আজ বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক
সংখ্যালঘু ইস্যুতে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বর্তমানে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। চলমান এই উত্তেজনার মধ্যেই আজ দু’দেশের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এতে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিন ও ভারতের পক্ষে বিক্রম মিশ্রি।
আজ সোমবার (৯ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কারণে এবারের বৈঠককে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ঢাকার আশা, বৈঠক ফলপ্রসূ হবে।
এ বিষয়ে রোববার (৮ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনাসভায় পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, আমরা আশা করি বৈঠক ফলপ্রসূ হবে। যেকোনো সমস্যার সমাধান করতে হলে আগে স্বীকার করতে হবে সমস্যাটি আছে। আমাদের স্বীকার করতে হবে যে, ৫ আগস্টের পরে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের নিশ্চয়ই গুণগত পরিবর্তন হয়েছে। এটা মেনে নিয়েই সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতে হবে।
জানা গেছে, বৈঠকে উভয়পক্ষ রাজনৈতিক দূরত্ব কমানোর বিষয়ে জোর দেবে। এ ছাড়া ঢাকার পক্ষ থেকে ভারতে বসে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধ, ভারতীয় গণমাধ্যমের বাংলাদেশবিরোধী অপপ্রচার প্রতিরোধ এবং ভিসার জট খোলার বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হতে পারে।
একইসঙ্গে দিল্লি সম্পর্ক স্বাভাবিক করে তোলার পাশাপাশি সংখ্যালঘুদের স্বার্থ এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আর্জি জানাতে পারে।
খসড়া সূচি অনুযায়ী, বিক্রম মিশ্রি পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিনের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনার আগে একান্তে বৈঠক করবেন। এরপর সচিব পর্যায়ের বৈঠকে অংশগ্রহণ শেষে যোগ দেবেন মধ্যাহ্নভোজে। পরে তিনি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে রাতেই ঢাকা ছেড়ে যাবেন।
এদিকে, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের টানাপোড়েনের মধ্যে এই সফরকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা। তাদের ধারণা, এই সফর ঘিরে ঢাকা-দিল্লির সম্পর্কের বরফ গলতে পারে। এমন ইঙ্গিত মিলেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সেক্রেটারি শফিকুল আলমের কথাতেও।
রোববার (৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, বিক্রম মিশ্রির সফরের মাধ্যমে চলমান অস্থিরতার নিরসন হবে, এমনটা আশা করছি। আমরা চাইব ভারতের সঙ্গে সম্পর্কটা আরও ভালো জায়গায় যাক। যেন দুই দেশের মানুষই এর সুফল ভোগ করে। একই সঙ্গে চাচ্ছি ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কটা ন্যায্যতা, সমতা ও মর্যাদাপূর্ণ হবে। সেদিকেই আমাদের ফোকাস থাকবে।
প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এটিই দুই দেশের মধ্যে উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রথম বৈঠক।