ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ হারালেন আরও ৩৫ ফিলিস্তিনি

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হত্যাযজ্ঞ অব্যাহত রয়েছে। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলের হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন আরও অন্তত ৩৫ ফিলিস্তিনি।
এতে গত ১৮ মার্চ থেকে নতুন করে শুরু হওয়া হামলায় নিহতের সংখ্যা ২ হাজার ৩০০ ছাড়িয়েছে। আর ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া গণহত্যামূলক আগ্রাসনে গাজায় মোট মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৫২ হাজার ৪০০ জনে।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) তুর্কি বার্তাসংস্থা আনাদোলুর এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টার হামলায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১০৯ জন। ফলে চলমান এই সংঘাতে মোট আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৮ হাজার ১৪ জনে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, বহু মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে কিংবা রাস্তায় পড়ে রয়েছেন। উদ্ধারকারীরা সেখানে পৌঁছাতে পারছেন না। প্রতিদিনই বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা।
২০২৫ সালের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক মহলের চাপে গাজায় সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছিল ইসরায়েল। তবে হামাসের সঙ্গে মতপার্থক্যের জেরে গত ১৮ মার্চ থেকে ফের ব্যাপক আকারে বিমান হামলা শুরু করে তারা। এর ফলে যুদ্ধবিরতির স্বল্প সময়ের শান্তিও শেষ হয়ে যায়।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, মার্চের মাঝামাঝি শুরু হওয়া নতুন দফার আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ২ হাজার ৩০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি। আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৬ হাজার মানুষ। এসব হামলায় ধ্বংস হয়ে গেছে অসংখ্য ঘরবাড়ি, হাসপাতাল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
জাতিসংঘ বলছে, চলমান আগ্রাসনে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছেন। অঞ্চলটির অধিকাংশ অবকাঠামো আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে।
এর আগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
এ ছাড়া অবরুদ্ধ গাজায় গণহত্যার অভিযোগে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) মামলা চলমান রয়েছে। তীব্র সমালোচনা সত্ত্বেও ইসরায়েলের এই আগ্রাসন বন্ধ হওয়ার কোনো ইঙ্গিত এখনও মেলেনি।
গাজার আকাশজুড়ে এখনও ঘুরে বেড়াচ্ছে যুদ্ধবিমান, ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে বহু জীবন। বিশ্ববাসীর নীরবতায় রক্তাক্ত গাজার আর্তনাদ যেন আর কেউ শুনতে পায় না।