মালয়েশিয়ায় বন্ধ হচ্ছে বাংলাদেশি কর্মীদের দুয়ার!
বাংলাদেশ থেকে কর্মীদের বিশাল একটা অংশ যায় মালয়েশিয়ায়। তবে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেয়া বন্ধ করছে মালয়েশিয়া। এ নিয়ে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে বৈঠকের প্রস্তাব দিলেও সাড়া মেলেনি কুয়ালালামপুরের।
এদিকে বিনা খরচে ১০ হাজার কর্মী পাঠানোর কথা থাকলেও দেশটিতে মাত্র ১৩শ’ কর্মী পাঠাতে পেরেছে বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়েমেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড (বোয়েসেল)। প্রবাসী কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী বলছেন, চলতি মাসের মধ্যেই পাঠানো হবে সব কর্মী।
সংকট সমাধানে দূতাবাসের তৎপরতার পাশাপাশি সেল গঠনের পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
অতিরিক্ত অভিবাসন ব্যয়, বন্দিদশা, চুক্তি অনুযায়ী কাজ না পাওয়া যেন নিত্যদিনের সঙ্গী বাংলাদেশিদের জন্য অন্যতম মালয়েশিয়ার। এতে উদ্বেগ জানায়, জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন, অভিবাসন সংস্থা। এরইমধ্যে কোটা পূরণের কথা বলে গত মাসে কলিং ভিসা বন্ধের ঘোষণা দেয় মালয়েশিয়া। কুয়ালালামপুর জানায়, ৩১ মে’র পর আর কোনো শ্রমিক নেবে না তারা।
মালয়েশিয়ায় শূন্য অভিবাসন ব্যয়ে ১০ হাজার কর্মী পাঠাতে চুক্তি হয়েছিল ২০২২ সালে। তবে এই সময়ে মাত্র ১৩০০ কর্মী পাঠাতে পেরেছে বোয়েসেল। এখন প্রশ্ন হলো, বিনা খরচে কর্মী পাঠানোর সুযোগ থাকলেও কেন কোটা পূরণ করতে পারেনি দেশের একমাত্র সরকারি রিক্রুটিং এজেন্সি?
বোয়েসেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মল্লিক আনোয়ার বলেন, আমাদের তৃতীয় জয়েন অর্গেন গ্রুপের মিটিং আগামী জুন বা জুলাই মাসে হবে। বাকি যে ৮ হাজার ৫০০ কোটা আছে এটি পূরণের জন্য এজেন্ডাভুক্ত করা হয়েছে। আশা করি আলোচনা করে এই কোটাটি অব্যাহত রাখা হবে।
মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার চালু রাখতে বৈঠকে বসার প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ। তবে কোনো সাড়া নেই কুয়ালালামপুরের। এ বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, আরও সময় বৃদ্ধিতে আমাদের মন্ত্রণালয় মালয়েশিয়ার সরকারের কাছে চিঠি দিয়েছে এবং আমাদের মালয়েশিয়ান অ্যাম্বাসেডরও চিঠি দিয়েছে। ফলে দিন না বাড়লেও আমাদের জনশক্তি পাঠাতে প্রস্তুত রয়েছি।
সংকট সমাধানে দূতাবাসের তৎপরতার পাশাপাশি সেল গঠনের পরামর্শ দিয়েছেন অভিবাসন বিশ্লেষকেরা। অভিবাসন বিশেষজ্ঞ আসিফ মুনির বলেন, সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে নজর দেয়া দরকার। প্রয়োজন হলে সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে ২ রাষ্ট্রের আলোচনা করে দীর্ঘমেয়াদী একটি সমাধানে যাওয়া উচিত। দরকার হলে আলাদা একটা দপ্তর অথবা সমন্বয় সেল গঠন করা যেতে পারে, যেখানে আমাদের প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় ছাড়াও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থাকবে এবং নিয়মিত তারা মনিটর করবে।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের আগস্ট থেকে গেল ২০ মাসে মালয়েশিয়ায় গেছেন ৪ লাখ ২৮ হাজার বাংলাদেশি শ্রমিক।