জিআই পণ্যের তালিকা করতে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে হাইকোর্টের নির্দেশ
কোনো একটি দেশের মাটি, পানি, আবহাওয়া এবং ওই জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতি যদি কোনো একটি পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তাহলে সেটিকে ওই দেশের ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য (জিআই) হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। অর্থাৎ সেই পণ্য শুধু ওই এলাকা ছাড়া অন্য কোথাও উৎপাদন করা সম্ভব নয়।
জিআই হলো ভৌগলিক নির্দেশক চিহ্ন যা কোনো পণ্যের একটি নির্দিষ্ট উৎপত্তিস্থলের কারণে এর খ্যাতি বা গুণাবলী নির্দেশ করতে ব্যবহৃত হয়। সাধারণত জিআইতে উৎপত্তিস্থলের নাম (শহর, অঞ্চল বা দেশ) অন্তর্ভুক্ত থাকে। জিআই (GI) এর পূর্ণরুপ হলো (Geographical indication) ভৌগলিক নির্দেশক। WIPO (world intellectual property organization) হলো জিআই পণ্যের স্বীকৃতি দানকারী প্রতিষ্ঠান।
কোনো নির্দিষ্ট স্থানের কোনো পণ্য খুব নামকরা হলে এবং সেই নামের ওপর বিশ্বাস করেই পণ্যটি কেনা ও ব্যবহার করার গুরুত্ব দিতেই এই জিআই সনদ দেওয়া হয়। প্রতিটি পণ্যের সঙ্গে সে স্থানের নাম যুক্ত করা হয়।
একটি জাতির সাংস্কৃতিক অধিকার-ওই জাতিকে বিশ্ব পরিমণ্ডলে এক স্বাতন্ত্রিক বৈশিষ্ট্য নিয়ে মাথা উঁচু করে পথ চলতে সহায়তা করে। বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের শাড়ি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) হিসেবে নিবন্ধিত হওয়ার ঘটনার পর এবার বাংলাদেশের জিওগ্রাফিক্যাল আইডেন্টিফিকেশন (জি আই) বা ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের তালিকা করতে সরকারকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আজ সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি খুরশীদ আলম সরকার ও বিচারপতি সরদার রাশেদ জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন। সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে আগামী ১৯ মার্চের মধ্যে এ তালিকা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের মোট ২১টি পণ্য জিআই হিসেবে নিবন্ধিত হলেও মোট ১৪টি পণ্যের জন্য নতুন করে আবেদন করা হয়েছে। এছাড়া, আবেদনের প্রক্রিয়ার মাঝে আছে আরও দু’টি পণ্য।
কোনও পণ্যের জন্য আবেদন করার অর্থ এই নয় যে সেগুলো জি আই সনদ পাওয়ার মতো যোগ্য বা পাবেই। নানারকম পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর নির্ধারিত হয় যে কোন পণ্য এই তালিকায় উঠবে। যাচাই-বাছাইয়ের পর এগুলোর কোনওটি যদি জি-আই সনদ পেয়ে যায়, তাহলে তখন সেগুলো বাংলাদেশের নিজস্ব পণ্য হিসেবে বিশ্ব দরবারে পরিচিতি লাভ করবে।
এর আগে রবিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের শাড়ি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) হিসেবে নিবন্ধিত হওয়ার ঘটনায় লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার এম. আশরাফুল ইসলাম সংশ্লিষ্টদের প্রতি এই লিগ্যাল নোটিশ পাঠান।