হাতের শিরা না পাওয়ায় আটেক গেল সিরিয়াল কিলারের মৃত্যুদণ্ড
হাতের শিরা খুঁজে পাওয়া যায়নি। এজন্য আটকে গেলো এক সিরিয়াল কিলারের মৃত্যুদণ্ড। এমন ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রের আইডাহো অঙ্গরাজ্যে।
এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই সিরিয়াল কিলারের নাম থমাস ইউজিন ক্রিচ। প্রাণঘাতী ইনজেকশনের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে গিয়ে ৭৩ বছরের ক্রিচের হাতের শিরাই খুঁজে পাচ্ছিলেন না মেডিকেল টিম।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সিরিয়াল কিলার থমাস ক্রিচকে স্থানীয় সময় বুধবার এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে ফাঁসির চেম্বারে একটি টেবিলে আটকে রাখা হয়। মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে গিয়ে মেডিকেল টিম তাঁর হাতের শিরায় ইনজেকশন দিতে পারছিলেন না। আটবার চেষ্টার পরও ক্রিচার হাতের শিরা মেলেনি।
আইডাহো সংশোধন দপ্তরের (আইডিওসি) পরিচালক জোশ টেওয়াল্ট বলেন, ‘ক্রিচের হাত ও পায়ে একটি আইভি লাইন সেট করার জন্য আটবার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর তার মৃত্যুদণ্ড সাময়িক স্থগিত করা হয়।’
তিনি বলেন, ‘এই মুহুর্তে আমাদের সময়সীমা বা পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে ধারণা নেই। তবে আমরা পরবর্তীতে করণীয় সম্পর্কে আলোচনা করব।’
স্থানীয় কেটিভিবি টেলিভিশনের প্রতিবেদক ব্রেন্ডা রদ্রিগেজ বলেন, ‘শিরা খুঁজে পাওয়ার চেষ্টার সময় বারবার সুঁই ঢোকানোর পরও ক্রিচ কোনোবারই ব্যথা পেয়েছিলেন বলে মনে হয়নি। তবে একবার যদিও তিনি চিকিৎসা কর্মীদের বলেছিলেন যে পায়ে কিছুটা ব্যথা লেগেছে।’
রদ্রিগেজ বলেন, ‘মৃত্যুদণ্ড কার্যকর বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তিনি শুধু ওপরের দিকে তাকাচ্ছিলেন। তিনি কিছুটা গুনগুন শব্দ করছিলেন, যা অস্পষ্ট। তাকে দেখে মনে হয়েছে, স্বস্তিতেই রয়েছেন ক্রিচ।’
ক্রিচ ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের তালিকায় রয়েছেন। গত ১২ বছরের মধ্যে আইডাহোতে তিনিই প্রথম ব্যক্তি যার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হতে যাচ্ছে। ক্রিচ নিজেই ৪২ খুনের কথা স্বীকার করলেও তাঁকে পাঁচটি খুনের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।
কেবল ক্রিচই নয়, প্রাণঘাতী ইনজেকশনের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ব্যর্থ চেষ্টার শিকার হওয়ার ঘটনা আগেও ঘটেছে। ২০২২ সালে অ্যালাবামা অঙ্গরাজ্যে দোষী সাব্যস্ত খুনি কেনেথ স্মিথের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে গিয়েও এমন ঘটনা ঘটেছে।
যুক্তরাষ্ট্রে সাধারণত হাত-পায়ের শিরায় প্রাণঘাতী ইনজেকশন, গ্যাস চেম্বারে ঢুকিয়ে কিংবা গুলি করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়ে থাকে। ২০২৩ সালে দেশটিতে মোট ২৪টি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। এগুলো সবগুলোতেই ব্যবহৃত হয়েছে প্রাণঘাতী ইনজেকশন।
যুক্তরাষ্ট্রের কিছু অঙ্গরাজ্যে এখনও মৃত্যুদণ্ডের বিধান থাকলেও দেশটির ২৩টি রাজ্যে সর্বোচ্চ শাস্তি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়া অ্যারিজোনা, ক্যালিফোর্নিয়া, ওহাইও, ওরেগন, পেনসিলভানিয়া এবং টেনেসি অঙ্গরাজ্যে মৃত্যুদণ্ড স্থগিত রয়েছে।