২০ কোটি টাকায় আ.লীগের মনোনয়ন পাইয়ে দেওয়ার ফাঁদ; বাবা-মেয়ে গ্রেপ্তার
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী বছরের ৭ জানুয়ারী। এ উপলক্ষে মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু করেছে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ আরও কিছু দল। এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন কিনতে মানুষের মাঝ আগ্রহ ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে এরই মাঝে সামনে এসেছে এক প্রতারক চক্রের। আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের টার্গেট করে ফাঁদ পেতেছিলেন বাবা-মেয়ে। এক মনোনয়নপ্রত্যাশীর অভিযোগের ভিত্তিতে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হাতে ধরা পড়েছেন তাঁরা। গতকাল বৃহস্পতিবার নোয়াখালী থেকে বাবা মোহাম্মদ ইয়াসিন ও মেয়ে সুমাইয়া ইয়াসমিনকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
ডিবি পুলিশ বলছে, মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মোবাইল নম্বর জোগাড় করে ২০ কোটি টাকার বিনিময়ে মনোনয়ন পাইয়ে দেওয়ার কথা বলতেন তাঁরা। বিশ্বাস তৈরির জন্য ব্যবহার করতেন একটি বিশেষ অ্যাপ। কল দিলেই মোবাইল ফোনে ভেসে উঠত প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন ব্যক্তির নাম ও ছবি।
আজ শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
হারুন অর রশীদ বলেন, সম্প্রতি একজন মনোনয়নপ্রত্যাশী প্রার্থী ও প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীকে ফোনে কল করে এই প্রতারকেরা। বাবা-মেয়ে তাঁকে বলেন, ‘আপনার মনোনয়নের বিষয়ে বিশেষ নির্দেশনা রয়েছে। আপনি দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পাবেন। এ জন্য দলের ফান্ডে আপনাকে ২০ কোটি টাকা দিতে হবে। আপনি এই টাকা রেডি রাখবেন। যখন জমা দিতে বলা হবে, তখন দেবেন। আর অল্প সময়ের মধ্যে আপনি দেখা করবেন।’
মনোনয়নপ্রত্যাশী ওই নেতা পরে আওয়ামী লীগের একজন কেন্দ্রীয় নেতাকে বিষয়টি জানান। এটি প্রতারণা বুঝতে পেরে তখন তিনি ডিবিতে অভিযোগ করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে প্রতারক বাবা ও মেয়েকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এক প্রশ্নের জবাবে ডিবিপ্রধান বলেন, ‘একেক সময়ে প্রতারণার একেকটি মৌসুম থাকে। আগে চাকরি, পোস্টিং, বিদেশে লোক পাঠানোসহ বিভিন্নভাবে প্রতারণা করে অনেককে সর্বস্বান্ত করেছে। বর্তমানে চলছে মনোনয়ন প্রতারণা। নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণার পরেই নির্বাচন ঘিরে সক্রিয় হয়ে উঠেছে এসব প্রতারক। অনেকেই তাদের ফাঁদে পা দিয়ে কিছু টাকাও দিয়েছে। আবার কেউ কেউ টাকা দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। টাকা না দিয়ে অনেকেই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন, সঙ্গে সঙ্গেই আমরা প্রতারকদের গ্রেপ্তার করেছি। তাদের রিমান্ডে এনে কারা কারা জড়িত সেটা জানার চেষ্টা চলছে।’