ছিনতাইকারীদের হাতে প্রাণ গেলো কিডনি দিয়ে স্বামীকে বাঁচানো ববিতার
স্বামী ছিলেন অসুস্থ। দুটো কিডনিই অকেজো। তাই নিজের একটি কিডনি দিয়ে মৃত্যুপথযাত্রী স্বামীর প্রাণ বাঁচিয়েছিলেন ববিতা আক্তার (৩৭) নামে এক গৃহবধু। তবে এর ৬ মাসের মাথায় ছিনতাইকারীদের কবলে পড়ে পরপারে পাড়ি জমালেন ববিতা।
জানা যায়, গত ১৫ এপ্রিল আশুলিয়ার পলাশবাড়ি এলাকায় নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কে চলন্ত রিকশায় ছিনতাইকারীদের হামলায় আহত হওয়ার ৬ দিন পর সাভারের এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে সোমবার (২২ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১টার দিকে তিনি মারা যান। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকাল ১১টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ইনচার্জ মো. ইউসুফ আলী।
ববিতা আক্তার আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকার নাদিম মন্ডলের স্ত্রী।
এরআগে গত ১৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় তার কলেজ পড়ুয়া ছেলে সাজু মন্ডল ও তিন বছর বয়সী কন্যা নুসরাতকে নিয়ে বাইপাইলের নিজ বাসা থেকে ফুচকা খেতে আশুলিয়ার পল্লী বিদ্যুৎ এলাকায় যান। সেখান থেকে রিকশাযোগে বাসায় ফেরার পথে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের পলাশবাড়ী এলাকার হাবিব পাম্পের কাছে পৌঁছালে মোটরসাইকেলে করে ছিনতাইকারীরা এসে ববিতার হাতে থাকা ব্যাগ ও গলায় থাকা স্বর্ণের চেইন টেনে নেওয়ার চেষ্টা করে। এসময় ছিনতাইকারীদের টানা-হেচড়ায় ববিতা চলতি রিকশা থেকে মহাসড়কে পড়ে যান। এতে তিনি মাথায় মারাত্মকভাবে আঘাত পান এবং সংজ্ঞাহীন হয়ে পরেন।
পরে আহত অবস্থায় ববিতাকে উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী একটি ক্লিনিকে ভর্তি করা হলে অবস্থার অবনতি দেখে সাভারের এনাম মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তাকে অস্ত্রোপচার শেষে নিউরো নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিউতে) রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল।
এ বিষয়ে আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মিলন ফকির জানান, ঘটনার পর ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূর দেবর মো. কাদের হৃদয় বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় একটি ছিনতাই মামলা দায়ের করেছেন। এরপর ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ওসমান গনী (২৩) নামে এক ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।