যেভাবে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা থেকে রক্ষা পেল বাংলাদেশ বিমান
-1180923.jpg?v=1.1)
রাত ২টা ১৫ মিনিট। ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সৌদি আরবগামী একটি বাংলাদেশি বিমান নির্ধারিত সময় অনুযায়ী উড্ডয়ন করে। বিমানটির নিয়ন্ত্রণে ছিলেন ক্যাপ্টেন ইনাম তালুকদার এবং সহ-পাইলট হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন রাফসান রিয়াদ।
বিমানটি ভারতের আকাশসীমা অতিক্রম করে ওমান ও সংযুক্ত আরব আমিরাত পেরিয়ে বাহরাইনের আকাশে পৌঁছে যায়, তখন স্থানীয় সময় ভোর প্রায় ৫টা। প্রায় ৪০ হাজার ফুট উচ্চতা থেকে নিচের পৃথিবীটা ছিল দৃষ্টিনন্দন—এক মনোমুগ্ধকর দৃশ্য। তবে সেই সুন্দর মুহূর্ত হঠাৎ করেই এক অপ্রত্যাশিত ঘটনায় বদলে যায়।
বাংলাদেশি উড়োজাহাজ পারস্য উপসাগরের উপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছিল। হঠাৎ করেই ইরানের আকাশে উজ্জ্বল আলোর ঝলকানি দেখতে পান ক্যাপ্টেন ইনাম। তিনি প্রথমে ভেবেছিলেন, হয়তো কোনো সাধারণ সামরিক মহড়া হবে। কিন্তু মুহূর্তের মধ্যেই তারা সারি সারি ক্ষেপণাস্ত্র আকাশে উঠতে দেখেন। যা তীব্র গতিতে পশ্চিম দিকে ছুটছিল। গত শুক্রবার ইসরায়েল তেহরানে হামলা চালানোর পর ইরানের পাল্টা হামলা ছিল এটি।
ক্যাপ্টেন ইনামের পাশে বসা কো-পাইলট রাফসানও ঘটনার আকস্মিকতায় হতভম্ব হয়ে যান। তখন তারা দ্রুত ফ্লাইট রুট পরিবর্তনের কাজ শুরু করেন। তাদের মাথায় কেবল একটাই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছিল- যদি কোনো একটি ক্ষেপণাস্ত্রও গতিপথ পাল্টে তাদের বিমানের দিকে চলে আসে? তাহলে সব শেষ।
ক্যাপ্টেন ইনাম দেশের একটি শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমকে জানান, পাইলট হিসেবে সেদিন তাকে অনেক ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতির মধ্য দিয়েও যেতে হয়েছে। কোনো কিছুই এর সঙ্গে তুলনা করার মতো নয়। তাদের উড়োজাহাজ থেকে মাত্র কয়েক মাইল দূরে আকাশজুড়ে ধেয়ে যাচ্ছিল আগুনের গোলা। তারা দ্রুত উড়োজাহাজের গতিপথ পরিবর্তন করে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখেন এবং শেষ পর্যন্ত নিরাপদে রিয়াদে অবতরণ করেন।
বিমানবন্দরে নামার পর ফোন চালু করতেই শিরোনামগুলো চোখে আসতে শুরু করে: ‘ইসরায়েলে ইরানের ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা।’ ক্যাপ্টেন ইনাম বলেন, সেদিন সকালে তিনি শুধু একজন পাইলটই ছিলেন না, ছিলেন ইতিহাসেরও একজন সাক্ষী।