ওএসডি বা অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি কি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৩৯ AM

এই লিখাটি পড়লে ওএসডি বা অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি সম্পর্কে পুরো ধারণা পাওয়া যাবে। চলুন জেনে নিই

ওএসডি আসলে কী?
খাতা-কলমে ‘ওএসডি’ একটি বিশেষ ধরনের পোস্টিং বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

এর পূর্ণরূপ ‘অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি’ বা বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্রিটিশ শাসনামলে তৎকালীন ভারতীয় সিভিল সার্ভিসে ওএসডি’র বিধান চালু করা হয়, যার চর্চা পাকিস্তান আমলেও বলবৎ ছিল। অতীতের রীতি মেনে স্বাধীন বাংলাদেশেও সরকারি কর্মকর্তাদেরকে ওএসডি করার নিয়ম রাখা হয়।

বর্তমানে দেশটির সংস্থাপন বা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদেরকে ওএসডি করার বিধান রয়েছে। এর বাইরে, অন্য বিভাগ, সংস্থা বা মন্ত্রণালয়ের ক্ষেত্রে সংযুক্ত করার নিয়ম চালু আছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। প্রশাসনিক প্রয়োজনেই দেশ স্বাধীনের পর জনপ্রশাসনে ওএসডি বিধান রাখা হয়েছিল বলে জানাচ্ছেন সাবেক আমলারা।

“যেমন ধরেন, প্রাকৃতিক বা অন্য কোনো দুর্যোগের সময় বিশেষ কোনো দায়িত্ব পালন করতে হবে। তখন নিয়মিত দায়িত্বের একজন কর্মকর্তাকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা ওএসডি করে সেই কাজে নিয়োজিত করা হয়,” বলেন সাবেক সচিব আবু আলম মো. শহীদ খান। এছাড়া দুর্যোগকালীন সময়ে অনেক সময় কর্মকর্তাদের ওএসডি করে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়। 

যেসব কারণে ওএসডি
বিশেষ দায়িত্বের বাইরেও আরও বেশ কিছু প্রশাসনিক প্রয়োজনে ওএসডি করা হয়ে থাকে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে, দীর্ঘমেয়াদে প্রশিক্ষণ বা ছুটিতে যাওয়া। চাকরিরত অবস্থায় কর্মকর্তাদের মধ্যে কেউ টানা তিন মাসের বেশি সময়ের জন্য প্রশিক্ষণ, উচ্চশিক্ষায় বিদেশ গমন, অসুস্থতা বা চিকিৎসাজনিত কারণে ছুটি নিতে চাইলে তাকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা করে রাখা হয়।

“প্রশিক্ষণ বা ছুটিতে থাকাকালে তাদের বেতন-ভাতা যেন বন্ধ না হয়, সেজন্যই এটি করার প্রয়োজন পড়ে,” বলেন সাবেক সচিব আবু আলম মো. শহীদ খান। একই কারণে পদোন্নতি পাওয়ার পর একজন কর্মকর্তাকে তার নতুন পদে পদায়ন হওয়ার আগ পর্যন্ত সময়ে ওএসডি করে রাখা হয়ে থাকে।

এছাড়া কর্মকর্তাদের মধ্যে কেউ প্রেষণে অন্য কোনো বিভাগ বা প্রতিষ্ঠানে গেলে কিংবা অন্য কোনো বিভাগে সংযুক্ত থাকা কর্মকর্তাকে সেখান থেকে অবসর দেওয়ার সময় ওএসডি করার প্রয়োজন হয় বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

এর বাইরে, কর্মকর্তাদের কারও বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতি বা শৃঙ্খলাভঙ্গের মতো কোনো অভিযোগ উঠলে সেটির তদন্ত চলাকালে অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে ওএসডি করে রাখার বিধান রয়েছে।

সরকারি কোনো কর্মকর্তাকে ১৫০ দিনের বেশি ওএসডি রাখা যাবে না বলে হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়েছে “প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবেই এটি করা হয়ে থাকে যেন অভিযুক্ত কর্মকর্তা তার পদে বসে আগের মতোই অনিয়ম-দুর্নীতি চালিয়ে যেতে না পারেন,” বলেন জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সচিব ও বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএএসএ) আহ্বায়ক ড. মো. আনোয়ার উল্ল্যাহ।

“এছাড়া ক্ষমতার অপব্যবহার করে অভিযুক্ত কর্মকর্তা যেন কোনোভাবে তদন্তকাজে বাধা সৃষ্টি করতে না পারেন, সেটিও তাকে ওএসডি করার আরেকটি উদ্দেশ্য,” বলেন মি. উল্ল্যাহ।

তবে সরকার চাইলে এসবের বাইরেও যেকোনো কর্মকর্তাকে ওএসডি করতে পারে।

“এক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ দেখানোর প্রয়োজন পড়ে না। জনস্বার্থে করা হয়েছে বলে অনেক সময় প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়ে থাকে,” বলেন সাবেক অতিরিক্ত সচিব মো. মাহবুব কবির মিলন।

এ ধরনের ওএসডি করা পেছনে অনেক সময় রাজনৈতিক উদ্দেশ্যও কাজ করে বলে জানিয়েছেন বর্তমান ও সাবেক আমলারা। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে প্রশাসনে দলীয়করণের অভিযোগ রয়েছে যাকে বলা হয় রাজনৈতিক ওএসডি। প্রশাসনিক প্রয়োজনীয়তার বাইরে বাংলাদেশে রাজনৈতিক বিবেচনায় সরকারি কর্মকর্তাদেরকে ওএসডি করার নজির রয়েছে বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

“বিশেষ করে গত তিন দশকে যেহারে রাজনৈতিক বিবেচনায় অযৌক্তিতভাবে ওএসডির ঘটনা ঘটেছে, সেটি বেশ উদ্বেগজনক,” বলেন সাবেক সচিব আবু আলম মো. শহীদ খান।

মূলত ১৯৯৬ সালের একটি ঘটনা রাজনৈতিক বিবেচনায় ওএসডি’র সংখ্যা বাড়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করেন বর্তমান ও সাবেক আমলারা।

ওই বছর বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপি পুনরায় রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসার পর তাদের পদত্যাগের দাবিতে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ঢাকায় ‘জনতার মঞ্চ’ তৈরি করা হয়, যেখানে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিরাও অংশ নেন।

“ওই ঘটনার পর কর্মকর্তাদের অনেকের রাজনৈতিক পরিচয় সামনে চলে আসে এবং তাদের অনেকে পরবর্তীতে বিএনপি সরকারের সময় ওএসডি হন,” বলেন বিএএসএ’র আহ্বায়ক ও সচিব মো. আনোয়ার উল্ল্যাহ।

একইভাবে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর বিএনপি শাসনামলে পদোন্নতি পাওয়া অনেক কর্মকর্তাকে ওএসডি করা হয়। এমনকি সম্প্রতি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পরেও একইভাবে শেখ হাসিনার শাসনামলে নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তাদের অনেকে ওএসডি হয়েছেন।

জনপ্রশাসন, নৌপরিবহনসহ বেশকিছু মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিবকেও ওএসডি’র সেই তালিকায় দেখা গেছে। কিছুক্ষেত্রে আন্দোলন-বিক্ষোভের মুখেও আগের কিছু কর্মকর্তাকে দায়িত্ব থেকে সরাতে দেখা গেছে।

“আওয়ামী লীগ আমলে প্রশাসনে দলীয়করণ ও রাজনৈতিক বিবেচনায় পদায়ন-পদোন্নতি দেওয়ার কারণেই এসব ঘটনা ঘটেছে,” বলেন মি. উল্ল্যাহ।

অন্যদিকে, রাজনৈতিক সরকারের সময় কেউ কেউ মন্ত্রী-এমপিদের কথা না শুনে নিয়ম মেনে কাজ করতে গিয়ে ওএসডি হয়েছেন, তেমন অভিযোগও আছে।

“আমি নিজেই এর ভুক্তভোগী,” বলছিলেন সাবেক অতিরিক্ত সচিব মি. কবির।

বিষয়টি আরেকটু ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, “রেলের নিয়োগের ক্ষেত্রে তৎকালীন মন্ত্রী প্রভাব খাটাতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তার কথা না শুনে আমি নিয়ম মেনে কাজ করেছি। এ ঘটনার পরেই আমাকে ওএসডি করা হয়।”

২০২০ সালে মি. মিলন যখন ওএসডি হন, তখন রেলমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা নূরুল ইসলাম সুজন।

শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর সম্প্রতি এক হত্যা মামলায় তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ফলে অভিযোগের বিষয়ে মি. সুজনের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

তবে বাংলাদেশের বাস্তবতায় এমন ঘটনা অসম্ভব কিছু নয় বলে জানাচ্ছেন সাবেক সচিব আবু আলম মো. শহীদ খান।

“মন্ত্রীর কথা না শুনলে বদলি বা ওএসডি করার নজির আছে বলেই কর্মকর্তারা অনেক সময় স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারেন না। আবার পদোন্নতি-পদায়নের লোভেও অনেকে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে ক্ষমতাসীনদের পক্ষে কাজ করে থাকেন,” বলছিলেন মি. খান।

ওএসডি কর্মকর্তারা কী করেন?

নামের শেষে ‘বিশেষ ভারপ্রাপ্ত’ থাকলেও ওএসডি হওয়া কর্মকর্তাদের বেশিরভাগেরই আদতে কোনো ভারই বহন করতে হয় না বলে জানাচ্ছেন সাবেক কর্মকর্তারা।

“প্রশিক্ষণ, ছুটি ও সংকটকালে বিশেষ দায়িত্বের বাইরে যারা ওএসডি হন, তাদের সেভাবে কোনো কাজই থাকে না। বসে বসে বেতন-ভাতা ভোগ করেন,” বলছিলেন সাবেক সচিব আবু আলম মো. শহীদ খান। তবে কাজ না থাকলেও নিয়মিত কার্যালয় তথা সচিবালয়ে গিয়ে হাজিরা দিতে হয় কর্মকর্তাদের।

“দায়িত্ব না থাকায় সেখানে তাদের জন্য কোনো কক্ষ বা চেয়ার-টেবিল বরাদ্দ থাকে না। ফলে তাদেরকে লাইব্রেরিতে বসতে হয় এবং সেখানে রাখা হাজিরা খাতায় সই করতে হয়,” বলেন বিএএসএ’র আহ্বায়ক ও সচিব ড. মো. আনোয়ার উল্ল্যাহ।

খাতা-কলমে হাজিরা দেওয়ার নিয়ম থাকলেও উচ্চপদের কর্মকর্তাদের বেশিরভাগই সেটি অনুসরণ করেন না বলে জানা যাচ্ছে।

“ওএসডি থাকা অবস্থায় সাধারণত যুগ্ম-সচিব বা তার উপরের পদ মর্যাদার কোনো কর্মকর্তা সেভাবে আর অফিস করেন না। কারণ গিয়ে তারা কী করবেন? কোথায় বসবেন?,” বলছিলেন সাবেক অতিরিক্ত সচিব মো. মাহবুব কবির মিলন। ওএসডি থাকা অবস্থায় মি. মিলন নিজেও খুব একটা কার্যালয়ে যাননি।

“সচিবালয়ে গিয়ে লাইব্রেরিতে অফিস করাটা একজন কর্মকর্তার জন্য খুবই অবমাননাকর। বিশেষ করে, যখন গুরুতর কোনো অপরাধ না করেও তাকে ওএসডির শিকার হতে হয়,” বলেন মি. কবির।

অন্যদিকে, যুগ্ম সচিবের নিচের পদ মর্যাদার কর্মকর্তাদের মধ্যেও অনেকে নিয়মিত অফিস করেন না বলে জানাচ্ছেন বর্তমান কর্মকর্তারা।

“যেহেতু কাজ নেই, সেজন্য তারাও অফিসে আসার ব্যাপারে খুব একটা আগ্রহ দেখান না। তবে হাজিরা যেন ঠিক থাকে, সেজন্য সপ্তাহে একদিন এসে বাকি দিনগুলোর জায়গাতেও সই করে চলে গেছেন- এমন ঘটনাও আমরা শুনেছি,” বলছিলেন বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক মি. উল্ল্যাহ।

আর যারা অফিসে যান, তাদের সময় কাটে অলস বসে থেকে।

“অনেকে গল্প-গুজব করে সময় কাটান। কেউ হয়তো বইপত্র নেড়ে-চেড়ে দেখেন। কোনো কাজ নেই কী করবে?” বলেন মি. উল্ল্যাহ।

এদিকে ওএসডি হওয়ার পরও নিয়মিত বেতন-ভাতাসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেন কর্মকর্তারা

মেধা ও অর্থের অপচয়
ওএসডি হওয়ার পর কর্মকর্তারা কোনো কাজ না করলেও তাতে বেতন-ভাতা আটকে থাকে না। পদ অনুযায়ী আগের মতোই বেতন-বোনাস, গাড়ি-বাড়িসহ যাবতীয় সুযোগ—সুবিধা ভোগ করেন বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

“কাজে না লাগিয়ে সরকারের কর্মকর্তাদের এভাবে বসিয়ে বসিয়ে বেতন-বোনাস দেওয়াটা জনগণের করের টাকার অপচয় ছাড়া আর কিছুই নয়,” বলেন সাবেক সচিব আবু আলম মো. শহীদ খান।

২০১৩ সালে হাইকোর্টে জমা দেওয়া জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, তার আগের নয় বছরে ওএসডি কর্মকর্তার সংখ্যা ছিল প্রায় তিন হাজার ছয়শ জন।

ওই নয় বছরে তাদের বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বাবদ সরকারের ব্যয় হয়েছিল প্রায় ১৫১ কোটি টাকা।

এর মধ্যে মুনির হোসেন নামে পুলিশের এক কর্মকর্তাকে প্রায় ১১ বছর ওএসডি রাখার পর ২০২২ সালে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়, যা দেশের ইতিহাসে একটি নজিরবিহীন ঘটনা বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

“দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালনের পর এভাবে চাকরি থেকে বিদায় নেওয়াটা যে কতটা কষ্টের এবং অসম্মানের, সেটা বলে বোঝানো সম্ভব না,” বলছিলেন সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবির মিলন।

বছরের পর বছর ধরে কর্মকর্তাদের ওএসডি রাখা বন্ধ করতে ২০১২ সালে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন সাবেক সচিব আসাফ উদ-দৌলা, যার রায় প্রকাশিত হয় ২০২০ সালে।

হাইকোর্টের সেই রায়ে বলা হয় যে, সরকারি কোনো কর্মকর্তাকে ১৫০ দিনের বেশি ওএসডি রাখা যাবে না। এরপর গত তিন বছরে ওএসডি কর্মকর্তার সংখ্যা অনেকাংশে কমে এসেছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

বর্তমানে ঠিক কতজন কর্মকর্তা ওএসডি আছেন, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে না পারলেও সংখ্যাটি একশর কিছু বেশি হতে পারে বলে ধারণা দিয়েছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

এদিকে, সরকারি কর্মচারী ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির (জিইএমএস) ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, বর্তমানে ওএসডি থাকা কর্মকর্তাদের মধ্যে কমপক্ষে ১৬ জন সচিব ও জ্যেষ্ঠ সচিবের নাম রয়েছে।

শীর্ষ এসব কর্মকর্তাদের অনেকেই ওএসডি হয়েছেন শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর। ওই তালিকায় আরও প্রায় অর্ধশত জন অতিরিক্ত সচিবের নাম দেখা গেছে।

“ওএসডি হওয়া কর্মকর্তাদের মধ্যে যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে, তাদের বিষয়ে দ্রুত তদন্ত শেষ করা উচিৎ বলে আমি মনে করি,” বলছিলেন বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনে’র (বিএএসএ) আহ্বায়ক ড. মো. আনোয়ার উল্ল্যাহ।

“সেখানে কেউ দোষী প্রমাণিত হলে ওএসডি করে না রেখে বরং তাকে বরখাস্ত বা অন্য কোনো বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ। তা না হলে জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি হয়,” বলেন মি. উল্ল্যাহ।

তারপরও প্রশাসনিক প্রয়োজনে কোনো কর্মকর্তাকে ওএসডি করার প্রয়োজন পড়লে তাকে বেকার বসিয়ে না রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন বর্তমান ও সাবেক আমলারা।

“বেকার বসিয়ে রাখলে কর্মকর্তাদের দক্ষতা কমে যায় এবং মনে দুঃখ-হতাশা দানা বাঁধে। সে কারণে তাদেরকে অলস বসিয়ে না রেখে তাদের দক্ষতাকে কাজে লাগানোই ভালো সমাধান হতে পারে,” বলেন মি. উল্ল্যাহ।

এক্ষেত্রে কর্মকর্তাদেরকে প্রশিক্ষণ, গবেষণাসহ অন্যান্য সরকারি কাজে লাগানো যেতে পারে বলে মনে করেন সাবেক অতিরিক্ত সচিব মো. মাহবুব কবির মিলন।

“এতে কর্মকর্তাদের মেধা এবং জনগণের করের টাকা- উভয়েরই অপচয় রোধ করা সম্ভব হবে,” 

 

তথ্য উৎস: বিবিসি বাংলা/সুতা