নির্বাচনে মাঠে থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১০ লাখ সদস্য
![নির্বাচন](https://citizenjournal24.com/resources/img/article/202312/93815_122.jpg?v=1.1)
আগামী ৭ জানুয়ারি শুরু হতে যাচ্ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এই নির্বাচন সুষ্টু ও অবাধ করতে নানান পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে মাঠে নেমেছে র্যাব ও বিজিবি। গতকাল শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) থেকে রাজধানীসহ সারা দেশে মোতায়েন করা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী র্যাব ও বিজিবি ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সব নির্বাচনি এলাকায় দায়িত্ব পালন করবে। ভোট গ্রহণের দুই দিন পর অর্থাত্ ১৩ দিন তারা মাঠে থাকবে। তবে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য ৩ জানুয়ারি থেকে নির্বাচনি দায়িত্ব পালন শুরু করবে। এর পাশাপাশি থেকে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী পুলিশ ও আনসার মাঠে কাজ করছে।
এর আগে, গত ২১ ডিসেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের রাজনৈতিক-৬ শাখা থেকে জারি করা এক নির্দেশনায় সশস্ত্র বাহিনী, বিজিবি, কোস্ট গার্ড, আমর্ড পুলিশ, আনসার ব্যাটালিয়ন, র্যাব, পুলিশ ও আনসার-ভিডিপির নির্বাচনি মাঠে তাদের কার্যপরিধি বণ্টন করা হয়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, প্রায় ২ লাখ পুলিশ নির্বাচনকে সামনে রেখে সরাসরি মাঠে কাজ করবে। এর সঙ্গে আনসার-ভিডিপির ৬ লাখ সদস্য মোতায়েন থাকবে। এর মধ্যে প্রায় ৫ লাখ ভিডিপি (ভিলেজ ডিফেন্স পার্টি) সদস্য। সশস্ত্র বাহিনী, বিজিবি, কোস্ট গার্ড, র্যাব, আমর্ড পুলিশ, ব্যাটালিয়ন আনসার ও কোস্ট গার্ডের প্রায় ২ লাখ সদস্য মোবাইল টিম ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। সব মিলিয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সুষুমভাবে সম্পন্ন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১০ লাখ সদস্য মাঠে কাজ করবে।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘নির্বাচনে দেশের নিরাপত্তা পরিকল্পনার অংশ হিসেবে অন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি র্যাব মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনে হেলিকপটার ও ডগ স্কোয়াড নিয়োগ করা হবে।’
র্যাব সূত্র জানায়, র্যাব সদর দপ্তরে ১৫টি টহল দল রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে প্রস্তুত থাকবে। সারা দেশে র্যাবের ১৫টি ব্যাটালিয়ন ও ৪৫টি কোম্পানি রয়েছে। এর পাশাপাশি আরো ২৫টি অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করা হবে। ঢাকার বাইরে ৫০টি টহল দল মোতায়েন করেছে র্যাব। র্যাব সদর দপ্তরের বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট সাতটি জোনে বিভক্ত হয়ে মোতায়েন করা হয়েছে। র্যাব ডগ স্কোয়াডের ১০টি দল র্যাব সদর দপ্তরে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সারা দেশে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে চেকপোস্ট স্থাপন করে র্যাব তল্লাশি শুরু করেছে। র্যাব সদর দপ্তর ও ব্যাটালিয়ন অফিস থেকে ৭০০-র অধিক টহল দল নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করবে।
এদিকে, মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্সের জন্য অতিরিক্ত ১ হাজার ৯০৪ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোতায়েন করতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে চিঠি দিয়েছে ইসি। ঐ ম্যাজিস্ট্রেটরা ৫ জানুয়ারি থেকে ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত নির্বাচনি দায়িত্বে থাকবেন।
বিজিবি সদর দপ্তরের জনসংযোগ শাখার প্রধান কর্মকর্তা শরীফুল ইসলাম বলেন, সারা দেশে নির্বাচনি দায়িত্ব পালনের জন্য বিজিবির ১ হাজার ১৫১ প্লাটুন মাঠে নেমেছে।
গতকাল শুক্রবার বিকালে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বিজিবির টহল দিতে দেখা যায়। এ ব্যাপারে বিজিবির ঢাকা সেক্টর কমান্ডার কর্নেল আবু মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, ঢাকাসহ ৯ জেলায় ৫১টি আসনে ১৩১ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। রাজধানীতে বিজিবির ১৩টি বেজ ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। বিজিবি অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার কাজ করছে। তিনি আরো বলেন, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা দায়িত্ব পালন করছি।
উপকূলীয় এলাকায় কোস্ট গার্ড মোতায়েন: দেশের উপকূলীয় এলাকায় মোতায়েন হয়েছে কোস্ট গার্ড। গতকাল শুক্রবার বিকালে কোস্ট গার্ড সদর দপ্তরের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার খন্দকার মুনিফ তকি বলেন, শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় ও বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার নিমিত্তে উপকূলীয় ৪৩টি ইউনিয়নে কোস্ট গার্ড মোতায়েন করা হয়েছে। ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত উপকূলীয় এলাকায় মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে।