পুরুষকে ভালোবাসেন বাঁধন, যাদেরকে বাসেন না

নিজস্ব প্রতিবেদক
বিনোদন জার্নাল বিনোদন জার্নাল
প্রকাশিত: ২৩ আগস্ট ২০২৫, ১০:৩৮ AM

ঢালিউডের অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন সবসময় খোলামেলা ও সাহসী বক্তব্যের জন্য আলোচনায় থাকেন। সামাজিক মাধ্যমে নেটিজেনদের সমালোচনা ও প্রশংসা দুটোই সমানভাবে পেয়ে থাকেন তিনি। অভিনয়ের পাশাপাশি দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনেও তাকে সক্রিয় দেখা যায়—কখনো পক্ষে, কখনো বিপক্ষে।

গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে তাকে দেখা গিয়েছিল। আবার ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকীতেও শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে কটাক্ষের মুখে পড়েন তিনি। সমালোচকরা তার আচরণকে দ্বিচারিতা হিসেবে আখ্যা দিলেও বাঁধন সক্রিয়ভাবে সব জায়গায় নিজেকে যুক্ত রেখেছেন। এবার তিনি নিজের জীবনের সংগ্রামের পথে দেখা এক পুরুষকে নিয়ে কথা বলেছেন।

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে আজমেরী হক বাঁধন লিখেছেন, ‘আমার জীবনের পুরুষরা’। নিজের জীবনের পুরুষের কথা। সেখানে অভিনেত্রী স্পষ্ট করেছেন, তার আপত্তি পুরুষদের প্রতি নয়, বরং সমাজে প্রচলিত পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার প্রতি।

বাঁধন বলেন, আমাকে নিয়ে প্রায়ই একটা বড় ভুল বোঝাবুঝি হয়। অনেকেই ভাবেন আমি নাকি পুরুষকে পছন্দ করি না। এটা সত্যি নয়; আমি যা পছন্দ করি না, তা হলো— আমাদের এই পুরুষতান্ত্রিক সমাজ, আর সেই সমাজকে টিকিয়ে রাখা নারী-পুরুষ উভয়কেই। 

তিনি বলেন, পুরুষ মানুষকে ঘৃণা না করলেও পুরুষতন্ত্রকে কখনোই মেনে নিতে রাজি নয়।

তবে পুরুষ নিয়ে অভিনেত্রীর অভিজ্ঞতা সবসময় ইতিবাচক ছিল না। তার জীবনে এমনও পুরুষ এসেছে, যারা ছিলেন অসম্মানজনক, হিংস্র ও অমানবিক। কিন্তু তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন বাঁধন। অভিনেত্রী বলেন, তারা যতই আমাকে ভাঙতে চেয়েছে, তাদের নিষ্ঠুরতা আমাকে ততটাই আগুনের মতো জ্বালিয়েছে—অন্যায়ের বিরুদ্ধে আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণের মতো।

তার জীবনে গুরুত্বপূর্ণ কিছু পুরুষ প্রসঙ্গে অভিনেত্রী বলেন, প্রথমেই আছেন তার বাবা, যিনি নানা উপায়ে তাকে গড়ে তুলেছেন। ‘রেহানা’ চলচ্চিত্রের পরিচালক আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ।— এ দুজন পুরুষ তার ব্যক্তিত্ব ও শিল্পীজীবনে গভীর প্রভাব ফেলেছেন।

স্ট্যাটাসে নিজের দুই ভাইয়ের কথাও তুলে ধরেছেন বাঁধন। তিনি বলেন, তার দুই ভাই-ই জীবনের ভরসা, যদিও চিন্তায় পার্থক্য আছে। বিশেষ করে ছোট ভাই রাশাকে তিনি শুধু ভাই নয়, বরং সেরা বন্ধু হিসেবেই দেখেন। তার সঙ্গে তিনি শিশুসুলভ সরলতায় কথা বলতে পারেন। আরেক ভাইয়ের প্রসঙ্গে অভিনেত্রী বলেন, বাবা-মা না পারলেও সেই ভাই তার পাশে দাঁড়িয়েছেন, যা তিনি কখনো ভুলবেন না।

বাঁধন বলেন, তারা দুজনই শরিয়তের নিয়ম কঠোরভাবে না মেনে সমান অংশে আমার সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছিলেন। আমি আসলে পছন্দ করি না যে, তারা যেন আমাকে দিয়ে দিয়েছে—যেন সেটা তাদের ছিল, আমার নয়। কিন্তু এটাই আমাদের সিস্টেমের বাস্তবতা। আর তারা সেটাকে ন্যায্যতা ও ভালোবাসা দিয়ে সামলেছে। আমি আশা করি, একদিন আমাদের আইনই নিশ্চিত করবে—সবাই সমানভাবে উত্তরাধিকার পাবে।

নিজের অবস্থান পরিষ্কার করে অভিনেত্রী বলেন, তাই ভুল বোঝো না—আমি পুরুষকে অপছন্দ করি না। আমি অপছন্দ করি পুরুষতন্ত্রকে। আর হ্যাঁ, আমি পুরুষকে ভালোবাসি।