যে প্রক্রিয়ায় এখনও ক্ষমতায় আসতে পারেন ইমরান খান
যুক্তরাষ্ট্রের ষড়যন্ত্রের কারণে ক্ষমতাচ্যুত হন ইমরান খান ও তার দল তেহরিক-ই-ইনফাস (পিটিআই)। ইমরান খানের সেই অপমানের জবাব দিয়েছেন দেশটির জনগণ। ২৬৫ আসনের মধ্যে ২৫২টি আসনের ফল ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে ইমরান খানের দল পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৯৯টি আসন পেয়েছে। অন্যদিকে নওয়াজ শরিফের পিএমএল-এন পেয়েছে ৭২টি আসন এবং বিলাওয়াল ভুট্টোর পিপিপি পেয়েছে ৫২টি আসন। তবে ভোটে সবচেয়ে বেশি আসন পেয়ে এগিয়ে থাকলেও রাজনীতির খেলায় শেষ পর্যন্ত হারতে হচ্ছে ইমরান খানকে।
সব ঘটার দেশ হিসেবে পরিচিত পাকিস্তান। তাই এ দেশ নিয়ে আগে থেকে কোনো কিছু বলা মুশকিল। আর বিষয়টা যদি হয় রাজনীতি তাহলে তো কথাই নেই। সমীকরণের পর সমীকরণ সাজালেও উত্তর মেলানো দায়। নতুন নতুন জটিল হিসাব সামনে এসে দাঁড়াবেই।
নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা প্রায় শেষদিকে। ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী, নওয়াজ শরিফ কিংবা বিলাওয়াল ভুট্টোর চেয়ে এখনো অনেকটা এগিয়ে রয়েছেন ইমরান সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। তবে পিছিয়ে থাকলেও জোট করে সরকার গঠনের কথা জানিয়ে দিয়েছে নওয়াজের পিএমএল-এন এবং বিলাওয়ালের পিপিপি। দল দুটি নির্বাচনে যথাক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে।
তবে যেমনটা বলা হয়ে থাকে, পাকিস্তানের রাজনীতিতে শেষ বলতে কোনো কথা নেই। যে কোনো সময় নাটকীয় কিছু ঘটে যেতে পারে, যা বদলে দিতে পারে পুরো রাজনৈতিক সমীকরণ।
সূত্রের বরাতে জিও নিউজ জানায়, শুক্রবার রাতে পাঞ্জাবের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মুখ্যমন্ত্রী মহসিন নকভির বাসভবনে পিপিপি শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে দেখা করেন শাহবাজ। দলীয় সূত্র জানায়, বিলাওয়ালের বাবা আসিফের সঙ্গে ভবিষ্যৎ সরকার গঠন নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং পিএমএল-এন সুপ্রিমো নওয়াজ শরিফের বার্তাও পৌঁছে দিয়েছেন শাহবাজ। পিপিপির এই দুই নেতাকে পাকিস্তানে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য পিএমএল-এনের নেতাদের সঙ্গে বসার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
সূত্র আরও জানায়, পাঞ্জাবে ও কেন্দ্রে সরকার গঠনের বিষয়ে সম্মত হয়েছেন শাহবাজ ও আসিফ। পরবর্তী বৈঠকে এ বিষয়ে নিজ নিজ বক্তব্য তুলে ধরবে দুই দল। ওই বৈঠকেই ক্ষমতা ভাগাভাগি, কে কোন মন্ত্রণালয়ে বসবে, এসব বিষয় চূড়ান্ত হবে।
তবে বিপত্তি বাধতে পারে জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, সেটা নিয়ে। কেননা নওয়াজ ও বিলাওয়াল দুজনই এবার প্রধানমন্ত্রী পদপ্রত্যাশী। পিপিপির শীর্ষ মুখপাত্র খুরশিদ শাহ জিও নিউজকে বলেছেন, নওয়াজ শরিফ নয় তারা পাকিস্তানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দলের চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারিকে দেখতে চান।
এ নিয়ে যদি দুই দলের মধ্যে মতপার্থক্য দেখা দেয় তাহলে ইমরান খানের জন্য নতুন দুয়ার খুলে যেতে পারে। চাইলেই পিপিপি বা পিএমএল-এনের সঙ্গে জোট গঠন করে সরকারে আসতে পারবেন পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। তবে পিপিপি বা পিএমএল-এনের সঙ্গে জোট করে সরকার গঠনের বিষয়ে আগেই ‘না’ বলে রেখেছে পিটিআই। অবশ্য রাজনীতিতে শেষ বলেতে কোনো কিছু নেই। যদি সব বিষয়ে বনিবনা হয়েই যায় তাহলে যোগ্য নেতা হিসেবে অর্থনৈতিক সংকটে জর্জরিত পাকিস্তানের হাল ধরতে পারেন ইমরান খান। পেতে পারেন কারামুক্তি!