বৃহস্পতিবারের মধ্যে এনবিআর চেয়ারম্যানকে অপসারণের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক
জার্নাল ডেস্ক জার্নাল ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৬ মে ২০২৫, ০২:৫৫ PM

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সংস্কার ঐক্য পরিষদ এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান খানকে অপসারণের দাবি জানিয়েছে। সংগঠনটি আগামী বৃহস্পতিবারের (২৯ মে) মধ্যে তাঁর অপসারণের আহ্বান জানিয়েছে।

আজ সোমবার (২৬ মে) এনবিআর প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি তুলে ধরেন সংগঠনের নেতারা।

তারা জানান, যৌক্তিক কর্মসূচির আবহে সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য বিধায় এর কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। এই পরিষদের মাধ্যমে একটি শক্তিশালী ও জনবান্ধব এনবিআর গড়তে বিভিন্ন সংস্কার প্রস্তাব ও ভাবনা নিয়ে আগামীতে কাজ করা হবে। এরই আলোকে আগামী মাসে সব অংশীজনকে সঙ্গে নিয়ে ‘কেমন এনবিআর চাই’ শীর্ষক একটি সেমিনার বা মতবিনিময় অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে।
 
সম্প্রতি জারিকৃত অধ্যাদেশের খসড়া প্রস্তুতির প্রক্রিয়ার শুরু থেকে প্রতিটি ধাপে এনবিআরের বর্তমান চেয়ারম্যান লুকোচুরির আশ্রয় নিয়েছেন ও চরম অসহযোগিতা করেছেন এবং সরকারকে ভবিষ্যৎ রাজস্ব কাঠামো নিয়ে এনবিআরের কর্মকর্তাদের আশা ও আকাঙ্ক্ষার কথা জানানোর ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছেন। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে সুবিধাভোগী প্রশাসনের এই কর্মকর্তা তার পূর্ববর্তী পদে থাকা অবস্থায় ব্যাংকিং খাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিসহ জুলাই পরবর্তী সময়ে নির্দিষ্ট গোষ্ঠীকে কর ফাঁকির বিষয়ে সহযোগিতা করতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অডিট কার্যক্রম বন্ধ করেন।
  
এছাড়াও নজিরবিহীনভাবে অর্থবছরের মাঝামাঝি সময়ে অযৌক্তিক এবং অপরিকল্পিতভাবে ভ্যাট হার বৃদ্ধির মাধ্যমে তিনি দেশের অর্থনীতিতে অস্থিতিশীলতা তৈরি করেন। তিনি বিভিন্ন উপায়ে সরকারের সঙ্গে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের গঠনমূলক ও সার্থক আলোচনার পরিবেশ সৃষ্টির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছেন। এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের দাবিগুলোর বিষয়ে সরকারকে শুরু থেকেই বিভ্রান্ত করে সরকারের সঙ্গে সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে দূরত্ব তৈরির অপচেষ্টা করে পরিকল্পিতভাবে পরিস্থিতিকে দীর্ঘায়িত ও জটিল করেছেন। তার অবস্থান অতি নেতিবাচক ও ষড়যন্ত্রমূলক না হলে এই সমস্যা অনেক আগেই সুরাহা হয়ে যেত।
 
আগামী ২৯ মের মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বর্তমান চেয়ারম্যানকে অপসারণ করতে হবে উল্লেখ করে সংগঠনটি আরও জানায়, তার প্রতি বিশ্বাস ও আস্থার চরম সংকট তৈরি হওয়ায় এই দাবির ধারাবাহিকতায় এর আগে ঘোষিত এনবিআরের চেয়ারম্যানের সঙ্গে লাগাতার অসহযোগ কর্মসূচি যথারীতি অব্যাহত থাকবে। রাষ্ট্র ও জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে সরকার কর-রাজস্ব নীতি প্রণয়ন, কর-রাজস্ব আহরণ ও ব্যবস্থাপনায় জ্ঞান, দক্ষতা ও বাস্তব কর্ম-অভিজ্ঞতাসম্পন্ন একজন কর্মকর্তাকে চেয়ারম্যান পদে পূর্ণকালীন দায়িত্ব দিতে হবে।
 
সরকার খুব শিগগিরই রাজস্ব সংস্কার বিষয়ক পরামর্শক কমিটির প্রতিবেদন জনসাধারণের জন্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করবে বলেও আশা প্রকাশ করে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ। তারা জানায়, এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ আশা করে, আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে জারিকৃত অধ্যাদেশে প্রয়োজনীয় সংশোধনীর লক্ষ্যে সরকার খুব শিগগিরই আলোচনা শুরুসহ প্রয়োজনীয় কার্যক্রম দৃশ্যমান করবে। আন্দোলনের কারণে কাজে বিঘ্ন ঘটায় ৯ থেকে ৫ টার বাইরের প্রয়োজনে ৪-৫ ঘণ্টা কাজ করবে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।