রোজায় ত্রাণ নিতে আসা ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি হামলা; নিহত ৭
গতকাল সোমবার থেকে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে শুরু হয়েছে রমজান। পবিত্র এ মাসেও বন্ধ হয়নি অবরুদ্ধ গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি নিপীড়ন। গত অক্টোবরে গাজায় হামাস ধ্বংসের নামে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে পেরিয়ে গেছে ৫ মাস। দীর্ঘ এ সময়ে ফিলিস্তিনিদের ওপর নির্বিচার হামলা ও অভিযানের পাশাপাশি ত্রাণ ও মানবিক সহায়তা পণ্যের সরবরাহেও বাধা দিচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য, বিশেষ করে খাদ্য ও চিকিৎসা পণ্যের অভাবে মৃত্যুর মিছিল শুরু হয়েছে গাজায়।
সর্বশেষ রমজানের দ্বিতীয় দিন অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে ত্রাণ নিতে জড়ো হওয়া ক্ষুধার্ত মানুষের ওপর আবারও হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এ হামলায় অন্তত ৭ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। আহতদের মধ্যে ২০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে ভয়াবহত ও অমানবিক এ চিত্র।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার (১২ মার্চ) গাজার দক্ষিণে অবস্থিত কুয়েত গোলচত্বরে ত্রাণবাহী ট্রাকের জন্য অপেক্ষা করছিলেন কিছু ফিলিস্তিনি। এ সময় ওই জটলার মধ্যে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারিয়েছেন ৭ জন। এছাড়া আহতদের মধ্যে অন্তত ২০ জন লোককে আল-শিফা মেডিকেল কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়েছে।
এদিকে রোববার (১০ মার্চ) চাঁদ রাতেও গাজার মধ্যাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলে স্থল ও আকাশপথে হামলা চালায় ইসরায়েল। এতে গাজা সিটিতে ১৩ জন ও খান ইউনিসে ১৭ জন নিহত হন। এরপরই বিবৃতি দেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি। যেখানে তিনি বলেন, ‘মধ্যস্থতাকারীরা যুদ্ধবিরতির যেসব শর্ত দিয়েছিল, হামাস সেসবের বিপক্ষে। তাই বর্তমানে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর যে সর্বাত্মক অভিযান চলছে, তা রমজানেও অব্যাহত থাকবে।’
এর আগের দিনই মার্কিন সংবাদমাধ্যম এমএসএনবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, হামাসকে নির্মূল করার অধিকার ইসরায়েলের আছে, তবে গাজায় যে হারে বেসমারিক লোকজন হতাহত হচ্ছেন, তাতে দিন দিন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ওপর অধৈর্য হয়ে উঠছেন তিনি।
গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, গাজায় আগ্রাসন শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় ৩১ হাজার ৪৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। ৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা এই ইসরায়েলি আগ্রাসনে অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে আহত হয়েছেন ৭২ হাজার ৬৫৪ জন বাসিন্দা।