রাজধানীর বুকে বুড়িগঙ্গায় নৌকা একমাত্র বাহন

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব ফটোগ্রাফার নিজস্ব ফটোগ্রাফার
প্রকাশিত: ০৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৫১ AM

ইট-পাথরের শহর ঢাকায় এখন সবকিছুই যান্ত্রিক হয়ে গেছে। যদিও একসময় শহরটিতে বন-জঙ্গলে ঘেরা ছিলো। কিন্তু সেগুলো এখন ইতিহাস। এর ছিটেফোঁটাও এখন আর দেখা যায় না।

বুড়িগঙ্গা (ছবি: সিটিজেন জার্নাল)

ঢাকা শহরের ইতিহাস অনেক পুরনো। কথিত আছে যে, সেন বংশের রাজা বল্লাল সেন বুড়িগঙ্গা নদীর তীরবর্তী এলাকায় ভ্রমণকালে সন্নিহিত জঙ্গলে হিন্দু দেবী দুর্গার একটি বিগ্রহ খুঁজে পান। দেবী দুর্গার প্রতি শ্রদ্ধাস্বরূপ রাজা বল্লাল সেন ঐ এলাকায় একটি মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। যেহেতু দেবীর বিগ্রহ ঢাকা বা গুপ্ত অবস্থায় খুঁজে পাওয়া গিয়েছিলো, তাই রাজা, মন্দিরের নাম রাখেন ঢাকেশ্বরী মন্দির। মন্দিরের নাম থেকেই কালক্রমে স্থানটির নাম ঢাকা হিসেবে গড়ে ওঠে।

বুড়িগঙ্গা (ছবি: সিটিজেন জার্নাল)

আবার অনেক ঐতিহাসিকের মতে, মোঘল সম্রাট জাহাঙ্গীর যখন ঢাকাকে সুবাহ বাংলার রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করেন; তখন সুবাদার ইসলাম খান আনন্দের বহিঃপ্রকাশস্বরূপ শহরে “ঢাক” বাজানোর নির্দেশ দেন। এই ঢাক বাজানোর কাহিনী লোকমুখে কিংবদন্তির রূপ নেয় এবং তা থেকেই শহরের নাম ঢাকা হয়ে যায়। এখানে উল্লেখ্য যে, মোঘল সাম্রাজ্যের বেশ কিছু সময় ঢাকা সম্রাট জাহাঙ্গীরের প্রতি সম্মান জানিয়ে জাহাঙ্গীরনগর নামে পরিচিত ছিলো।

বুড়িগঙ্গা (ছবি: সিটিজেন জার্নাল)

ঢাকা নগরীকে বর্তমানে দু'ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে - ঢাকা দক্ষিণ ও ঢাকা উত্তর। ঢাকা দক্ষিণই হলো পুরাতন মূল নগরী। ঢাকা উত্তর ঢাকার নবীন বর্ধিত উপশহরগুলো নিয়ে গঠিত।

বুড়িগঙ্গা (ছবি: সিটিজেন জার্নাল)

আর এই ঢাকা দক্ষিণেই পড়েছে বুড়িগঙ্গা। বুড়িগঙ্গার একদিকে পোস্তগোলা সেতু, অন্যদিকে বাবুবাজার ব্রিজ, এর মাঝামাঝি যত জায়গা আছে তার প্রায় সবখানে পারাপারের একমাত্র বাহন হলো নৌকা। এছাড়া বুড়িগঙ্গার আরও অনেক জায়গায় নৌকা দিয়ে পারাপার করা হয়ে থাকে।

বুড়িগঙ্গা (ছবি: সিটিজেন জার্নাল)

প্রতিদিন শত শত যাত্রী নৌকা হয়েই পারাপার করেন। এছাড়া অনেকেই নৌকায় বৈকালিক অবসরও কাটিয়ে থাকেন।

বুড়িগঙ্গা (ছবি: সিটিজেন জার্নাল)

যদিও দূষিত ও দুর্গন্ধযুক্ত বুড়িগঙ্গা সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ ও মাঝিদের পারাপারে কোন বাধা হতে পারেনি। 

বুড়িগঙ্গা (ছবি: সিটিজেন জার্নাল)

পানি দূষিত হওয়ার কারণে সম্প্রতি পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন আন্দোলন (পরিজা) ও মানবাধিকার উন্নয়ন কেন্দ্র জানিয়েছেন, বুড়িগঙ্গায় জলজ প্রাণি বেঁচে থাকার সুযোগ নেই।

বুড়িগঙ্গা (ছবি: সিটিজেন জার্নাল)

জলজ প্রাণী বেঁচে থাকার জন্য দ্রবীভূত অক্সিজেন (ডিও) ৪ মিলিগ্রাম/লিটার থাকা প্রয়োজন। কিন্তু বুড়িগঙ্গা নদীতে সদরঘাট টার্মিনাল থেকে শ্যামপুর বিআইডব্লিউটিএ টার্মিনাল পর্যন্ত দ্রবীভূত অক্সিজেন (ডিও) মাত্র ০.১৪ থেকে ০.৭২ মিলিগ্রাম/লিটার।

বুড়িগঙ্গা (ছবি: সিটিজেন জার্নাল)

তবে জলজ প্রাণি বেঁচে থাকুক আর না থাকুক একদল মানুষের জীবন চলছে এই নোংরা পানিকে ঘিরে।