কেন ক্ষমা চাইলেন স্বাধীন খসরু?

নিজস্ব প্রতিবেদক
বিনোদন জার্নাল বিনোদন জার্নাল
প্রকাশিত: ২৩ আগস্ট ২০২৫, ০৩:৫৩ PM

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এক নারী উপদেষ্টাকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়েছেন অভিনেতা স্বাধীন খসরু। সমালোচনার পর তিনি প্রকাশ্যে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। শুক্রবার (২২ আগস্ট) রাতে ফেসবুকে ‘অনুশোচনা’ শিরোনামে দেওয়া এক পোস্টে সকলের কাছে ক্ষমা চান তিনি।

এর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিওতে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করায় তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন এই অভিনেতা। 

নেটিজেনদের অনেকে তার বক্তব্যকে ‘অশালীন’ ও ‘মানসিক বিকারগ্রস্ততা’র বহিঃপ্রকাশ বলে আখ্যা দেন।

সমালোচনার মুখে শুক্রবার (২১ আগস্ট) রাতে ফেসবুকে ‘অনুশোচনা’ শিরোনামে একটি পোস্ট দিয়ে ক্ষমা চান স্বাধীন খসরু। 

পোস্টে তিনি লেখেন, গতকাল আমার ছোট একটি ভিডিও পোস্ট করা নিয়ে অনেক আলোচনা-সমালোচনার উত্তাপ ছড়াচ্ছে। এখানে কোনো নারী কেন, নারী-পুরুষ বলে কোনো কথা না, আমি সমগ্র মানব জাতিকে সম্মান করি। কাউকে আঘাত বা আক্রমণ করার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে বা উদ্দেশ্য ছিল না। এটা ছিল গত কয়েকদিন ধরে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা থেকে জমে ওঠা আমার একান্তই ব্যক্তিগত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ মাত্র।

এই অভিনেতা আরও বলেন, যদি কেউ মনোকষ্ট বা আঘাত পেয়ে থাকেন, তাহলে আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত এবং ক্ষমাপ্রার্থী। সবাই ভালো থাকুন। মানুষ এবং মানবতার জয় হোক।  যদিও ক্ষমা প্রার্থনার মাধ্যমে অভিনেতা নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন, তবুও সমালোচনার ঝড় থামেনি। অনেকেই মনে করছেন, এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য জনসাধারণের মধ্যে ভুল বার্তা ছড়াতে পারে।

কূটনৈতিক সূত্র বলছে, ঢাকা-ইসলামাবাদের মধ্যে গত দুই দশকের শীতল সম্পর্ককে পুনরুজ্জীবিত করতে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালোচ গত এপ্রিলেই ঢাকা সফর করেন। সেই প্রচেষ্টার ধারাবাহিকতায় এবার ইসহাক দার আসছেন।

তিনি দ্বিপক্ষীয় রাজনৈতিক সম্পর্ককে পুনরায় সক্রিয় করার পাশাপাশি ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক যোগাযোগের বিষয়ে আলোচনা করতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

ইসহাক দার মূলত ২৭–২৮ এপ্রিল ঢাকায় আসার কথা ছিল। কিন্তু ২২ এপ্রিল ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে নতুন উত্তেজনা তৈরি হয়। পরে তার ঢাকায় আগমনের তারিখ পরিবর্তিত হয়। 

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সফরের দ্বিতীয় দিন রোববার পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মূল বৈঠকটি হবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে। ওই দিন দুই মন্ত্রী শুরুতে একান্তে এবং পরে প্রতিনিধি পর্যায়ে বৈঠক করবেন। বৈঠক শেষে দুই দেশের মধ্যে পাঁচ থেকে ছয়টি চুক্তি ও এমওইউ সইয়ের কথা রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাতে জানা গেছে, তৌহিদ-দারের বৈঠকে ব্যবসা, বিনিয়োগ, সংযুক্তি, নানা পর্যায়ে দুই দেশের লোকজনের চলাচল সুগম করাসহ দ্বিপক্ষীয় নানা বিষয় আলোচনায় থাকবে। পররাষ্ট্রসচিবদের বৈঠকের ধারাবাহিকতায় এবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের আলোচনায় সম্পর্ক এগিয়ে নিতে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, বোঝাপড়া ও অভিন্ন স্বার্থে জোর দেবে বাংলাদেশ। 

তবে সাম্প্রতিক সময়ে উচ্চপর্যায়ের যোগাযোগের সম্পর্ক যেখানে এসেছে, তা এগিয়ে নিতে হলে অমীমাংসিত বিষয়গুলোর সুরাহা জরুরি।

রোববার বিকালে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন ইসহাক দার।

কূটনৈতিক সূত্রের বরাতে জানা গেছে, ঢাকা সফরকালে ইসহাক দার বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। তারই অংশ হিসেবে দার বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার গুলশানের বাসায় দেখা করতে যাবেন। পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের সঙ্গেও সাক্ষাতের কথা রয়েছে দারের।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক পালাবদলের পর পাকিস্তান দ্বিপক্ষীয় যোগাযোগ সক্রিয় করতে নানা উদ্যোগ নিচ্ছে। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবেই আমনা বালোচের ঢাকা সফরের পর এবার আসছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার।

প্রসঙ্গত, ২০১২ সালে পাকিস্তানের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিনা রাব্বানি খার ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত ডি-৮ সম্মেলনে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানাতে ঢাকায় এসেছিলেন। 

১০ বছরের ব্যবধানে ২০২২ সালের জুলাইয়ে হিনা রাব্বানির আবার ডি-৮ মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে যোগ দিতে ঢাকায় আসার সম্ভাবনা তৈরি হয়। তিনি তখন পাকিস্তানের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হিনা ঢাকায় আসেননি।