রাখাইনে দুর্ভিক্ষের আভাস; নতুন করে রোহিঙ্গা প্রবেশের শঙ্কা
মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে দুর্ভিক্ষের আভাস দিয়েছে জাতিসংঘ। এতে বাংলাদেশে নতুন করে রোহিঙ্গা ঢল নামার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলছেন, এর প্রভাব পড়তে পারে পুরো অঞ্চলে। এতে নিরাপত্তাও হুমকির মুখে পড়তে পারে। এ পরিস্থিতিতে ঢাকাকে সর্তক হতে বলছেন বিশ্লেষকেরা। এজন্য জাতিসংঘসহ আঞ্চলিক জোটের ওপর চাপ বাড়াতে তাগিদ দেওয়া কথা বলছেন তাঁরা।
জাতিসংঘ শঙ্কা জানিয়েছে, মিয়ানমারের রাখাইনে চরম দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে। ইউএনডিপির প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, রাখাইনে বীজ ও সার সংকট দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতি না বদলালে মার্চ-এপ্রিল নাগাদ, চাহিদার তুলনায় উৎপাদন ৮০ শতাংশ কম হতে পারে। এতে ২০ লাখের বেশি মানুষ অনাহারে ভুগতে পারে।
এমন অবস্থায় নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের শঙ্কা দেখছে ঢাকা। এরই মধ্যে নেপিদোকে উদ্বেগও জানানো হয়েছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এখন আর মানবিক হওয়ার সুযোগ নেই।
রোহিঙ্গা ঢল নামার আশঙ্কা করে অভিবাসন বিশেষজ্ঞ আসিফ মুনীর বলেন, ‘যদি নতুন করে একটা ইনফ্লাক্স (মানুষের ঢল) হয়, সে ক্ষেত্রে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা যে পক্ষেরই থেকে থাকুক না কেন, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সেটি মোকাবিলার জন্য কিন্তু আইনশৃঙ্খলার ক্ষেত্রেও আরেকটি নতুন সংকট তৈরি হতে পারে। আঞ্চলিকভাবেও সেটার একটা সম্ভাবনা থাকতে পারে।’
আন্তর্জাতিক সর্ম্পক বিশ্লেষক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘কোনো দেশে যদি ফ্যামিন (দুর্ভিক্ষ) হয়ে থাকে তাহলে, সেটি সেই দেশের রীতিমতো দায়িত্ব। সেই হিসেবে যারা মিয়ানমার সরকারের সাথে সম্পর্ক রাখেন, ব্যবসা বাণিজ্য করেন, তাদের এটা বড় দায়িত্ব বলে আমি মনে করি।’
বিপর্যয় মোকাবিলায় ঢাকাকে কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়ানোর পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের। বলছেন, মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টির একটি সুযোগ তৈরি হয়েছে।
আন্তর্জাতিক সর্ম্পক বিশ্লেষক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘বড় একটা সুযোগও কিন্তু তৈরি হয় মিয়ানমার সরকার এবং আরাকান আর্মি, যারা মূলত আরাকানের শতকরা ৭০ ভাগের মতো ক্ষমতা তাদেরই হাতে বলা হয়, তাদের সাথেও নেগোসিয়েশনে বসা।’
অভিবাসন বিশেষজ্ঞ আসিফ মুনীর বলেন, ‘কূটনৈতিক আলাপ আলোচনা অথ্যাৎ বহুমূখী আলোচনা যেমন জাতিসংঘে একটা, নিউইয়র্ক জেনেভায় একটা। রোহিঙ্গা বিষয়ে দুটো দিক থেকে আসিয়ানকে উদ্বুদ্ধ করা যায়।’
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের সুনির্দিষ্ট উপায় বের করতে যোগ্য একজনকে দায়িত্ব দেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন বিশ্লেষকেরা।