আজ পরীক্ষা দেবেন সেই আরিফা

মায়ের অসুস্থতার কারণে চলমান এইচএসসি পরীক্ষার প্রথম দিনে কেন্দ্রে দেরিতে পৌঁছায় অংশ নিতে না পারা ছাত্রী আনিসা আরিফা পরীক্ষায় বসার সুযোগ পেয়েছেন। আজ রোববার বাংলা দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষাসহ পরবর্তী সব পরীক্ষায় অংশগ্রহণের অনুমতি দিয়েছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। আনিসা ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী।
গত ২৬ জুন ‘মা স্ট্রোক করায় দেড় ঘণ্টা পরে কেন্দ্রে এসে পরীক্ষা দিতে পারেননি পরীক্ষার্থী’ শিরোনামে এক দৈনিকে রাজধানীর সরকারি বাঙলা কলেজ কেন্দ্রে একটি ভিডিও প্রকাশিত হয়। ভিডিওটি সামাজিক মাধ্যমে দ্রুত ভাইরাল হলে অনেকেই তাকে পরীক্ষার সুযোগ দেওয়ার দাবি করেন এবং ব্যাপক আলোচনা হয়। পরে শিক্ষা উপদেষ্টা বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করার কথা জানান।
রাজধানীর ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী আনিসা আরিফা মায়ের অসুস্থতার পাশাপাশি নিজের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঝড় সামলে এখন বাকি পরীক্ষাগুলো দিতে প্রস্তুত। আজ রোববার (২৯ জুন) বাংলা দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষায় অংশ নেবেন তিনি।
শনিবার (২৮ জুন) আনিসা বলেন, ‘বাংলা দ্বিতীয়পত্রের পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। রোববার যথাসময়ে কেন্দ্রে গিয়ে পরীক্ষায় অংশ নেব।’ একই কথা জানিয়েছেন তার মা মুসলিমা আহমেদ সুবর্ণা এবং কলেজের অধ্যক্ষ মো. আসাদুজ্জামানও।
কলেজের অধ্যক্ষ মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ঘটনার পর আমরা কলেজ থেকে সহকারী অধ্যাপক কামরুল ইসলামকে আনিসার বাসায় পাঠিয়েছিলাম। তিনি গিয়ে খোঁজখবর নেন। তখন আনিসার মা ঘুমিয়েছিলেন, তাই তাকে বিরক্ত করা হয়নি। পরে আনিসার সঙ্গেই আমাদের কথা হয়েছে। সে জানিয়েছে, কালকের পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে এবং পরবর্তী পরীক্ষাগুলোতেও সময়মতো কেন্দ্রে যাবে।
ঘটনার বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা বোর্ডের সঙ্গে কলেজ কর্তৃপক্ষের কোনো যোগাযোগ হয়েছিল কি না জানতে চাইলে অধ্যক্ষ বলেন, আমার ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, শিক্ষা উপদেষ্টার পক্ষ থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন।
চলমান উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী আনিসার বাবা নেই। গত বৃহস্পতিবার বাংলা প্রথমপত্রের দিন সকালে স্ট্রোক করেন তার মা। অসুস্থ মায়ের চিকিৎসা ব্যবস্থাসহ স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে গিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে দেরিতে পৌঁছান তিনি। তবে, দেরিতে পৌঁছানোর কারণে তাকে পরীক্ষায় বসতে দেননি কেন্দ্রের দায়িত্বরতরা। একদিকে মায়ের অসুস্থতা, অন্যদিকে পরীক্ষা দিতে না পারার বেদনায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন, কাঁদতে শুরু করেন হাউমাউ করে আনিসা। ইত্তেফাক ডিজিটালে এ ঘটনার একটি ভিডিও প্রকাশিত হলে বিষয়টি নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে ইতিবাচক বার্তা দেওয়া হয়।