ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ভালো অবস্থানে রয়েছে: বিশ্বব্যাংকের এমডি
বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অপারেশনস) অ্যানা বেজার্ড বলেছেন, বিশ্ব অর্থনীতিতে সংকটের মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়ন ও ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ভালো অবস্থানে রয়েছে।
আজ রবিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর দপ্তরে তার সঙ্গে বৈঠক করেন বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। বাংলাদেশের সমসাময়িক ও বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে চলমান প্রকল্প নিয়ে বৈঠক শেষে সংবাদকর্মীদের এ কথা বলেন তিনি।
বৈঠকে আলোচনার বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের এমডি বলেন, মূল্যস্ফীতি কমাতে বিশ্বব্যাংক কীভাবে সহায়তা করতে পারে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তাছাড়া সামাজিক সুরক্ষা, এসএমই খাতের উন্নয়ন নিয়েও কথা হয়েছে।
অ্যানা বেজার্ড বলেন, বিশ্ব অর্থনীতি সংকটের মধ্যে রয়েছে। বাংলাদেশ যার বাইরে না। এসবের মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়ন ও ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ভালো অবস্থানে রয়েছে।
এর আগে একদিনের সফরে ঢাকায় আসেন বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অপারেশনস) অ্যানা বেজার্ড। বাংলাদেশে এটি তার প্রথম সফর।
উল্লেখ্য, স্বাধীনতার পর বাংলাদেশকে সহায়তাকারী প্রথম উন্নয়ন সহযোগীদের মধ্যে বিশ্বব্যাংক অন্যতম। দেশ স্বাধীনের পর বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে ৪১ বিলিয়ন ডলারের বেশি সহায়তা দিয়েছে। এই ঋণের বেশির ভাগই অনুদান বা রেয়াতি ঋণ।
বাংলাদেশে বর্তমানে বিশ্বব্যাংক গ্রুপের ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (আইডিএ) সমর্থিত বৃহত্তম কর্মসূচি চলমান।
জানা গেছে, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংকের সদস্য হয়। ওই বছর অক্টোবর মাসে বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে প্রথম ঋণ নেয়। যার পরিমাণ ছিল ৫৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা নেওয়া হয় জরুরি অগ্রাধিকার খাতে। একই বছরের নভেম্বরে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে ৫০ মিলিয়ন ডলার ঋণ নেওয়া হয়। পরে ১৯৭৩ সালে প্রথম বাংলাদেশে পানি সরবরাহ খাতের জন্য প্রকল্প অনুমোদন করে আন্তর্জাতিক অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠানটি। এর পর থেকে বাংলাদেশ পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন প্রকল্পে ঋণ নেয় বিশ্বব্যাংক থেকে।
বাংলাদেশে দুটি বড় অবকাঠামো প্রকল্প বঙ্গবন্ধু বহুমুখী সেতু (যমুনা সেতু) এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক (দুই লেন) নির্মাণসহ এ পর্যন্ত ৩০০টি প্রকল্প সম্পন্ন হয়েছে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে। এখন নতুন করে চলমান রয়েছে আরও ৫৭টি প্রকল্প।
যদিও গত ৫২ বছরে একবারই বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে বাংলাদেশের ‘শীতল সম্পর্ক’ তৈরি হয়েছিল। সেটি হয়েছিল ২০১২ সালে পদ্মা সেতুর অর্থায়ন নিয়ে। এর বাইরে সত্তরের দশকে মূলত পুনর্বাসন ও পুনর্গঠন প্রকল্পেই বেশি অর্থায়ন করেছে বিশ্বব্যাংক। আশির দশকে কৃষি খাতে ব্যাপক বিনিয়োগ করে এই সংন্থাটি। ১৯৭৮ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত অর্থনীতি ও ব্যবসা-বাণিজ্য খাতে সংস্কারে আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা দেয়।