গাজার পথে শহিদুলদের জাহাজের ওপর দিয়ে উড়ল ‘ইসরাইলি সামরিক বিমান’

নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক জার্নাল আন্তর্জাতিক জার্নাল
প্রকাশিত: ০৬ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:৫১ AM

বাংলাদেশের বিশিষ্ট আলোকচিত্রী শহিদুল আলমসহ সাংবাদিক, চিকিৎসক ও মানবাধিকারকর্মীদের বহনকারী জাহাজটির ওপর দিয়ে আজ একটি সামরিক বিমান উড়ে গেছে। জাহাজে থাকা উইলিয়াম আলেকজান্ডার ধারণা করছেন, এটি ইসরায়েলি সামরিক বিমান ছিল।

রোববার (৫ অক্টোবর) বিকেলে ভূমধ্যসাগরে গাজার উদ্দেশে অগ্রসরমান ‘কনশানস’ নামের জাহাজ থেকে করা ফেসবুক লাইভে ওই বিমানটিকে উড়ে যেতে দেখা যায়।

শহিদুল আলমের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে করা ওই ফেসবুক লাইভে অধিকারকর্মী উইলিয়াম আলেকজান্ডারকে কথা বলতে দেখা যায়। তাকে বলতে শোনা যায়, ‘আমাদের চারপাশে কয়েকবার ঘোরার পর একটি বড় সামরিক বিমান এইমাত্র সরাসরি আমাদের মাথার ওপর দিয়ে উড়ে গেল। নিঃসন্দেহে এটা অপ্রয়োজনীয়। তারা আমাদের ওপর একটি চক্কর দিয়েই সম্ভবত সব তথ্য সংগ্রহ করতে পারত। এরপর তারা থাউজেন্ড ম্যাডলিন ফ্লিটের দিকে চলে গেছে। সম্ভবত আরও কিছু তথ্য নেওয়ার জন্য এ কাজ করেছে তারা। এটি ইসরাইলের বিমান, সে বিষয়ে আমরা শতভাগ নিশ্চিত নই। তবে আমাদের মাথার ওপর দিয়ে আর কে এভাবে সামরিক বিমান ওড়াতে পারে, তা আমার জানা নেই। আমার ধারণা, তারা আমাদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু তাদের এসব কাজ উত্তেজনা তৈরির চেষ্টামাত্র।’

‘কনশানস্’ জাহাজ থেকে করা এক ফেসবুক লাইভে বক্তব্য দেন অধিকারকর্মী উইলিয়াম আলেকজান্ডার (বাঁয়ে)। ভিডিওতে দেখা যায়, জাহাজটির ওপর দিয়ে একটি বিমান উড়ে যাচ্ছে। —ভিডিওচিত্র: শহিদুল আলমের ফেসবুক
বিমানটি উড়ে যাওয়ার সময় লাইভ ভিডিওতে কনশানসের আরেক যাত্রী সতর্কবার্তা দেন, ‘সতর্ক থাকুন। খুব ধীরে ধীরে এগোবেন। স্বাভাবিক থাকুন। তাদেরকে আমাদের সঙ্গে খেলতে দেবেন না।’

পরে উইলিয়াম জাহাজের ভেতরের ওষুধ ও মেডিকেল সরঞ্জাম দেখিয়ে বলেন, ‘আমার পেছনে প্রচুর ওষুধ ও স্বাস্থ্যসেবা সরঞ্জাম রয়েছে। এগুলো আমরা কনশানস জাহাজে করে গাজায় নিয়ে যাচ্ছি।’

জাহাজের ক্যাপ্টেন ম্যাডেলেইন হাবিব বলেন, ‘আমি সত্যিই আশা করছি, এবার আমরা গাজায় পৌঁছাব। সত্যিকারে একটি শান্তিপ্রক্রিয়ার আশা করছি এবং আমাদের আটকানো হবে না। আমরা ফিলিস্তিনিদের জন্য একটি স্থায়ী করিডর চাই, যাতে তারা সমুদ্রসীমায় প্রবেশ করতে পারে। আমরা শুধু ত্রাণ নিয়ে আসার জন্য মানবিক করিডরের কথা বলছি না। বলছি এমন একটি করিডরের কথা, যাতে ফিলিস্তিনিরা সমুদ্রে বাণিজ্য করতে পারে, যা তাদের মৌলিক অধিকার।’

ভিডিওতে ওই জাহাজে থাকা মার্কিন প্রামাণ্যচিত্র নির্মাতা টম হায়েস বলেন, ‘একজন আমেরিকান হিসেবে আমাদের এখন কী করা উচিত? আমার এখন কী করা উচিত? সব আমেরিকানের কী করা উচিত? বৈশ্বিক সম্প্রদায়ের কী করা উচিত? আমাদের অবশ্যই প্রতিটি ফোরামে, সম্ভাব্য প্রতিটি উপায়ে নিরলসভাবে কাজ করতে হবে, যাতে ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতা ও নিজেদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের পথ সুগম হয়।’

কনশানস জাহাজটি আন্তর্জাতিক উদ্যোগ ‘ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (এফএফসি)’ ও ‘থাউজেন্ড ম্যাডলিনস টু গাজা (টিএমটিজি)’ নৌবহরের অংশ, যা গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতে এবং ইসরাইলের অবরোধ ভাঙতে চেষ্টা করছে।