মাউন্ট এভারেস্ট অভিযানে নতুন শর্ত নেপালের

এভারেস্ট অভিযানে অতিরিক্ত ভিড় ও দুর্ঘটনা কমাতে নতুন নিয়ম আনতে যাচ্ছে নেপাল সরকার। প্রস্তাবিত নিয়ম অনুযায়ী, বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গে ওঠার আগে অভিযাত্রীদের অবশ্যই নেপালের অন্তত একটি ৭ হাজার মিটারের বেশি উচ্চতার পর্বত জয় করার প্রমাণ দিতে হবে। এ পদক্ষেপের মূল উদ্দেশ্য হলো—নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, দুর্ঘটনার ঝুঁকি হ্রাস করা এবং এভারেস্টে অনিয়ন্ত্রিত ভিড় কমানো।
নেপালে প্রতিবছর হাজার হাজার বিদেশি পর্যটক ভ্রমণ করেন। তাঁদের অনেকে জীবনের প্রথম অভিযানে সরাসরি এভারেস্টে ওঠার চেষ্টা করেন। ফলে প্রতিবছর চূড়ার কাছে ‘ডেথ জোনে’ বিপজ্জনক জটলা সৃষ্টি হয়। ২০২৩ সালে ৪৭৮টি এভারেস্ট পারমিট দেওয়া হয়।
সে বছর অন্তত ১২ অভিযাত্রী প্রাণ হারান এবং আরও ৫ জন নিখোঁজ হন।
নতুন খসড়া আইন অনুযায়ী, এভারেস্টের চূড়ায় ওঠার অনুমতি তখনই মিলবে, যখন অভিযাত্রীরা প্রমাণ করতে পারবেন যে তিনি বা তাঁরা এরই মধ্যে নেপালের অন্তত একটি ৭ হাজার মিটার কিংবা তার চেয়ে বেশি উচ্চতার পর্বতে সফল অভিযান করেছেন। এ ছাড়া অভিযাত্রীর সঙ্গে থাকা দলের প্রধান ও গাইডকে অবশ্যই নেপালের নাগরিক হতে হবে।
তবে আন্তর্জাতিক পর্বতারোহণ সংস্থাগুলো এই নিয়ম বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছে। তারা দাবি করছে, শর্ত শুধু নেপালের ৭ হাজার মিটারের পর্বতের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা যৌক্তিক নয়। এর বদলে বিশ্বের অন্যান্য জনপ্রিয় উচ্চ পর্বত, যেমন আমা দাবলাম, আকোনকাগুয়া, ডেনালি ইত্যাদির অভিজ্ঞতাও গণ্য হওয়া উচিত। তাদের মতে, এই পর্বতগুলো দীর্ঘদিন ধরে এভারেস্ট অভিযানের প্রস্তুতিমূলক চূড়া হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
আরেকটি বিতর্কিত বিষয় হলো গাইড নিয়োগ। আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলো বলছে, নেপালে যথেষ্টসংখ্যক আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন গাইড নেই। তাই বিদেশি অভিজ্ঞ গাইডদের অংশ নেওয়ার অনুমতি দেওয়া উচিত।
নতুন এই আইন নেপালের সংসদে ইতিমধ্যে উত্থাপিত হয়েছে এবং শাসক জোটের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় তা পাস হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। আইনটি বাস্তবায়িত হলে এটি এভারেস্ট অভিযানে নতুন মানদণ্ড তৈরি করবে; যেখানে শুধু অভিজ্ঞ ও প্রস্তুত অভিযাত্রীরাই পাবেন চূড়ায় ওঠার সুযোগ।
এই আইনে পর্বতারোহীদের এভারেস্ট অভিযানের আগে নিজেদের অভিজ্ঞতা তৈরি করার ঘোষণা আছে। নেপালের একটি ৭ হাজার মিটারের চূড়ায় পা রাখলেই খুলবে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গে আরোহণের দরজা।
সূত্র: সিএনএন