী ট্রাক আটকে দিয়েছে একদল কট্টরপন্থি ইসরায়েলি। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ট্রাক থামিয়ে স্লোগান দিচ্ছে তারা। এমনকি ট্রাক থেকে খাবার তুলে নিয়ে রাস্তায় ছুঁড়ে ফেলা হচ্ছে।
ইসরায়েলি গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে আলজাজিরা জানায়, অধিকৃত পশ্চিম তীরের একটি মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে প্রায় ডজনখানেক চরম ডানপন্থি ইসরায়েলি। ওই মহাসড়ক দিয়ে গাজায় ত্রাণবাহী ট্রাক নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। ইসরায়েলি সম্প্রচার মাধ্যম কান যে ফুটেজ প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায়, পুলিশ বিক্ষোভকারীদের থামানোর চেষ্টা করছে।
জানা গেছে, জাভ নাইন গ্রুপের সদস্যরা এই বিক্ষোভ করেছে। ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, সোমবার রাতে ওই ইসরায়েলিরা ট্রাকের সামনে স্লোগান দিচ্ছে এবং ইসরায়েলি পতাকা দোলাচ্ছে। ওয়াই-নেট-নিউজ আউটলেট জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীরা ট্রাক থামিয়ে খাবার ও অন্যান্য ত্রাণসামগ্রী হাতে তুলে নেয়। পরে সেগুলো রাস্তায় ছুঁড়ে ফেলে তারা।
জর্ডান থেকে গাজায় ওই ত্রাণ নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। ট্রাকগুলো অধিকৃত জেরুজালেমের ভেতর দিয়ে যাচ্ছিল। তখনই এ ঘটনা ঘটায় জাভ নাইন। তবে এখানেই থেমে না থাকার ঘোষণা দিয়েছে জাভ নাইন। এক বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, গাজায় জিম্মি থাকা সব ইসরায়েলিকে হামাস মুক্তি না দিলে তারা ট্রাক আটকে দেওয়া অব্যাহত রাখবে।
এর আগে জাতিসংঘ জানিয়েছিলো, গাজায় ক্ষুধাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে ইসরায়েল।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজাকে নির্বিচারে হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। তাদের বর্বর হামলা থেকে বাদ যায়নি হাসপাতাল ও শরণার্থী শিবির। এমনকি ত্রাণ নিতে আসা ফিলিস্তিনিদের ওপরও হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এবার ফিলিস্তিনিদের মুখের খাবার কেড়ে নিতে রাস্তায় নেমে এসেছে একদল কট্টরপন্থি ইসরায়েলি।
এদিকে ভয়াবহ ইসরায়েলি আগ্রাসনের মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে রাফা। হামলার আগে রাফার মানুষজনকে সেখান থেকে চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়ে লিফলেটও ছড়িয়েছে ইসরায়েলি। এর কয়েক ঘণ্টা পর ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস জানায়, তারা ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। তবে ইসরায়েল বলছে, তারা যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়নি।