ইসলামী ব্যাংকে চাকরি হারানো আতঙ্ক

বেসরকারি খাতের ইসলামী ব্যাংকে চলছে নজিরবিহীন শুদ্ধি অভিযান। চাকরিবিধি ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে একসঙ্গে আরও ২০০ কর্মীকে অব্যাহতি দিয়েছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। চলতি সপ্তাহে দ্বিতীয় দফার এই ছাঁটাইয়ের ফলে মোট ৪০০ জন কর্মী চাকরি হারালেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা ঘটনাটিকে নজিরবিহীন হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
অন্যদিকে ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বলছে, এটি দক্ষতা যাচাই ও অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা রক্ষার অংশ। সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (আইবিএ) পরিচালিত বিশেষ যোগ্যতা মূল্যায়ন পরীক্ষাকে ঘিরেই এ প্রক্রিয়া শুরু হয়। পরীক্ষায় অংশ নেন ৪১৪ জন কর্মী, যার মধ্যে ৩৬৪ জন উত্তীর্ণ হয়েছেন। অবশিষ্ট ৫০ জনকে প্রশিক্ষণ দিয়ে পুনর্মূল্যায়নের সুযোগ দেওয়া হবে। আর পরীক্ষায় অংশ না নেওয়া প্রায় ৫ হাজার কর্মীকে আপাতত ওএসডি (বিশেষ দায়িত্বে সংযুক্ত) করা হয়েছে।
ইসলামী ব্যাংকের একাধিক সূত্র জানায়, যাদের চাকরি বাতিল করা হয়েছে, তারা কেবল অযোগ্যতার কারণে নয়, বরং পরীক্ষার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার, সহকর্মীদের অংশগ্রহণে বাধা এবং ব্যাংকের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে অবস্থান নেওয়ার মতো কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন।
ব্যাংক সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, চট্টগ্রামের প্রভাবশালী ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপ ২০১৭ সালে ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেয়। তখন থেকেই হাজারো কর্মীকে কোনো পরীক্ষা ছাড়াই সরাসরি সিভি নিয়ে নিয়োগ দেওয়া হয়। এসব নিয়োগের বেশিরভাগ হয়েছিল চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার বাসিন্দাদের মধ্যে থেকে। ফলে বর্তমানে ব্যাংকের প্রায় অর্ধেক কর্মীই ওই অঞ্চলের মানুষ।
ইসলামী ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও মানবসম্পদ উন্নয়ন বিভাগের প্রধান ড. কামাল উদ্দীন জসীম গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের উদ্দেশ্য কাউকে ছাঁটাই করা নয়, বরং দক্ষতা যাচাই ও বৈধতা নিশ্চিত করা।