রাশিয়া-ইউক্রেনের সর্বোচ্চ সংখ্যক বন্দি মুক্তি

প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে চলমান যুদ্ধে এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ সংখ্যক যুদ্ধবন্দি বিনিময় করেছে রাশিয়া ও ইউক্রেন। উভয় দেশই ৭৮০ জন করে বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে, যাদের মধ্যে সামরিক ও বেসামরিক উভয় শ্রেণির মানুষ রয়েছেন—এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম রয়টার্স।
শনিবার (২৪ মে) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে রয়টার্স জানায়, শুক্রবার মুক্তি পাওয়া এই বন্দিদের মধ্যে ৩৯০ জন ইউক্রেনের এবং বাকি ৩৯০ জন রাশিয়ার। দু’দেশই সমানসংখ্যক—২৭০ জন সামরিক এবং ১২০ জন বেসামরিক বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্প্রতি তুরস্কে দুই দেশের সরকারি প্রতিনিধিদের মধ্যে হওয়া সংলাপে মস্কো ও কিয়েভের মধ্যে যেসব সমঝোতা হয়েছে, সেসবের আওতায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে এই যুদ্ধবন্দিদের। তুরস্কের বৈঠকে উভয় দেশের ৫০০ জন করে মোট ১ হাজার যুদ্ধবন্দির মুক্তির ব্যাপারে সম্মত হয়েছিল রাশিয়া ও ইউক্রেন। তাদের মধ্যে শুক্রবার মুক্তি পেলেন ৭৮০ জন। আজ শনিবার ও আগামীকাল রোববার বাকি ২২০ জনকে ছেড়ে ও দেওয়া হবে।
রয়টার্স জানায়, গতকাল যে ৩৯০ জন ইউক্রেনীয় যুদ্ধবন্দিকে মুক্তি দিয়েছে মস্কো, তাদের একজন ওলেক্সান্দার নেহির ইউক্রেনীয় বাহিনীর একজন সেনা সদস্য। তার স্ত্রী এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
মুক্তির পর ইউক্রেনের সুমি শহরের বাসিন্দা নেহির বলেন, আমাকে যে আজ মুক্তি দেওয়া হচ্ছে- আমার স্ত্রীকে জানানো হয়নি। এমনিতে কারা কর্তৃপক্ষ প্রতি শুক্রবার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আমাদের সাক্ষাৎ করতে দেয়। সে আমার সঙ্গে আজ ওই সাপ্তাহিক সাক্ষাৎ করতেই এসেছিল। এসে যখন দেখল যে আমি মুক্তি পেয়েছি, সে খুশিতে প্রায় বাকরুদ্ধ হয়ে গেছে। বিষয়টি ঠিক কেমন- আপনি যদি কখনও এ ধরনের পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে না যান, তাহলে আপনাকে তা বলে বোঝানো কঠিন। আমি শুধু এটুকু বলতে পারি, কখনও বিশ্বাস হারানো চলবে না, নিরাশ বা হতাশ হওয়া চলবে না।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ৯ মাস আগে ইউক্রেনের খেরসন প্রদেশে দেশটির সেনাবাহিনীর হাতে বন্দি হয়েছিলেন রুশ বাহিনীর সেনাসদস্য ওলেকসান্দার তারাসোভ। শুক্রবার যে ৩৯০ জন রুশ যুদ্ধবন্দিকে মুক্তি দিয়েছে তাদের মধ্যে তারাসোভও একজন।
তারাসোভ রয়টার্সকে বলেন, আমার এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না যে আমি মুক্তি পেয়েছি।
এদিকে, যুদ্ধবন্দিদের মুক্তিদানের ব্যাপারটিকে স্বাগত জানিয়েছেন এ যুদ্ধের প্রধান মধ্যস্থতাকারী যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও। শুক্রবার নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট করা এক বার্তায় ট্রাম্প বলেন, মস্কো-কিয়েভ উভয়পক্ষের সমঝোতাকে স্বাগত। এই সমঝোতা কি অদূর ভবিষ্যতে আমাদেরকে বড় কোনো সুসংবাদের দিকে নিয়ে যাবে?