নিরাপত্তা ঝুঁকিতে সাইবার সেবা
নিম্নমানের ওয়েবসাইট: নানা কারণে ঝুঁকিতে রয়েছে সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা
নিম্নমানের ওয়েবসাইট তৈরিসহ নানা কারণে ঝুঁকিতে রয়েছে সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এছাড়া সাইবার নিরাপত্তা দুর্বল হওয়ার পেছনে রয়েছে, নিয়মিত ওয়েবসাইট মনিটরিং না করা, পাসওয়ার্ড আদান প্রদান ও সাইবার অডিট না হওয়া। এসব দুর্বলতার কারণে প্রায়ই তথ্য ফাঁসের ঘটনা ঘটছে। তথ্য ফাঁস ঠেকাতে সব সরকারি দপ্তরের প্রতি কড়া নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই জাতীয় পরিচয়পত্র বিভাগ 'ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম' গঠন করেছে। প্রতিটি সরকারি দপ্তরে সাইবার নিরাপত্তায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাইবার বিভাগের নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, দেশের প্রযুক্তি খাত নিয়ে রীতিমতো সাইবার যুদ্ধ চলছে। এই যুদ্ধ বা প্রতিযোগিতা চলছে দেশের কয়েকটি বড় কোম্পানির সঙ্গে। আর সেই যুদ্ধে নেমেছে দেশি-বিদেশি অপেক্ষাকৃত বেশ কিছু ছোট ছোট কোম্পানি এবং একাধিক উগ্রপন্থি হ্যাকার গ্রম্নপ। কারণ বাংলাদেশের সরকারি প্রায় সব দপ্তর নিয়ন্ত্রণ করছে অন্তত ১০টি টেক জায়ান্ট কোম্পানি। কোম্পানিগুলো সরকারি দপ্তরগুলোতে ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট থেকে শুরু করে সব ধরনের কাজ করছে। দেশীয় অন্যান্য কোম্পানি কোনো ধরনের সুযোগ পাচ্ছে না। বড় কোম্পানিগুলোকে এমন সুযোগ করে দেওয়ার পেছনে রয়েছেন সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর কিছু অসাধু কর্মকর্তা। তারা এসব কোম্পানির কাছ থেকে নানাভাবে সুবিধা পেয়ে থাকেন বলে অভিযোগ আছে।
দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, একটি ওয়েবসাইট ৫ হাজার থেকে শুরু করে ৫ লাখ টাকা বা তার চেয়েও বেশি টাকায় তৈরি করা যায়। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে বড় বড় কোম্পানিগুলো কম টাকায় ওয়েবসাইট নির্মাণ করে দিচ্ছে।
অথচ দেখানো হচ্ছে, বেশি টাকা। এসব টাকার একটি বড় অংশ চলে যাচ্ছে সংশ্লিষ্ট অসাধু কর্মকর্তাদের পকেটে। এছাড়া কোম্পানিগুলো নিজেদের যতটা বড় বলে প্রচার করছে, প্রকৃতপক্ষে সেগুলো ওই রকম বড় মানের বা উচ্চমানসম্পন্ন কোম্পানি নয়। কোনো কোনো কোম্পানির সাইবার সিকিউরিটি দেওয়ার মতো সক্ষমতা নেই। এমনকি ওইসব কোম্পানির সাইবার সিকিউরিটি দেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে সনদপ্রাপ্তও না। ফলে প্রায়ই সরকারি বিভিন্ন দপ্তর থেকে তথ্য ফাঁসের ঘটনা ঘটছে।
এসব বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওয়েবসাইট ডেভেলপ এবং সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কাজে জড়িত অক্টাগ্রাম লিমিটেড কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হাসান শাহরিয়ার ফাহিম যায়যায়দিনকে বলেন, সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে ডিজিটাল নিরাপত্তা বা সাইবার সিকিউরিটি নিয়ে কাজ করছি। তথ্য ফাঁস হওয়ার অন্যতম কারণ নিম্নমানের ওয়েবসাইট। নিম্নমানের ওয়েবসাইট তৈরি করার কারণে তার নিরাপত্তা ব্যবস্থাও থাকে নিম্নমানের। এমন সুযোগে হ্যাকাররা ওইসব দপ্তরের তথ্য ফাঁস করে নিয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও সরকারি দপ্তরের অসাধু কর্মকর্তারাও অনেক সময় ব্যক্তিগত স্বার্থের কারণে বা অসৎ উদ্দেশ্যে তথ্য ফাঁসে সহায়তা করছেন বা তথ্য ফাঁস করে দিচ্ছেন।