জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে গাজায় মানবিক যুদ্ধবিরতি বিল পাস, ইসরায়েলের প্রত্যাখ্যান
মানবিক দিক বিবেচনায় ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় সাময়িক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে পাস হয়েছে। প্রস্তাবের পক্ষে নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্যের মধ্যে ১২ সদস্য ভোট দিয়েছে। পরিষদের স্থায়ী পাঁচ সদস্যের কেউই ভেটো শক্তি প্রয়োগ করেনি। সেই সঙ্গে কোনো সদস্য দেশ বিপক্ষে ভোট না দিলেও যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও রাশিয়া ভোটদানে বিরত ছিল।
স্থানীয় সময় বুধবার (১৫ নভেম্বর) গাজায় মানবিক দিক বিবেচনায় সাময়িক যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করে মাল্টা।
ইসরায়েলি বাহিনী ও সশস্ত্র হামাসের যুদ্ধের প্রায় দেড় মাসের মাথায় এই প্রস্তাব পাস হয়। তবে এর বিরোধিতা করেছে ইসরায়েল। খবর আলজাজিরা।
উত্থাপিত প্রস্তাবে, বেশ কয়েক দিনের জন্য গাজা উপত্যকায় সংঘাত বন্ধ ও করিডর খোলার আহ্বান জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও তাদের সহযোগীদের পূর্ণাঙ্গ, নিরাপদ ও বাধাবিহীন চলাচলের নিশ্চয়তা দিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া গাজায় হামাসের হাতে জিম্মি সব ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিককে মুক্তি দেয়ার দাবি জানানো হয়।
এর আগেও গাজা যুদ্ধের ইস্যুতে চারবার বৈঠকে বসেছে নিরাপত্তা পরিষদ। তবে এতদিন ইসরায়েলের ঘনিষ্ট মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের বাধায় কোনো প্রস্তাব পাস হয়নি।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এর জাতিসংঘের পরিচালক নিরাপত্তা পরিষদের ভোটকে স্বাগত জানিয়েছেন।
এদিকে জাতিসংঘে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত রিয়াদ মনসুর বলেছেন যে, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের একটি মানবিক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব অনুমোদন হলেও ইসরায়েলের "নির্বিচার হামলা"র নিন্দা করা হয়নি, যেখানে প্রায় ৫,০০০ শিশু সহ ১১,০০০ এরও বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে তারা।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে অতর্কিত হামলা চালিয়ে কমপক্ষে এক হাজার ২০০ ইসরায়েলি নাগরিক হত্যার পাশাপাশি দুই শতাধিক মানুষকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায় হামাস যোদ্ধারা। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে হামাসকে নির্মূলের নামে গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। এক মাসের বেশি সময় ধরে চলা বর্বরোচিত এই হামলায় ১১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে সাড়ে সাত হাজারের বেশি নারী ও শিশু।
অবরুদ্ধ গাজায় হাজার হাজার মানুষ হত্যার প্রতিবাদ এবং অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবিতে বিশ্বজুড়ে প্রতিদিন লাখ লাখ মানুষ বিক্ষোভ-সমাবেশ করলেও তা আমলে নিচ্ছে ইসরায়েল ও তার পশ্চিমা মিত্ররা। এদিকে ইসরায়েলি সেনারা গাজার হাসপাতাল লক্ষ্য করে হামলা শুরু করেছে।এসব হাসপাতালে হতাহতের চিকিৎসার পাশাপাশি ঘরছাড়া লাখো ফিলিস্তিনি নাগরিক আশ্রয় নিয়েছেন। হাসপাতালে হামলার পর হামাস যোদ্ধাদের কোন আলামত পায়নি ইসরায়েলি বাহিনী।