আসরের প্রথম ম্যাচেই জয় পেল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স
মাশরাফীর সিলেটকে হারিয়ে চট্টগ্রামের শুভসূচনা। বেঁধে রাখা গেলো না চট্টগ্রামকে, বেঁধে রাখতে পারলেন না মাশরাফী-সাকিবরা। তাদের হতাশায় মুড়িয়ে আসরের প্রথম ম্যাচেই জয় তুলে নিয়েছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। শাহাদাত দীপু ও নাজিবুল্লাহ জাদরানের ব্যাটে ভর করে ৭ উইকেটের জয় পেয়েছে বন্দরনগরীর দলটি।
আসরের উদ্বোধনী দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে চট্টগ্রামের মুখোমুখি হয় সিলেট স্ট্রাইকার্স। টসে হেরে আগে ব্যাট করে ২ উইকেটে ১৭৭ রান তুলে তারা। জাকির হাসান করেন ৪৩ বলে ৭০* রান। জবাবে ৯ বল হাতে থাকতেই লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে চট্টগ্রাম। নাজিবুল্লাহ ৩০ বলে ৬১* ও দীপু করেন ৩৯ বলে ৫৭ রান।
বড় লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতেই তানজিদ তামিমের (২) উইকেট হারায় চট্টগ্রাম। তবুও অবশ্য শুরুটা মন্দ ছিল না। আভিষ্কা ফার্নান্দো পথ দেখান দলকে। অপরপ্রান্ত যখন নড়বড়ে তখন অপরপ্রান্ত থেকে চট্টগ্রামকে লড়াইয়ে রাখেন তিনি। যদিও ইনিংসটা বড় হয়নি, ফেরেন ২৩ বলে ৩৯ রানে। তবে তা সময়ের প্রয়োজন মেটাতে ছিল যথেষ্ট।
তিনে নেমে ইমরানুজ্জামান চমক হয়ে ফুটতে পারেননি। মাশরাফীর করা প্রথম বলেই ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন তিনি। তার ব্যাটে আসে ১১ রান। পরের গল্পটা দীপু আর নাজিবুল্লাহর। দু'জনে মিলে অবিচ্ছেদ্য জুটি গড়ে দলকে পৌঁছে দেন জয়ের বন্দরে। ৭২ বলে ১২১* রান আসে তাদের যুগলবন্দীতে।
আগের আসরগুলোয় নিজেকে মেলে ধরার তেমন একটা সুযোগ পাননি শাহাদাত দীপু। পাদপ্রদীপের আড়ালেই ছিলেন বলা যায়। তবে এবার যখন পেলেন, হাতছাড়া আর করলেন না অনুর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপজয়ী এই তারকা। তুলে নিলেন ক্যারিয়ারের প্রথম বিপিএল ফিফটি। যা তার ক্যারিয়ার সেরা।
শেষ দুই ওভারে যখন জয়ের জন্যে প্রয়োজন ১৪ রান, তখন টানা তিন বলে জোড়া ছক্কা আর এক বাউন্ডারি হাঁকিয়ে জয় নিশ্চিত করেন নাজিবুল্লাহ। অবশ্য তিনি ফিরতে পারতেন আরো আগেই, দু-দু'বার জীবন পেয়েছেন এই আফগান ব্যাটার।
এর আগে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ ছুড়ে দিতে যথেষ্ট চেষ্টা করে সিলেট। মোহাম্মদ মিথুন আর নাজমুল হোসেন শান্তের দারুণ সূচনার পর জাকির হাসানের ঝড়ো অর্ধশতকে ২ উইকেট হারিয়ে ১৭৭ রান পর্যন্ত পৌঁছায় তাদের সংগ্রহ।
শুরু থেকেই আত্মবিশ্বাসী সিলেট। মিথুন আর শান্ত মিলে উদ্বোধনী জুটিতেই পথ দেখান বড় সংগ্রহের। চট্টলার বোলারদের হেসেখেলেই সামলে নেন দু'জনে। যুগলবন্ধী ভাঙে ৮.২ ওভারে, ৬৭ রানে। নিহাদকে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে আভিষ্কা ফার্নান্দোর দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত হয়ে ফেরেন ৩০ বলে ৩৬ করে।
আরেক ওপেনার মিথুনও অবশ্য অর্ধশতক পূরণ করতে পারেননি। শুরু থেকেই আগ্রাসী মেজাজে খেলতে থাকা অভিজ্ঞ এই ব্যাটার ফেরেন ক্যাম্ফারের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে। তার ব্যাটে আসে ২৮ বলে ৪০ রান। দলীয় সংগ্রহ তখন ১২ ওভার শেষে ৯৫/২।
সেখান থেকে কার্টিস ক্যাম্ফারকে নিয়ে ৫১ বলে ৮২ রানের এক অবিচ্ছেদ্য জুটি গড়ে তুলেন জাকির হাসান। গত আসরের ছন্দ এই আসরেও যেন ধরে রেখেছেন তিনি। বরং বলা যায় আরো ধারালো, আরো শাণিত। মাত্র ৩২ বলে স্পর্শ করেন অর্ধশতক।
সেখানেই থামেননি জাকির। ইনিংসটাকে নিয়ে গেছেন ক্যারিয়ার সেরা উচ্চতায়। ক্যারিয়ারের তৃতীয় বিপিএল অর্ধশতককে নিয়ে গেছেন ৪৩ বলে ৭০ রানে। অপরাজিত থেকেই মাঠ ছাড়েন তিনি। ক্যাম্ফারকেও অবশ্য আউট করতে পারেনি, তিনি অপরাজিত ছিলেন ২০ বলে ২৬ রানে।