কিউএস র‍্যাংকিংয়ে দেশসেরা ঢাবি, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে যে প্রতিষ্ঠান

নিজস্ব প্রতিবেদক
জার্নাল ডেস্ক জার্নাল ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৯ জুন ২০২৫, ১২:৩০ PM

যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান কোয়াককোয়ারেলি সায়মন্ডস (QS) প্রকাশিত বিশ্বের শীর্ষ ৬০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় দ্বিতীয়বারের মতো স্থান পেয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)। গত বছর (২০২৫ সালের র‍্যাঙ্কিং) প্রথমবারের মতো ৫৫৪তম স্থানে উঠে এসেছিল প্রতিষ্ঠানটি। তবে এবার কিছুটা পিছিয়ে ঢাবির অবস্থান ৫৮৪তম।

এদিকে, দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) তাদের আগের অবস্থানই ধরে রেখেছে। এবারও তারা রয়েছে ৭৬১-৭৭০তম অবস্থানে। অন্যদিকে, বেসরকারি নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি তৃতীয় অবস্থানে থাকলেও র‍্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়ে গেছে। এবার তাদের অবস্থান ৯৫১-১০০০তম, যেখানে গতবার ছিল ৯০১-৯৫০তম।

বিশ্বব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর র‌্যাঙ্কিং মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠান কিউএস আজ বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) তাদের ওয়েবসাইটে এই র‍্যাঙ্কিংয়ের তথ্য প্রকাশ করেছে। ২০২৬ সালের ‘কিউএস ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র‍্যাঙ্কিংস ২০২৬: টপ গ্লোবাল ইউনিভার্সিটিজ’ শীর্ষক এই র‌্যাঙ্কিংয়ে বিশ্বের ১ হাজার ৫০১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে স্থান পেয়েছে বাংলাদেশের মোট ১৫টি সরকারি ও বেসরকারি উচ্চশিক্ষালয়।

টানা ১৩তম বছরের মতো প্রথম স্থানে রয়েছে ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি)। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডন, তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে রয়েছে যথাক্রমে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়। ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে পঞ্চম স্থানে।

২০০৪ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী টাইমস হায়ার এডুকেশনের সঙ্গে যৌথভাবে সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের র‍্যাঙ্কিং প্রকাশ করলেও ২০১০ সালে আলাদা হয়ে যায় কিউএস। এর পর থেকে আলাদাভাবে র‍্যাঙ্কিং প্রকাশ করে আসছে তারা৷ কিউএসের প্রকাশিত সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকাকে বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য র‍্যাঙ্কিংগুলোর একটি মনে করা হয়।

এই র‍্যাঙ্কিংয়ে এখন ৯টি সূচকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক মান নিরূপণ করা হয়৷ প্রতিটি সূচকে ১০০ করে স্কোর থাকে৷ সব সূচকের যোগফলের গড়ের ভিত্তিতে সামগ্রিক স্কোর নির্ধারিত হয়৷ কিউএস র‍্যাঙ্কিংয়ের সূচকগুলো হলো গবেষণা ও আবিষ্কার, শিখন অভিজ্ঞতা, কর্মসংস্থান, বৈশ্বিক সম্পৃক্ততা, স্থায়িত্ব, ইন্টারন্যাশনাল ফি, স্কলারশিপ, স্টুন্ডেট মিক্স, ইংলিংশ টেস্ট এবং একাডেমিক টেস্ট।

২০২৬ সালের জন্য সদ্যপ্রকাশিত র‍্যাঙ্কিংয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক স্কোর ২৮ দশমিক ৭০৷ এর মধ্যে গবেষণা ও আবিষ্কার সূচকে একাডেমিক খ্যাতিতে ৩০.৫০ ও শিক্ষকপ্রতি গবেষণা-উদ্ধৃতিতে ৬ দশমিক ৯০, শিখন অভিজ্ঞতার সূচকে শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাতে ১০ দশমিক ৫০, কর্মসংস্থান সূচকে কর্মসংস্থানের ফলাফলে ৯৭, চাকরির বাজারে সুনামে ৫১ দশমিক ৩০, বৈশ্বিক সম্পৃক্ততা সূচকে আন্তর্জাতিক শিক্ষক অনুপাত ২ দশমিক ২০, আন্তর্জাতিক গবেষণা নেটওয়ার্কে ৫৭.৮০, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী অনুপাতে ১ দশমিক ৪০ এবং আন্তর্জাতিক ছাত্র বৈচিত্র্য ১ দশমিক ৩০ স্কোর করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়৷এছাড়া স্থায়িত্ব সূচকে ৫৪.২০ স্কোর রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের।

অন্যদিকে, ইন্টারন্যাশনাল ফি ও স্কলারশিপ সূচকে কোনো অর্জন করেনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। স্টুন্ডেট মিক্স সূচকে দেশীয় ১০০% আন্তর্জাতিক ০%, ইংলিংশ টেস্ট এবং একাডেমিক টেস্ট সূচকেও কোনো অর্জন করেনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

অবশ্য এবারের র‍্যাঙ্কিংয়ে জায়গা পাওয়া বাংলাদেশের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কোনোটিরই সামগ্রিক স্কোর উল্লেখ করেনি কিউএস৷ দেশসেরা দ্বিতীয় হওয়া বুয়েটের অবস্থান ৭৬১-৭৭০তম এবং তৃতীয় হওয়া নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির অবস্থান ৯৫১-১০০০তম। 

এছাড়া বাকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তালিকার এক হাজারের পরে। এসব বিশ্ববিদ্যালয় হলো যথাক্রমে-ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (১০০১-১২০০), ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি (১২০১-১৪০০), ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি (১২০১-১৪০০), জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (১২০১-১৪০০), রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (১২০১-১৪০০), আমেরিকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (১৪০০+), চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (১৪০০+), ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি (১৪০০+), ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (১৪০০+), খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (১৪০০+), খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (১৪০০+) এবং  রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (১৪০০+)।