ব্যক্তির মতো আইনি ক্ষমতা পেলো নিউজিল্যান্ডের পর্বত
ওশেনিয়া মহাদেশের দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশ নিউজিল্যান্ডে একটি পর্বতকে মানুষের সমান আইনি অধিকার দেওয়া হয়েছে। মূলত মানুষ হিসেবে একজন ব্যক্তি যে যে অধিকার পেয়ে থাকেন নিউজিল্যান্ডের ওই পর্বতকে একই আইনি অধিকার দেওয়া হয়েছে।
নিউজিল্যান্ডের ওই পর্বতের নাম “মাউন্ট তারানাকি”। বছরের পর বছর ধরে আলোচনার পর এটিকে আইনে পরিণতও করা হয়েছে। আজ শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) এক প্রতিবদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
এর মাধ্যমে তারানাকি মাউঙ্গা (মাউন্ট তারানাকি) কার্যকরভাবে নিজের মালিকানা লাভ করবে এবং স্থানীয় আয়ই উপজাতি এবং সরকারের প্রতিনিধিরা এটি পরিচালনা করতে একসাথে কাজ করবে।
সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে, মাউন্ট তারানাকি নামের এই পর্বতকে স্থানীয় মাওরি জনগোষ্ঠী বরাবরই তাদের পূর্বপুরুষ বলে মনে করে থাকে। অষ্টাদশ এবং ঊনবিংশ শতকের ঔপনিবেশিক শাসকগোষ্ঠী তাদের কাছ থেকে এই পবিত্র ভূমি কেড়ে নিয়েছিল।
দীর্ঘ আলোচনার পর নিউজিল্যান্ড সরকার নতুন আইন পাস করে এই পর্বতকে সম্পূর্ণ মানবিক অধিকার ও দায়িত্ব প্রদান করেছে। বিষয়টিকে ঐতিহাসিকভাবে ন্যায়বিচারের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলেও মনে করা হচ্ছে।
নতুন আইন অনুযায়ী, তারানাকি পর্বতের মানব সত্তার নাম দেওয়া হয়েছে “তে কাহুই তুপুয়া”। আইনিভাবে এখন এই পর্বত ও তার আশপাশের ভূমিকে একটি জীবন্ত ও অবিভাজ্য সত্তা হিসাবে গণ্য করা হবে। এতে পর্বতটির সংরক্ষণ, ঐতিহ্যগত ব্যবহার ও এর সুস্থতা রক্ষার বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
মূলত মাওরি জনগণের বিরুদ্ধে উপনিবেশ আমলের অন্যায়ের স্বীকৃতি ও অবিচারের ক্ষতিপূরণ হিসেবে এই আইনটি করা হয়েছে। নতুন আইনি অধিকার তারানাকি পর্বতটির স্বাস্থ্য ও সুস্থতা রক্ষা করতে সাহায্য করবে। এর ফলে, কেউ চাইলেই ওই অঞ্চলটির ভূমি জোর করে কিনতে পারবে না।
এদিকে আইনটি পাস হওয়ার সময় পার্লামেন্টের সদস্যরা সর্বসম্মতভাবে ভোট দিয়েছেন। এছাড়া নিউজিল্যান্ডই হচ্ছে বিশ্বে প্রথম দেশ, যেখানে প্রকৃতিকে আইনিভাবে ব্যক্তি হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
এর আগে ২০১৪ সালে “তে উরেওরা” নামে এক বিশাল বনভূমিকে এই মর্যাদা দেওয়া হয়েছিল। এরপর ২০১৭ সালে ওয়াঙ্গানুই নদীকেও একই স্বীকৃতি দেয় দেশটি।