টিকটকে যুক্ত হলো হোয়াইট হাউজ

টিকটকে যোগ দিয়েছে হোয়াইট হাউজ। মার্কিন প্রেসিডেন্টের সরকারি অফিস ও বাসভবন হোয়াইট হাউজ গত মঙ্গলবার টিকটকে তাঁদের অফিশিয়াল অ্যাকাউন্ট খুলেছে। হোয়াইট হাউজ চাইছে, ১৭ কোটি আমেরিকান ব্যবহারকারীর এই প্ল্যাটফর্মটিকে কাজে লাগিয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বার্তা আরও বেশি মানুষের কাছে পৌছে দিতে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ‘অ্যাট হোয়াইট হাউজ’ (@whitehouse) নামের অ্যাকাউন্টটিতে প্রথম একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়। ভিডিওতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি আপনাদের কণ্ঠস্বর’ (আই অ্যাম ইওর ভয়েজ)। ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা ছিল: ‘আমেরিকা, আমরা ফিরে এসেছি! কী খবর টিকটক।’
সাম্প্রতিক সময়ে টিকটক প্ল্যাটফর্মটির সাথে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বেশ সখ্যতা গড়ে উঠেছে। গত বছর নির্বাচনী প্রচারণায় টিকটককে কার্যকরভাবে ব্যবহার করেছেন ট্রাম্প। বিশেষ করে আমেরিকার তরুণ ভোটারদের কাছে ট্রাম্পের নির্বাচনী বার্তা পৌঁছে দিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে এই সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম। গত নভেম্বরে নির্বাচনে বিজয়ের পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজেও তা স্বীকার করেছেন।
জানুয়ারিতে শপথ গ্রহণের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজের দ্বিতীয় মেয়াদ শুরু করার পর ট্রাম্প তার প্রতিদানও দিয়েছেন। চীনের বাইটড্যান্সের মালিকানাধীন টিকটকের ওপর আমেরিকায় গত বছর থেকেই ঝুলছে নিষেধাজ্ঞার খড়গ। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইতোমধ্যেই টিকটকের নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের সময়সীমা পর পর তিন বার পিছিয়ে দিয়েছেন। এতে করে প্ল্যাটফর্মটির আমেরিকা অংশের ব্যবসায়ের নিয়ন্ত্রণ কোনো আমেরিকান ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছে হস্তান্তরের জন্য অতিরিক্ত সময় পেয়েছে বাইটড্যান্স।
উল্লেখ্য, বাইডেন সরকার প্রণীত জাতীয় নিরাপত্তা সম্পর্কিত এক আইনে গত বছর থেকেই নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ে প্ল্যাটফর্মটি। নিষেধাজ্ঞা এড়াতে বাইটড্যান্সকে টিকটকের আমেরিকা অংশের ব্যবসায়ের নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দিতে হবে আমেরিকান কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের হাতে, যেটা তাঁরা এখনও করে উঠতে পারেনি। যদিও টিকটকের জন্য ক্রেতা পাওয়া গেছে বলে সম্প্রতি দাবি করেছেন ট্রাম্প নিজেই। তবে টিকটক বিক্রির যেকোনো চুক্তিতে অনুমোদন লাগবে চীন সরকারের, তবে তা কার্যকর হবে।
গত বছর নির্বাচনী প্রচারণায় ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘অ্যাট রিয়ালডোনাল্ডট্রাম্প’ (@realdonaldtrump) নামের একটি টিকটক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেন। এই অ্যাকাউন্টটিতে তাঁর ১৫ মিলিয়ন অনুসারী (ফলোয়ার) রয়েছে। টিকটকের পাশাপাশি ট্রাম্প তাঁর নিজের মালিকানাধীন সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যাল এবং এক্স প্ল্যাটফর্মও ব্যবহার করে থাকেন। তবে নিজের ট্রুথ সোশ্যাল অ্যাকাউন্টেই সবচেয়ে বেশি সক্রিয় থাকেন তিনি।
হোয়াটস হাউজ আনুষ্ঠানিকভাবে টিকটকে যোগ দেওয়ায় আইনপ্রণেতাদের অনেকেই অবশ্য উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। প্ল্যাটফর্মটির মাধ্যমে আমেরিকান ব্যবহারকারীদের ডেটা অ্যাক্সেস করার সুযোগ পেতে পারে চীন সরকার। তাঁদের উদ্বেগের উৎসটা এখানেই।
সূত্র: রয়টার্স