লোহিত সাগরে মার্কিন হামলায় ১০ হুথি যোদ্ধা নিহত
গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি বর্বর হামলার পর থেকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা। এরই অনংশ হিসেবে তারা লোহিত সাগরে আগত ইসরায়েলগামী ও ইসরায়েলি মালিকানাধীন সব ধরনের জাহাজে হামলার হুমকি দেয়। এমনকি কয়েকটি জাহাজ আটকও করে তারা।
এদিকে লোহিত সাগরে জাহাজ চলাচল নিরাপদ রাখতে যৌথ স্কোয়াড গঠন করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এবার যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ইয়েমেনের সশস্ত্র হুথি গোষ্ঠীর ১০ যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। লোহিত সাগরে একটি পণ্যবাহী জাহাজের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টাকালে হুথিদের নৌকা লক্ষ্য করে মার্কিন সেনারা হামলা চালালে প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে।
যুক্তরাষ্ট্রের ওই হামলায় হুথি গোষ্ঠীর তিনটি নৌকাও ডুবে গেছে।
আজ সোমবার (১ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। এছাড়াও টাইমস অব ইসরায়েল, জর্ডান টাইমস, এবিসি নিউজের প্রতিবেদনেও অনুরূপ তথ্য জানানো হয়েছে।
ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা বলেছে, লোহিত সাগরে মার্কিন বাহিনী তাদের তিনটি নৌযানে হামলার পর তারা কমপক্ষে ১০ জন যোদ্ধাকে হারিয়েছে। রোববার এক বিবৃতিতে হুথি গোষ্ঠী বলেছে, হামলার শিকার তাদের নৌকাগুলো ‘নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা এবং সামুদ্রিক নৌচলাচল রক্ষা করার’ লক্ষ্যে কাজ করছিল।
এছাড়াও তারা বলেছে, লোহিত সাগরের মধ্য দিয়ে ইসরায়েলি বা অন্য জাহাজগুলোর দখলকৃত ফিলিস্তিনের বন্দরগুলোতে যাওয়া ঠেকাতে নৌকাগুলো তাদের মানবিক ও নৈতিক দায়িত্ব পালন করছে...।
এদিকে মার্কিন সামরিক বাহিনী রোববার বলেছে, তারা হুথি বিদ্রোহীদের হুমকি মোকাবিলায় টহল অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে এবং লোহিত সাগরে কন্টেইনারবাহী জাহাজে হামলার চেষ্টাকালে আক্রমণ চালিয়ে (হুথিদের) তিনটি নৌকা ডুবিয়ে দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, রোববার চারটি ছোট নৌকা ইয়েমেনের হুথি নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল থেকে এসে মারেস্কের একটি বিশাল জাহাজের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করে। নৌকাগুলো জাহাজের কাছাকাছি চলে আসলে সাহায্য চান জাহাজের নাবিক। তখন মার্কিন নৌবাহিনীর হেলিকপ্টার সেখানে উপস্থিত হয়।
একপর্যায়ে ওই হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালিয়ে তিনটি নৌকা ডুবিয়ে দেওয়া হয়। ওই সময় নৌকার ক্রুরাও নিহত হন। অপর একটি নৌকা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
মূলত ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলিদের বর্বর হামলার প্রতিবাদে লোহিত সাগরে গত নভেম্বর থেকে জাহাজ লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে হুথিরা। সেসময় থেকে ইসরায়েলের মালিকানাধীন ও ইসরায়েলগামী জাহাজে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ব্যবহার করে একাধিকবার হামলা চালিয়েছে তারা।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর থেকেই গাজায় ব্যাপক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভূখণ্ডটিতে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা প্রায় ২২ হাজারে পৌঁছেছে। নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
ইসরায়েলের এই হামলা থেকে বাদ যাচ্ছে না গাজার কোনও অবকাঠামো। তারা মসজিদ, গির্জা, স্কুল, হাসপাতাল, শরণার্থী শিবিরসহ বেসামরিক মানুষের বাড়ি-ঘর সব জায়গায় হামলা চালিয়ে আসছে।
এরই জবাবে গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে লোহিত সাগরের গুরুত্বপূর্ণ শিপিং রুটে ইয়েমেনের ইরান-সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীরা ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে আসছে।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে এই হামলা আরও তীব্র হয়েছে এবং এর মধ্যেই রোববার এই ঘটনা ঘটল।