জানুয়ারিতে রপ্তানি আয় বৃদ্ধি পেয়েছে ৫.৭০ শতাংশ
চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ৪৪৪ কোটি মার্কিন ডলার। টাকার অঙ্কে যার পরিমাণ দাঁড়ায় ৫৪ হাজার ১১৯ কোটি ৪৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা (প্রতি ডলার ১২২ টাকা)। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এই আয় বৃদ্ধি পেয়েছে ৫ দশমিক ৭০ শতাংশ। আগের বছরের জানুয়ারিতে আয় ছিল ৪২০ কোটি ডলার। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
ইপিবি অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) মোট রপ্তানি আয় ছিল ২ হাজার ৮৯৬ কোটি ৯৫ লাখ ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১১ দশমিক ৬৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে আয় ছিল ২ হাজার ৫৯৩ কোটি ৮৯ লাখ ডলার।
বিশ্লেষকদের মতে, রপ্তানি প্রবৃদ্ধির এই ধারা দেশের অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সহায়ক ভূমিকা রাখছে। যদিও প্রবাসী আয় এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ শক্তিশালী হচ্ছে, তবে শিল্প খাতের কিছু চ্যালেঞ্জ এখনও বিদ্যমান, যা পুরোপুরি এই পরিসংখ্যানে প্রতিফলিত হয়নি।
বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল মন্তব্য করেছেন যে, রপ্তানি প্রবৃদ্ধির হার আশাব্যঞ্জক হলেও উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির কারণে প্রতিযোগিতামূলক বাজারে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। এছাড়া, বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য সংকুচিত হওয়ার ফলে মূল্য প্রতিযোগিতা তীব্র হয়েছে এবং বাণিজ্যযুদ্ধের আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের জন্য কিছু সুযোগ তৈরি হলেও, জ্বালানি নিরাপত্তা এবং আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে তৈরি পোশাক খাত রপ্তানি আয় বাড়ানোর ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা রেখেছে, যেখানে ১২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। কৃষিজাত পণ্যের রপ্তানি আয়ও ১১ দশমিক ৩৭ শতাংশ বেড়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রপ্তানি খাত হিসেবে পরিণত হয়েছে। অন্যান্য খাতের মধ্যে রাবার পণ্য, সাইকেল এবং জাহাজ রপ্তানির প্রবৃদ্ধি উল্লেখযোগ্য ছিল।
ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারিতে তৈরি পোশাক, কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য, চামড়াবিহীন জুতা, হিমায়িত খাদ্য এবং প্রকৌশল পণ্যের রপ্তানি বেড়েছে। তবে, চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, হোম টেক্সটাইল, প্লাস্টিক পণ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের রপ্তানি কমেছে। যেহেতু রপ্তানি আয়ের ৮০ শতাংশের বেশি তৈরি পোশাক খাত থেকে আসে, তাই এই খাতের ওপর নির্ভর করে সামগ্রিক প্রবৃদ্ধি। জানুয়ারিতে তৈরি পোশাক রপ্তানি ৫ দশমিক ৫৭ শতাংশ বেড়েছে, যা সামগ্রিক প্রবৃদ্ধির সাথে সম্পর্কিত।
এই সময়ের মধ্যে তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে ২ হাজার ৩৫৫ কোটি ডলার, যা গত বছরের তুলনায় ১২ শতাংশ বেশি। জানুয়ারিতে এই খাতে রপ্তানি ছিল ৩৬৬ কোটি ডলার এবং প্রবৃদ্ধি ছিল ৫ দশমিক ৫৭ শতাংশ।
বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম জানিয়েছেন, রপ্তানির অর্ডার বাড়লেও উৎপাদন ব্যয়ের চাপ রপ্তানিকারকদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।