ফেনীতে ১৫ গ্রাম প্লাবিত

নিজস্ব প্রতিবেদক
জার্নাল ডেস্ক জার্নাল ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৮:৪৭ AM

ফেনীতে টানা ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে পরশুরাম উপজেলার মুহুরী, সিলোনিয়া ও কহুয়া নদীর বেড়িবাঁধে অন্তত ১০টি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে অন্তত ১৫টি গ্রাম পানিতে প্লাবিত হয়েছে।

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বিকেল থেকে মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে।

বন্যার পানিতে নিম্নাঞ্চল ডুবে যাওয়ায় ফসলি জমি, মাছের ঘের, রাস্তাঘাট ও ঘরবাড়িতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। উপজেলার অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

এদিকে উপজেলার ১৫টি গ্রামসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপজেলার সবকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভবনসমূহকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রত্যেকটি স্কুলে অন্তত একজন নৈশপ্রহরীকে সার্বক্ষণিক স্কুলের দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুরে পরশুরাম উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নে সিলোনিয়া নদীর মেলাঘর, গদানগর ও মনিপুর গ্রামে ৩টি স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে অন্তত ৬টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়াও চিথলিয় ইউনিয়নের মুহুরী নদীর ধনীকুন্ডা, জঙ্গলঘোনা, উত্তর শালধর ও অলকা গ্রামে বাঁধ ভেঙে ৬টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

অন্যদিকে বক্সমাহমুদ ইউনিয়নের চারিগ্রামে নদীর বাঁধ ভেঙে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর মুহুরী নদীর ফুলগাজীর সদর ইউনিয়নে দেড়পাড়া এলাকায় দুটি স্থানে ভাঙন দেখা দেয়।

এ ছাড়াও বেশ কয়েকটি স্থানে নদীর পানি বেড়িবাঁধ গড়িয়ে লোকালয়ে ঢুকছে। এতে নিম্নাঞ্চলসহ বিস্তীর্ণ এলাকা পানির নিচে তলিয়ে গেছে।

ফেনীর পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ‍্যমতে, পরশুরামের মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমা ১২ দশমিক ৯৬ মিটার প্রবাহিত হচ্ছে। এর আগে বিকেল ৩টায় ১২ দশমিক ২৬ মিটার উচ্চতায় পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছিল। বিকেল ৪টার পর থেকে মুহুরি নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে।

আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, সোমবার দুপুর ১২টা থেকে আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ফেনীতে ৪০৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। ফেনী উজানে ভারতের ত্রিপুরা ও ফেনীতে এখনো ভারী বর্ষণ হচ্ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের গ্রেজ রিডার নেপাল সাহা বলেন, মঙ্গলবার বিকেল ৪টার পর থেকে মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ৯৬ সেন্টিমিটার উপরে প্রবাহিত হচ্ছে।

ফেনীর জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, মুহুরী ও সিলোনিয়া নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থা রয়েছে। দুর্যোগকবলিত এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে জেলা প্রশাসনেন একটি টিম সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রয়েছে।