গাজার আল-শিফা হাসপাতালের পরিচালক

‘আমাদের সহায়তায় কেউ এগিয়ে আসেনি, কেউ না’

নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১ নভেম্বর ২০২৩, ০৫:৫৯ PM

গাজা উপত্যকার আল–শিফা হাসপাতালের আশপাশে শনিবারও হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। এ কারণে সেখানে ভর্তি ১৫ হাজার ফিলস্তিনির জীবন শঙ্কায়। হাসপাতালের পরিচালক বলছেন, ‘মৃত্যু মাত্র কয়েক মুহুর্ত সামনে। আমরা মরছি, আর বিশ্ববাসী তা তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে।’

মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই বলছে, শনিবারও ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান ও ট্যাংক থেকে আল–শিফা হাসপাতালে হামলা করা হয়। হামলা এখনো চলছে। হাসপাতালের আঙিনা ও কয়েকটি স্থাপনায় সরাসরি হামলা করা হয়েছে।

ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল–কুদরা জানান, আল–শিফা হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ও পেডিআট্রিক বিভাগের কার্যক্রম বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

হাসপাতালের পরিচালক সালিমা বলেন, ‘আমাদের এখানে বিদ্যুৎ, ইন্টারনেট, পানি ও ওষুধ কিছু নেই। বিশ্ব থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন আমরা। কয়েক মিনিটের মধ্যে আমাদের মৃত্যু অনিবার্য। আমরা আটকে আছি। পুরো বিশ্বকে সহায়তার জন্য বলেছি। তবে কেউ এগিয়ে আসেনি, কেউ না।’ 

‘আমাদের এখানে মানুষ মরতে শুরু করেছে। প্রতি মিনিটে মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। ইনকিউবেটরে থাকা এক শিশুও মারা গেছে। আরও ৩৯ শিশুর ভাগ্যেও তাই ঘটবে বলে মনে হচ্ছে।’–এভাবেই বলেন আল–শিফা হাসপাতালের পরিচালক সালিমা।

ভেন্টিলেশনের অভাবে এরই মধ্যে একজনের মৃত্যুর তথ্য জানা গেছে। হাসপাতালের পরিচালক বলছেন, ‘মৃত্যু মাত্র কয়েক মুহুর্ত সামনে। আমরা মরছি, আর বিশ্ববাসী তা তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে।’

হাসপাতালের বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে মিডল ইস্ট আই বলছে, ইসরায়েলি বাহিনীর স্নাইপার ও ড্রোন হাসপাতালের মানুষদের দিকে তাক করা আছে। সবাই নড়াচড়া করতেও ভয় পাচ্ছেন।

২৬ বছর বয়সী এক নারী হাসপাতাল থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করেন। তাঁর ওপর হামলা চালায় ইসরায়েল।
  
গত ৭ অক্টোবর গাজার স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের আক্রমণে ইসরায়েলের ১ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি নিহত হয়। এ ছাড়া হামাস জিম্মি করেছে অন্তত ২৪০ জন। এ হামলার পরপরই গাজায় পাল্টা হামলা চালায় ইসরায়েল। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত ১১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। নিহতদের বেশির ভাগই শিশু। এখন পর্যন্ত প্রায় ৫ হাজার শিশু নিহত হয়েছে ইসরায়েলি হামলায়। এছাড়া ৩ হাজারের মতো নারী নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও প্রায় ২৭ হাজার মানুষ। ঘরছাড়া হয়েছে প্রায় ১৫ লাখ ফিলিস্তিনি।