ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ছাড়া ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক নয়: সৌদি আরব
কয়েকদিন আগেও ইসরায়েলের সঙ্গে সৌদি আরবের সম্পর্ক স্বাভাবিক হচ্ছে বলে গুঞ্জন উঠেছিলো। গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতার পরেও ইসরায়েলের সঙ্গে সৌদির সম্পর্ক স্বাভাবিককরণ অনেকের মনে প্রশ্ন ও ক্ষোভের সৃষ্টি করে। তবে সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান বলেছেন, স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত ইহুদিবাদী ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করা হবে না।
গত রবিবার মার্কিন টেলিভিশন চ্যানেল সিএনএন-কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।
প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান বলেন, “আমরা স্থিতিশীলতা চাই এবং একমাত্র ফিলিস্তিন সংকট সমাধানের মধ্য দিয়েই স্থিতিশীলতা আসতে পারে। এটাই একমাত্র পথ যেখান থেকে আমরা লাভবান হতে পারি।”
সাক্ষাৎকারের অন্য জায়গায় মন্ত্রী বলেন, সৌদি আরবের এজেন্ডার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে গাজা সংঘাতের অবসান এবং বেসামরিক নাগরিকদের হতাহতের ঘটনা বন্ধ।
তিনি বলেন, “আমরা গাজায় যা দেখছি তা হচ্ছে ইসরাইলি বাহিনী গাজা উপত্যকা এবং সেখানকার সাধারণ লোকজনকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। এটা সম্পূর্ণভাবে অপ্রয়োজনীয় এবং অগ্রহণযোগ্য। এগুলো বন্ধ করতে হবে।”
সুইজারল্যান্ডের দাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বৈঠকে যোগ দেয়ার সময়ও সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী একই ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন। তবে গত মঙ্গলবার ইসরাইলের যুদ্ধবাজ প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের ধারণা প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি গাজার ওপর চিরদিনের জন্য সামরিক নিয়ন্ত্রণ গ্রহণের পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেন।
গাজায় ৭ অক্টোবর অভিযানের আগ মুহূর্তে সৌদি আরব ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছিল। ঠিক সেই মুহূর্তেই গাজা-ইসরাইল সংঘাত শুরু হয়ে যায়। প্রায় চার মাসের কাছাকাছি সময় ধরে গাজায় ইসরাইলি গণহত্যা চললেও সৌদি আরবের পক্ষ থেকে ইসরাইলের উপর কোনো চাপ সৃষ্টিমূলক কথা বলা হয়নি।
এদিকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় হু হু করে বাড়ছে নিহতের সংখ্যা। ৭ অক্টোবর থেকে চালানো এই নৃশংস হামলায় গতকাল পর্যন্ত ২৫ হাজার ২৯৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ৬২ হাজারের অধিক ফিলিস্তিনি।
ইসরায়েলি হামলার কারণে শতাব্দীর সবচেয়ে বড় মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে গাজায়। গাজার প্রায় ৭০ শতাংশ বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে গেছে। ১৯ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত। জীবনধারণের প্রয়োজনীয় কিছুই নেই সেখানে। খাদ্য, পানি, বাসস্থান, চিকিৎসা, বিদ্যুৎ, ইন্টারনেট সংযোগ সবকিছুই বন্ধ করে দিয়েছে দখলদার ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ।