২০২ রান করেও সুপার ওভারে জিতল ভারত

টানা দুই ম্যাচ জিতে এক ম্যাচ হাতে রেখেই ভারতের ফাইনাল নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল, আর শ্রীলঙ্কার বিদায়ও চূড়ান্ত হয়েছিল। তাই এশিয়া কাপে সুপার ফোরের শেষ ম্যাচটি হয়ে দাঁড়ায় নিয়মরক্ষার লড়াই। তবে সেই ম্যাচই যেন টুর্নামেন্টের সবচেয়ে রোমাঞ্চকর লড়াই উপহার দিল। এই আসরে সর্বোচ্চ দলীয় রান ২০২ তুলেও ভারত সহজ জয় পায়নি। সমান রান করে ম্যাচ টাই করে শ্রীলঙ্কা, যা গড়ায় নাটকীয় সুপার ওভারে। শেষ পর্যন্ত সূর্যকুমার যাদবের দলই হাসল জয়ী হাসি।
দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ২০২ রানে সমতায় থামে উভয় দলের ইনিংস। সুপার ওভারে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ৪ বলে ২ রানের বিনিময়ে ২ উইকেট হারায় লঙ্কানরা। ফলে ভারতের দরকার হয় মাত্র ৩ রান। ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার করা প্রথম বলটি ছিল গুগলি। সেই ডেলিভারিতে কভার ড্রাইভ খেলে অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব শুভমান গিলকে সঙ্গে নিয়ে দৌড়ে নেন ৩ রান। এর মধ্য দিয়ে অপরাজেয় ভারত জায়গা করে নেয় ফাইনালে।
টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে যথারীতি ঝোড়ো শুরুর পথেই হাঁটছিল ভারত। তবে দলীয় ১৫ রানে আউট হয়ে যান গিল (৪)। তাতে অবশ্য কোনো সমস্যা হয়নি। পাওয়ার প্লেতে নিয়মমাফিক ঝড় তোলেন অভিষেক শর্মা। ফলে ভারত ১ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ৭১ রান জমা করে। খানিক বাদেই আউট অধিনায়ক সূর্যকুমার (১২), এদিনও তার বড় ইনিংস খেলা হয়নি। পাকিস্তানের বিপক্ষে গ্রুপপর্বের প্রথম ম্যাচে কেবল ৪৭ রান পেয়েছেন সূর্য। অভিষেক ফিরেছেন ৩১ বলে ৮ চার ও ২ ছক্কায় ৬১ রান করে।
বাংলাদেশের বিপক্ষে আগের ম্যাচে ব্যাটিংয়ের সুযোগ না পাওয়া সঞ্জু স্যামসন ও তিলক ভার্মা মিলে গড়েছেন ৬৬ রানের জুটি। ২৩ বলে ১ চার ও ৩ ছক্কায় ৩৯ রানে স্যামসন ফিরলেও, তিলক ৩৪ বলে ৪ চার ও এক ছক্কায় ৪৯ রানে অপরাজিত ছিলেন। শেষদিকে ১৫ বলে ২১ রানের ক্যামিও খেলেছেন অক্ষর প্যাটেল। যাতে ভর করে ভারত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ২০২ রান সংগ্রহ করে। লঙ্কানদের পক্ষে ৫ বোলারই একটি করে উইকেট শিকার করেন।
লক্ষ্য তাড়ায় নেমে চতুর্থ বলেই আউট অভিজ্ঞ ওপেনার কুশল মেন্ডিস। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে তিনি ডাক নিয়ে ফিরলেন। আরেক ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা এরপর কুশল পেরেরার সঙ্গে গড়েন ১২৭ রানের বড় জুটি। যা টি-টোয়েন্টির যেকোনো উইকেটে লঙ্কানদের তৃতীয় সর্বোচ্চ জুটি। ৩২ বলে ৮ চার ও এক ছক্কায় কুশল ৫৮ রানে ফিরলেও নিশাঙ্কা ছিলেন শেষ ওভার পর্যন্ত। আউট হওয়ার আগে এই তরুণ ওপেনার ব্যক্তিগত সেঞ্চুরি তুলে নেন। যা ফরম্যাটটিতে নিশাঙ্কার প্রথম এবং ভারতের বিপক্ষে যেকোনো লঙ্কান ব্যাটারের প্রথম টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরি।
এ ছাড়া টি-টোয়েন্টি এশিয়া কাপে এর আগে সেঞ্চুরি ছিল কেবল ভারতীয় তারকা বিরাট কোহলি ও হংকংয়ের বাবর হায়াতের। দুজনেই সমান ১২২ রান করলেও অপরাজিত ছিলেন কোহলি। সেঞ্চুরির তালিকায় তাদের সঙ্গে নাম যোগ করলেন নিশাঙ্কা। শ্রীলঙ্কাকে জয়ের পথে টেনে নিয়ে তিনি ফিরেছেন ১০৭ রানে। নিশাঙ্কা ৫৮ বলের ইনিংসটি সাজিয়েছেন ৭ চার ও ৬ ছক্কায়। এ ছাড়া ১১ বলে ২২ রানের ক্যামিও ইনিংস খেললেও, শেষ ওভারে ১২ রানের সমীকরণ মেলাতে পারেননি। ১১ রান তোলায় ভারতের সমান ২০২ রান হয় লঙ্কানদের।
এরপর ম্যাচ নিষ্পত্তি হয় সুপার ওভারে। ভারতের পক্ষে ৫ বোলার সমান একটি করে উইকেট নিয়েছেন। ফাইনালের আগে ম্যাচটিতে বিশ্রামে রাখা হয় প্রধান তারকা পেসার জাসপ্রিত বুমরাহকে। এ নিয়ে টি-টোয়েন্টিতে ৬ বার সুপার ওভার খেলে ৪টিতেই হেরেছে শ্রীলঙ্কা, বিপরীতে ভারত সুপার ওভারে ৬ ম্যাচ জিতেছে।