ভারত নির্ভরতা বাড়ছে অ্যাপলের

নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক জার্নাল আন্তর্জাতিক জার্নাল
প্রকাশিত: ১৭ জুন ২০২৫, ০৯:১৬ AM

এপ্রিলের শুরুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক (রিসিপ্রোকাল ট্যারিফ) ঘোষণার পর আমেরিকান প্রতিষ্ঠানগুলোর সরবরাহ ব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তন দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে অ্যাপলের ফ্ল্যাগশিপ পণ্য আইফোনের সরবরাহ চেইনে।

গত ১৩ জুন প্রকাশিত রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

রয়টার্সের প্রতিবেদন বলছে, চলতি বছর আমেরিকার বাজারে ভারতে তৈরি আইফোনের রপ্তানি প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। চীন-মার্কিন শুল্ক যুদ্ধের প্রভাবে অ্যাপল তাঁদের আইফোনের উৎপাদন চীন থেকে ভারতে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। 

বিশেষ করে চীনের ওপর ট্রাম্প প্রশাসনের আরোপিত উচ্চ শুল্কহার এড়াতে ভারতে আইফোনের উৎপাদন উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি করেছে অ্যাপল। প্রতিষ্ঠানটির লক্ষ্য, ভারতে তৈরি আইফোন আমদানি করেই আমেরিকার স্থানীয় চাহিদা মেটাবে তাঁরা। আর এই লক্ষ্য অনুযায়ীই কাজ করছে ভারতে আইফোনের দুই সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান- ফক্সকন ও টাকা ইলেকট্রনিক্স। 

ভারতের শুল্ক বিভাগ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে রয়টার্স জানাচ্ছে, চলতি বছর ভারতে তৈরি আইফোনের সিংহভাগই রপ্তানি করা হয়েছে আমেরিকায়। এ বছর মার্চ থেকে মে পর্যন্ত সময়ে ফক্সকন ৩ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার সমমূল্যের আইফোন বিদেশে রপ্তানি করেছে, যার ৯৭ শতাংশই গেছে মার্কিন মুলুকে। অথচ গত বছর ফক্সকনের রপ্তানিকৃত আইফোনের অর্ধেকই (৫০ দশমিক ৩ শতাংশ) বিক্রি হয়েছিল আমেরিকার বাজারে।

উল্লেখ্য, এ বছর মার্চে ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলারের আইফোন আমেরিকায় রপ্তানির পর গত মাসে (অর্থাৎ মে মাসে) প্রায় ১ বিলিয়ন ডলারের আইফোন দেশটিতে রপ্তানি করেছে ফক্সকন। তবে শুধু ফক্সকনই নয়, টাটা ইলেকট্রনিক্সের তৈরি আইফোনের ক্ষেত্রেও সবচেয়ে বড় রপ্তানি বাজার হয়ে উঠেছে আমেরিকা।

ভারতের শুল্ক বিভাগের বরাতে রয়টার্স বলছে, এ বছর মার্চ ও এপ্রিল মাসে টাটার তৈরি আইফোনের ৮৬ শতাংশই গেছে আমেরিকায়। তবে মে মাসের তথ্য এখনও জানা যায়নি। উল্লেখ্য, টাটার ফ্যাক্টরিতে আইফোন তৈরি শুরু হয় গত বছরের (২০২৪) জুলাই থেকে। গত বছর তাঁদের তৈরি আইফোনের ৫২ শতাংশ রপ্তানি করা হয়েছে আমেরিকায়।

ভারতের শুল্ক বিভাগ প্রদত্ত তথ্য থেকেই স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে, চীনের ওপর ট্রাম্প সরকারের আরোপিত শুল্কের প্রভাব এড়াতেই ভারত থেকে আইফোনের আমাদানি বৃদ্ধি করেছে অ্যাপল। 

উল্লেখ্য, গত বুধবার (১১ জুন) ট্রাম্প জানিয়েছেন, চীন থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর ৫৫ শতাংশ শুল্কারোপ করা হবে। সম্প্রতি চীন ও আমেরিকার মধ্যে ফলপ্রসূ আলোচনার পর এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে দেশ দুটি। এর মাধ্যমে গত এপ্রিলে শুরু হওয়া চীন-মার্কিন শুল্কযুদ্ধ আপাতত স্তিমিত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

সূত্র: রয়টার্স