রপ্তানিতে সুবাতাস!

নিজস্ব প্রতিবেদক
জার্নাল ডেস্ক জার্নাল ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৬ জুলাই ২০২৫, ০৯:১৬ PM

যুক্তরাষ্ট্রে শুল্কসংক্রান্ত জটিলতা ও বাজারে অস্থিরতা সত্ত্বেও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানিতে শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।

২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত পাঁচ মাসে ইউরোপে পোশাক রপ্তানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯৬৮ কোটি ৮ লাখ ৭০ হাজার ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৭ দশমিক ৬১ শতাংশ বেশি। ২০২৪ সালের একই সময়ে রপ্তানি হয়েছিল ৮২৩ কোটি ১০ লাখ ৮০ হাজার ডলার। অর্থাৎ, এক বছরে রপ্তানি বেড়েছে ১৪৪ কোটি ৯৭ লাখ ৯০ হাজার ডলার।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের পরিসংখ্যান সংস্থা ইউরোস্ট্যাটের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ২০২৫ সালের প্রথম পাঁচ মাসে ইউরোপে মোট ৩ হাজার ৯৭১ কোটি ২৪ লাখ ৬০ হাজার ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি, ১০০৯ কোটি ৬৯ লাখ ৯০ হাজার ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে চীন। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ, যার রপ্তানির পরিমাণ ৯৬৮ কোটি ডলার।

ইউরোপের বাজারে পোশাক আমদানি বেড়েছে ১১ দশমিক ৯০ শতাংশ, যার পরিমাণ ৩ হাজার ৯৭১ কোটি ডলার। তবে ইউনিট দামে (প্রতি কেজি) সামান্য ১ দশমিক ৩৩ শতাংশ কমে গেছে। অথচ বাংলাদেশের ইউনিট দাম ২ দশমিক ২০ শতাংশ বেড়েছে, যা রপ্তানি খাতে প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতার ইঙ্গিত দেয়।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, বাংলাদেশের মোট রপ্তানির প্রায় অর্ধেক যায় ইইউতে। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে নানা শুল্ক জটিলতা ও চ্যালেঞ্জের মুখে বাজারে এই অবস্থান ধরে রাখাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, বাজার বৈচিত্র্য বাড়ানোর পাশাপাশি ইইউতে প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান ধরে রাখতে কৌশলগত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। নতুন বাজার অন্বেষণ করলে ইইউ ও যুক্তরাষ্ট্রের ওপর অতিনির্ভরতা কমবে। তাঁরা বলছেন, ভলিউম, মূল্য ও মোট রপ্তানিতে একসঙ্গে প্রবৃদ্ধি একটি ইতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এই গতি ধরে রাখা গেলে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যেতে পারবে।

প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চীন, ভারত, পাকিস্তান ও কম্বোডিয়াও ভালো করেছে। গত পাঁচ মাসে বাজারটিতে চীনের রপ্তানি ২০ দশমিক ৮৬ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ৯ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে।

পাশের দেশ ভারতের রপ্তানি ১৬ দশমিক ৩৯ শতাংশ বেড়ে ২৫১ কোটি ডলার, পাকিস্তানের ১৯ দশমিক ০৯ শতাংশ বেড়ে ১৭৫ কোটি ৯ লাখ ডলার। কম্বোডিয়ায় ২৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ বেড়ে ১৯০ কোটি ডলার, ১৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ রপ্তানি বৃদ্ধি করেছে ভিয়েতনাম। গত পাঁচ মাসে বাজারটিতে তাদের পণ্য রপ্তানি হয়েছে ১৮৩ কোটি ডলার।

এ ছাড়াও শ্রীলঙ্কার রপ্তানি আয় বেড়েছে ১০ দশমকি ১০ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়ার বেড়েছে ৫ দশমিক ৭১ শতাংশ, মরক্কোর পণ্য বাজারটিতে রপ্তানি বেড়েছে ৫ দশমিক ২২ শতাংশ। অন্যদিকে একই সময়ে পণ্য রপ্তানি কমেছে তুরস্কের। দেশটির রপ্তানি ৬ শতাংশ কমে ৩৮৭ কোটি ডলারে নেমে এসেছে।