এশিয়ান কাপ: সিরিয়াকে টাইব্রেকারে হারালো ইরান
এশিয়া কাপ ফুটবলের খেলা চলছে। কাতারে অনুষ্ঠানরত এশিয়া কাপ ফুটবলের দ্বিতীয় রাউন্ডের শেষ খেলায় ইরান সিরিয়াকে পরাজিত করে কোয়ার্টার ফাইনালে উন্নীত হয়েছে।
গতকাল বুধবার (৩১ জানুয়ারি) রাতে কাতারের আব্দুল্লাহ বিন খলিফা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত খেলা নির্ধারিত সময় ১-১ গোলে ড্র হওয়ার পর টাইব্রেকারে ইরান ৫-৩ গোলে সিরিয়াকে পরাজিত করে।
নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলা অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে গড়ালে সেখানে কোনো গোল করতে ব্যর্থ হয় দুই দল। শেষ পর্যন্ত পেনাল্টি শুট-আউটে খেলার ভাগ্য নির্ধারিত হয়।
বুধবার কাতারের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় শুরু হওয়া খেলায় ইরানের জাতীয় জার্সিধারীরা আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে খেলা শুরু করেন। তাদের মুহুর্মুহু আক্রমণে সিরিয়ার রক্ষণভাগ বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা পেতে ইরানকে খেলার ৩৪ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। ইরানি স্ট্রাইকার আলীরেজা জাহানবাখশ চমৎকার একটি পাসের মাধ্যেম সিরিয়ার ডি-বক্সের মধ্যে থাকা খেলোয়াড় মেহদি তারেমির কাছে বল পৌঁছৈ দেন।
তারেমি গোল করতে উদ্যত হলে সিরিয়ার রক্ষণভাগে খেলোয়াড় আইহাম উসু তারেমিকে অন্যায়ভাবে বাধা দেন। এ সময় রেফারি ফাউল ঘোষণা করে পেনাল্টির নির্দেশ জারি করেন। খোদ মেহদি তারেমি পেনাল্টি শুটটি করেন এবং চমৎকার নৈপূণ্য প্রদর্শন করে সিরিয়ার গোলরক্ষক যেদিকে ঝাঁপ দেন তার উল্টো দিক দিয়ে প্রতিপক্ষের জালে বল জড়িয়ে দেন।
এরপর প্রথমার্ধের খেলার বাকি ১০ মিনিটে ইরান কয়েকবার গোল করার সুযোগ লাভ করলেও তা কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়।
দ্বিতীয়ার্ধেও ইরানি কোচ আমির কাল্লে-নুয়ির শিষ্যরা আক্রমণাত্মক খেলা শুরু করেন কিন্তু বারবার তারা সুযোগ পেয়েও গোল করতে ব্যর্থ হন। খেলার ৫৯ মিনিটের মাথায় সিরিয়ার স্ট্রাইকার পাবলো সাব্বাগ্ব বল নিয়ে ইরানের রক্ষণভাগ অতিক্রম করতে সক্ষম হন এবং ইরানি গোলকিপার আলীরেজা বেইরানবান্দের মুখোমুখি হন। কিন্তু বেইরানবান্দ ফাউল করে সাব্বাগকে গোল করা থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করলে রেফারি এবার ইরানের বিরুদ্ধে পেনাল্টির আদেশ জারি করেন।
এবারও ফাউলের শিকার পাবলো সাব্বাগ গোল করে ইরানের সঙ্গে খেলায় সমতা ফিরিয়ে আনেন। এরপর ইরানি খেলোয়াড়রা একাধিকবার চেষ্টা করেও গোল করতে পারেননি। দ্বিতীয়ার্ধের খেলার একেবারে শেষপ্রান্তে সিরিয়ার বিপজ্জনক স্ট্রাইকার পাবলো সাব্বাগ্ব আবার বল নিয়ে ইরানের রক্ষণভাগকে প্রায় পরাস্ত করে ফেলেন।
এ সময় মেহদি তারেমি ফাউল করে সাব্বাগ্বকে আটকে দিতে গেলে তারেমি দ্বিতীয়বার হলুদ কার্ড গ্রহণ করেন। এর ১০ মিনিট আগে তিনি প্রথম হলুদ কার্ড পেয়েছিলেন। ফলে দক্ষিণ কোরিয়ার রেফারি দুই হলুদ কার্ড প্রদর্শন শেষে লাল কার্ড দেখিয়ে তারেমিকে মাঠ থেকে বের করে দেন। এরপর দ্বিতীয়ার্ধের বাকি খেলা গোলশূন্যভাবে শেষ হয়।
নক-আউট পর্বের এ খেলায় ফলাফল নির্ধারণ করার জন্য ম্যাচটি অতিরিক্ত সময়ে গড়ায় এবং ইরানকে ১০ খেলোয়াড় নিয়েই বাকি খেলা সমাপ্ত করতে হয়। অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে ইরান বা সিরিয়া কেউই গোলের দেখা পায়নি। খেলার নিয়ম অনুযায়ী টাইব্রেকারের মাধ্যমে কোয়ার্টার ফাইনালের জন্য যোগ্য দল নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সেখানে ইরানের পক্ষে করিম আনসারিফার্দ, রমিন রেজায়িান, ওমিদ ইব্রাহিমি, মেহদি তোরাবি এবং এহসান হাজসাফি- এই পাঁচজনই গোল করতে সক্ষম হন। পক্ষান্তরে ইরানি গোলরক্ষ আলীরেজা বেইরানবান্দ চমৎকার নৈপূণ্য প্রদর্শন করে সিরিয়ার দ্বিতীয় পেনাল্টি আটকে দিতে সক্ষম হন।
ইরানের পক্ষে পঞ্চম গোলটি হয়ে যাওয়ার ফলে সিরিয়ার খেলোয়াড়দেরকে পঞ্চম পেনাল্টিটি আর করতে হয়নি। ফলে ইরান ৫-৩ গোলের ব্যবধানে জয় নিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উন্নীত হয়। গতকালের অপর খেলায় জাপান ৩-১ গোলে বাহরাইনকে পরাজিত করে পরবর্তী রাউন্ডে উন্নীত হয়েছে। ফলে আগামী শনিবার কাতারের স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে ৫টায় ইরান সেমিফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে জাপানের মুখোমুখি হবে।
সূত্র: পার্স টুডে