ক্ষমা চেয়ে বিএনপির নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা উচিত: প্রধানমন্ত্রী
ক্ষমা চেয়ে বিএনপির নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা উচিৎ বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, অপরাধ সংঘটন ও অগ্নিসংযোগের জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে বিএনপির আসন্ন সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া উচিত।
আজ শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) নগরীর তেজগাঁওয়ে দলের ঢাকা জেলা কার্যালয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রথম সভায় সূচনা বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এসময় তিনি আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য বিএনপিসহ দেশের সব রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সবারই এগিয়ে আসতে হবে এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হবে। (সকলকে) জনগণের কাছে গিয়ে ভোট চাইতে হবে।’
বিএনপি–জামায়াতের সহিংসতা ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে মানুষ হত্যা ও জানমালের ক্ষতি সাধনের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তাদের (বিএনপি–জামায়াত) উচিত তাদের অপরাধের জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়া এবং তারপরে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন তাদের অংশ গ্রহণ করা।’
তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘যারা খুন করেছে এবং সাধারণ মানুষকে হত্যার পরিকল্পনা করেছে তাদের ভোট দিতে কেন জনগণ যাবে এবং জনগণ কেন তাদের ওপর আস্থা রাখবে? জনগণ তাদের বিশ্বাস করে না, কারণ তারা খুনি ও ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে চিহ্নিত।’
‘কারও সাহস থাকলে তারা নির্বাচনে অংশ নেবে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জনসমর্থন থাকলে তারা ম্যান্ডেট পাবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা জনগণের সেবা করেছি ও তাদের অধিকার নিশ্চিত করেছি বলেই আজ আওয়ামী লীগ ও আমাদের ওপর জনগণের আস্থা রয়েছে।’
ফিলিস্তিনি হাসপাতালে বিশেষ করে নারী ও শিশুদের ওপর ইসরায়েলের বোমা হামলার সমালোচনা করে সরকারপ্রধান বলেন, তাঁর সরকার ফিলিস্তিনিদের জন্য উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ওষুধ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পাঠিয়েছে।
বিএনপি ও জামায়াতের নাম উল্লেখ না করে তিনি এ প্রসঙ্গে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের নিপীড়নের প্রতিবাদ না করায় দলগুলোর সমালোচনা করেন।
তিনি আরো বলেন, ‘এটা দুর্ভাগ্যজনক যে, আমরা এমন সব পক্ষের কাছ থেকে অনেক কিছুই শুনি যারা এই দেশে অগ্নিসংযোগ করে মানুষ হত্যা করে এবং অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে। এ বিষয়ে তারা কিছুই বলে না।’
বাংলাদেশের রাজনীতির প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে, ‘এখন চরম ডানপন্থী ও চরম বামপন্থী দলগুলো সরকারকে উৎখাতের জন্য হাত মিলিয়েছে। এখন কারা তাদের আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়েছে, সেটি একটি প্রশ্ন। এখন চরম বামপন্থীদের আর কোনো আদর্শ নেই।’
শেখ হাসিনা প্রশ্ন করেন, ‘আমাদের কী দোষ যে, আমাদের সরকারের পতন ঘটাতে হবে?’
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, ‘আসলে তারা (বিএনপি) নির্বাচন বানচাল করতে চেয়েছিল। কিন্তু, তারা এই নির্বাচন বানচাল করতে পারবে না।’ বিএনপিকে নেতৃত্বহীন দল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়া নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না বলে তারা নির্বাচনে অংশ নিতে চান না, বরং নির্বাচন বানচাল করতে চান।’
গার্মেন্টস শিল্পে নাশকতার সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কোনো সরকার দেশে পোশাক শ্রমিকদের বেতন বাড়ানোর জন্য কিছু করেনি।’
শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার এখন পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মাসিক মজুরি ৫৬ শতাংশ বাড়িয়ে ১২ হাজার ৫০০ টাকা করেছে, তাঁদের বেতন বার্ষিক ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। এরপরও ১৮–১৯টি কারখানা ভাঙচুর হতে দেখা গেছে।