লোহিত সাগরে এলএনজি চালান স্থগিত করল কাতার
গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে লোহিত সাগরে ইসরায়েলি জাহাজকে টার্গেট করে হামলা চালানো শুরু করে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা। এর প্রতিবাদে ইয়েমেনে হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য বাহিনী। এতে অঞ্চলটিতে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। এরই প্রেক্ষাপটে লোহিত সাগরে হয়ে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) চালান স্থগিত করেছে কাতারের রাষ্ট্রীয় এনার্জি কোম্পানি। ইয়েমেনে হুথি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে মার্কিন নেতৃত্বাধীন হামলার পর এ ঘোষণা করল কাতার। অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে এবার পণ্যের চালান বন্ধ করল কাতার। এর ফলে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য রুট আরও সংকটে পড়তে যাচ্ছে।
অন্যান্য কোম্পানির মতো, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম এলএনজি রপ্তানিকারক কোম্পানি 'কাতারএনার্জি' লোহিত সাগরে অন্তত চারটি এলএনজি ট্যাঙ্কার আটকে রেখেছে। ওই কোম্পানির এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, তবে ওই কোম্পানির উৎপাদন অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে, গাড়ি প্রস্তুতকারক কোম্পানি সুজুকির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, অস্থিরতার কারণে সরবরাহ প্রক্রিয়ায় কিছুটা বিঘ্ন হয়েছে। লোহিত সাগরের আক্রমণের ফলে জাপানের তৈরি ইঞ্জিন আসতে দেরি হওয়ায় আগামী জানুয়ারি ১৫-২১ পর্যন্ত হাঙ্গেরির এজটারগম প্ল্যান্টে উৎপাদন বন্ধ থাকবে।
গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলার প্রতিবাদে হুতিরা লোহিত সাগরে পণ্যবাহী জাহাজে একের পর এক হামলার জবাবে ইয়েমেনে পাল্টা হামলা শুরু করে পশ্চিমারা। এর ফলে বিশ্ব বাণিজ্য যেমন শঙ্কার মুখে পড়েছে তেমনি মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
হুতিরা কয়েক বছর ধরে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত রয়েছে। কিন্তু ইসরায়েলের ওপর চাপ সৃষ্টি করার উপায় হিসাবে পাশের সমুদ্রের দিকেও নজর দিয়েছে হুথি বাহিনী।
রবিবার হুতিদের উৎক্ষেপণ করা একটি ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করেছে মার্কিন নৌবাহিনী। ইয়েমেনের হুতি নিয়ন্ত্রিত এলাকা থেকে উৎক্ষেপণ করা ক্ষেপণাস্ত্রটি দক্ষিণ লোহিত সাগরে থাকা আমেরিকার একটি যুদ্ধবিমান গুলি চালিয়ে ভূপাতিত করেছে।
সাম্প্রতিক মাসগুলোয় লোহিত সাগরে বিভিন্ন জাহাজকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়ে আসছে হুতিরা। ফিলিস্তিনিদের সমর্থন দিয়ে এই স্থান থেকে হুথিরা হামলা চালিয়ে আসছে। মিডএয়ার ইন্টারসেপশন হলো লোহিত সাগরের সর্বশেষ ঘটনা।
সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ (সাবেক টুইটার) পোস্ট করা এক বিবৃতিতে ইউএস সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম) জানিয়েছে, সর্বশেষ এই ঘটনায় কোনো আহত বা ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। ইয়েমেনের বন্দর শহর হোদেইদাহের কাছে ক্ষেপণাস্ত্রটিকে ভূপাতিত করা হয়।
এর আগে রোববার হুথিরা অভিযোগ করে, মার্কিন বিমানগুলোকে ইয়েমেনের আকাশসীমা এবং উপকূলীয় অঞ্চলের কাছাকাছি উড়তে দেখা গেছে। বিমানগুলোকে ‘শত্রু’ হিসেবে উল্লেখ করে হুতি মুখপাত্র মোহাম্মদ আবদুল সালাম বলেছেন, বিমানের এ ধরনের কার্যকলাপগুলো জাতীয় সার্বভৌমত্বের স্পষ্ট লঙ্ঘন।
সূত্র: ব্লুমবার্গ, দোহা নিউজ, রয়টার্স, আরটি ইন্টারন্যাশনাল, আল জাজিরা, মেহের নিউজ, দ্য ইকোনোমিক টাইমস, টিআরটি ওয়ার্ল্ড, মিডল ইস্ট আই, ডেইলি সাবাহ।