গাজায় মাহথির মুহাম্মদ প্রতিষ্ঠিত চিকিৎসাকেন্দ্র ধ্বংস করে দিল ইসরায়েল
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। টানা প্রায় দেড় মাস ধরে চালানো এ হামলায় এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন সাড়ে ১১ হাজার ফিলিস্তিনি। ইসরাইলি এ হামলা থেকে বাদ যাচ্ছে না গাজার স্কুল, মসজিদ, শরণার্থী শিবির, এমনকি হাসপাতালের মতো স্থাপনাও।
আজ শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) গাজার আল শিফা হাসপাতালে অভিযান অব্যাহত রেখেছে দখলদার বাহিনী। সেখানে হামাসের ঘাঁটি আছে এই দাবি করে অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ)। দখলদার ইসরায়েলি সেনাদের হানায় গাজার প্রায় সবকটি হাসপাতাল বন্ধ হয়ে গেছে।
অব্যাহত এ হামলার মধ্যে গাজায় ধ্বংস হয়ে গেছে মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদের ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠিত একটি চিকিৎসাকেন্দ্রও। মাহাথির মোহাম্মদ নিজেই এ তথ্য জানিয়েছেন।
মালয়েশিয়ার সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী এক টুইটবার্তায় বলেন, গাজায় তার ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠিত একটি চিকিৎসা কেন্দ্র ইসরাইলি বোমা হামলায় ধ্বংস হয়ে গেছে। ১৯৮৩ সাল থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত এবং ২০১৮ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত মালয়েশিয়ার নেতৃত্ব দিয়েছেন মাহাথির।
শুক্রবার তিনি বলেন, দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে অবস্থিত ডা. সিতি হাসমাহ অ্যান্ড এনায়া ফিজিওথেরাপি সেন্টারটি ধ্বংস হয়ে গেছে তা জানতে পেরে তিনি ‘বিচলিত’ হয়ে পড়েছিলেন।
মালয়েশিয়ার সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার পেরদানা গ্লোবাল পিস ফাউন্ডেশন গাজায় এ হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠা করতে সহায়তা করেছিল। দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে ২০১৯ সালে ওই চিকিৎসাকেন্দ্রটি চালু করা হয়।
তিনি বলেন, দক্ষিণের অবকাঠামোগুলোকে ইসরাইল লক্ষ্যবস্তু করবে না বলে আগে ঘোষণা দেওয়া হলেও তা কেবল কথার কথা প্রমাণিত হয়েছে। হামলাগুলো এখন ফিলিস্তিনি বেসামরিক ও যোদ্ধা নন এমন মানুষকে গণহত্যার অভিযানে পরিণত হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, এটি সামরিক বাহিনীর মধ্যে যুদ্ধ নয়, বরং গাজাকে ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠীর কাছ থেকে মুক্ত করার জন্য ইসরাইলি সেনাবাহিনী সেখানে গণহত্যা চালাচ্ছে। হাসপাতাল ও বাসস্থানে বোমা হামলার পর ফিজিওথেরাপি কেন্দ্রেও এই ধরনের হামলা এটাই প্রমাণ করেছে যে, ইসরাইল ইচ্ছাকৃতভাবে এসব স্থানকে লক্ষ্যবস্তু করছে।
প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর থেকেই গাজায় বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইলি বাহিনী। এছাড়া ইসরাইলের এ বিমান হামলা থেকে বাদ যাচ্ছে না গাজার কোনও অবকাঠামো। তারা মসজিদ, গির্জা, স্কুল, হাসপাতাল ও বেসামরিক মানুষের বাড়ি-ঘর সব জায়গায় হামলা চালিয়ে আসছে।
ফিলিস্তিনি সরকারের মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরাইলি বর্বর হামলায় নিহতের সংখ্যা ইতোমধ্যেই সাড়ে ১১ হাজারে পৌঁছেছে। নিহত এসব ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ৭ হাজার ৮০০ জনের বেশি নারী ও শিশু।
এছাড়া ইসরাইলি হামলায় আহত হয়েছেন আরও ২৯ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি।