আ.লীগ ও শেখ হাসিনাকে পুনর্বহাল প্রশ্নে নির্বাচন চাইল ভারত

নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক জার্নাল আন্তর্জাতিক জার্নাল
প্রকাশিত: ০৬ অক্টোবর ২০২৫, ০১:৫৯ PM

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত পলাতক বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থান এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ওপর এর প্রভাব ব্যাখ্যা করেছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি। 

আজ সোমবার (৬ অক্টোবর) নয়াদিল্লিতে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সাংবাদিকদের সংগঠন ডিক্যাবের সঙ্গে এক আলোচনা সভায় এ বিষয়ে একাধিক প্রশ্ন করা হয় তাকে। সভায় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়ালও উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো প্রসঙ্গে করা এক প্রশ্নে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বলেন, এটি একটি ‘বিচারিক আইনি প্রক্রিয়া’ এবং এর জন্য দুই সরকারের মধ্যে ‘সম্পর্ক এবং পরামর্শ’ প্রয়োজন।

তিনি বলেন, আমরা এই বিষয়গুলো পরীক্ষা করছি। আমরা এই বিষয়গুলোতে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের সাথে একসঙ্গে কাজ করার জন্য উন্মুখ। এই মুহূর্তে আরও কিছু বলা গঠনমূলক হবে না।

এরপর ভারত বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনাকে পুনর্বহাল করার চেষ্টা করছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে বিক্রম মিশ্রি বলেন, আমরা কেবল বাংলাদেশে দ্রুত নির্বাচনের পক্ষে, যাতে বাংলাদেশের জনগণ তাদের নির্বাচিত সরকারের কাছে নিজেদের ম্যান্ডেট প্রকাশের সুযোগ পায়। আমরা বাংলাদেশের নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে আলোচনা ও কাজ করতে প্রস্তুত। আমার মনে হয় না এ বিষয়ে আর কিছু বলার আছে। 

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন হবে, এমন আশা প্রকাশ করে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বলেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ইতোমধ্যেই ঘোষণা করেছে যে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ভারত যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন দেখতে চায়। সেই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যে সরকারই গঠিত হোক না কেন, আমরা তাকেই সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।

সম্পর্ক ঠিক রাখতে উভয় পক্ষেরই প্রতিহিংসামূলক বক্তব্য এড়িয়ে চলা উচিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে তার সম্পর্ককে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়। এখনও দুই দেশের মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা অব্যাহত রয়েছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিই প্রথম বিশ্বনেতা, যিনি তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।

এ সময় ভিসা বিধিনিষেধ সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে বিক্রম মিশ্রি বলেন, যদিও ভিসা কার্যক্রম এখন সীমিত, তবুও ঢাকা বিশ্বব্যাপী ভারতীয় ভিসার সবচেয়ে বড় উৎস। ভারত সবসময় দুই দেশের জনসাধারণের মধ্যে শক্তিশালী সম্পর্ককে মূল্য দেয়।

এরপর আঞ্চলিক নিরাপত্তা প্রসঙ্গে আরেক প্রশ্নে তিনি বলেন, নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে বাংলাদেশসহ অন্যান্য প্রতিবেশীদের সঙ্গে আঞ্চলিক সহযোগিতাকে অগ্রাধিকার দেয় ভারত। আমরা দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি ও স্থিতিশীলতার উপর অত্যন্ত গুরুত্ব দিই। এই অঞ্চলে চরমপন্থার উত্থান রোধ করতে চাই আমরা। 

গঙ্গা পানিবণ্টন চুক্তি এবং তিস্তা নদী প্রকল্প সম্পর্কে করা এক প্রশ্নের জবাবে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বলেন, পারস্পরিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে বিষয়গুলো সমাধানের জন্য ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে যৌথ প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।