গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধাপরাধ স্বীকার করল যুক্তরাষ্ট্র

নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক জার্নাল আন্তর্জাতিক জার্নাল
প্রকাশিত: ০৩ জুন ২০২৫, ১১:৪০ AM

গত ৬০০ দিনের অধিক সময় ধরে ফিলিস্তিনের অধিকৃত গাজায় ধ্বংস ও হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার ইসরায়েল। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ম্যাথু মিলার বলেছেন, ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েল যুদ্ধাপরাধ করেছে—এ নিয়ে তার মনে কোনো সন্দেহ নেই।

স্থানীয় সময় সোমবার (২ জুন) স্কাই নিউজের এক পডকাস্ট সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের সাবেক এই মুখপাত্র। ‘ট্রাম্প ১০০’ শীর্ষক পডকাস্ট সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়।

২০২৩ সাল থেকে বাইডেনের মেয়াদ শেষ হওয়া পর্যন্ত মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র হিসেবে মিলার দায়িত্ব পালন করেন। নিয়মিত ব্রিফিংয়ে তার কাজ ছিল ইউক্রেন থেকে শুরু করে গাজাসহ বিভিন্ন বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির সিদ্ধান্ত ব্যাখ্যা করা ও প্রশাসনের অবস্থান তুলে ধরা।

সাক্ষাৎকারে গাজায় গণহত্যার অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে মিলার বলেন, আমি মনে করি না এটা গণহত্যা। কিন্তু ইসরায়েল যুদ্ধাপরাধ করেছে—এ বিষয়ে আমার কোনো সন্দেহ নেই।

সরকারে থাকাকালে কেন এ কথা বলেননি—এমন প্রশ্নের জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের সাবেক এই মুখপাত্র বলেন, দেখুন যখন আপনি মঞ্চে (সরকারি মুখপাত্র হিসেবে) থাকেন, তখন আপনি ব্যক্তিগত মতামত প্রকাশ করেন না। আপনি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সিদ্ধান্ত তুলে ধরেন। সে সময় যুক্তরাষ্ট্র সরকার এই সিদ্ধান্তে আসেনি যে তারা (ইসরায়েল) যুদ্ধাপরাধ করেছে। এখনও সে সিদ্ধান্তে আসেনি।

নিজের বক্তব্য ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মিলার বলেন, যুদ্ধাপরাধ নিয়ে দুটি দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। একটি হলো যদি কোনো রাষ্ট্র ইচ্ছাকৃতভাবে যুদ্ধাপরাধের নীতি অনুসরণ করে; কিংবা এমনভাবে বেপরোয়া আচরণ করে, যা যুদ্ধাপরাধকে সহায়তা ও প্ররোচনা দেয়। তখন প্রশ্ন ওঠে, রাষ্ট্র নিজেই কি যুদ্ধাপরাধ করছে?

সাবেক বাইডেন প্রশাসনের জ্যেষ্ঠ এই কর্মকর্তা বলেন, তিনি মনে করেন, কিছু নির্দিষ্ট ঘটনায় যুদ্ধাপরাধ হয়েছে। ইসরায়েলি সেনা ও ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর সদস্যরা এই যুদ্ধাপরাধ করেছেন।

গাজানীতি নিয়ে বাইডেন প্রশাসনের অবস্থান সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে মিলার বলেন, যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল সম্পর্ক নিয়ে প্রশাসনের ভেতরে ‘ছোট-বড়’ মতবিরোধ ছিল। নীতি কীভাবে পরিচালনা করা হবে, তা নিয়ে শুরু থেকেই মতবিরোধ ছিল। কিছু ছিল বড় ধরনের মতবিরোধ, কিছু ছোট।

তৎকালীন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন গাজা ও ইউক্রেননীতির বিষয়ে বাইডেনের ওপর বিরক্ত ছিলেন—এমন গুজব নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মিলার সেই টানাপোড়েনেরও ইঙ্গিত দেন।