পশ্চীম তীরে আল জাজিরার রামাল্লা অফিস বন্ধ করে দিলো ইসরায়েল
ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরের রামাল্লায় বন্দুক নিয়ে ইসরায়েলি সৈন্যরা আল জাজিরার ব্যুরোতে প্রবেশ করেছে।
তারা সেখানকার স্টাফ সদস্যদের ১০ মিনিটের মধ্যে সরে যেতে এবং যে কোনও সরঞ্জাম রেখে যেতে বলেছে।
এদিকে ফিলিস্তিনের রামাল্লায় আল জাজিরার অফিস ৪৫ দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে ইসরাইল।
ভারী অস্ত্রে সজ্জিত, মুখোশধারী ইসরায়েলি সৈন্যরা বিল্ডিংয়ে প্রবেশ করেছিল এবং নেটওয়ার্কের ওয়ালিদ আল-ওমারিকে অর্ডারটি দিয়েছিল। তারা এই সিদ্ধান্তের কারণ জানাননি।
আল জাজিরা আরবি কথোপকথনটি সরাসরি সম্প্রচার করার সময় একজন সৈনিক আল-ওমারিকে বলেছিলেন, "আল জাজিরাকে ৪৫ দিনের জন্য বন্ধ করার জন্য আদালতের রায় রয়েছে।"
"আমি আপনাকে এই মুহুর্তে সমস্ত ক্যামেরা নিতে এবং অফিস ছেড়ে যেতে বলছি।"
উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের অধিকৃত গাজায় ইসরায়েলি হামলার পর গাজাবাসীর আওয়াজ হয়ে উঠেছে আল জাজিরা। ইসরায়েলে আল জাজিরার অফিস বন্ধ করে দেওয়ার পর বিশ্ববাসীর কাছে তাদের অত্যাচার তুলে ধরতো আল জাজিরার রামাল্লা অফিস। তবে এবার কোন কারণ ছাড়াই বন্ধ করে দেওয়া হলো ফিলিস্তিনিদের আওয়াজ।
গাজা যুদ্ধের আগে থেকেই ফিলিস্তিনিদের পক্ষে আওয়াজ ছিলো এই আল জাজিরা। তবে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রতিদিনই আল জাজিরার বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে নেতানিয়াহু সরকার। আল জাজিরার সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ঘৃণা উস্কে দিয়ে পূর্ব জেরুজালেমে আল জাজিরার হিব্রু অফিস বন্ধ করে দেয় দেশটি।
তারা মূলত ফিলিস্তিনের পক্ষে যায় এমন যে কোন কিছুর বিরুদ্ধে ঘৃণা উস্কে দেয়। ইসরায়েল ফিলিস্তিনের আল জাজিরা অফিস এমন সময় বন্ধ করলো যখন অবরুদ্ধ পশ্চীম তীরে হামলা তীব্র করেছে।
ফিলিস্তিনি সাংবাদিক নিদা ইব্রাহিম বলেছেন। ফিলিস্তিনি সাংবাদিক হিসেবে, আমরা জানি যে ইসরায়েল এবং ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী সবসময় আমাদের কাজ করতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে।
মাত্র গত সপ্তাহে, যখন আমরা জেনিনে ইভেন্টগুলি কভার করছিলাম, তখন একটি ইসরায়েলি গাড়ি আল জাজিরা টিমের কাছে এসেছিল এবং অধিকৃত পশ্চিম তীরের জেনিনের কাছে কাবালতিয়া শহরে ব্যাপক ইসরায়েলি অভিযান কভার করার চেষ্টা করতে এবং আমাদেরকে বাধা দিতে আমাদের কাছে টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করেছিল।
তাই এটা কোন গোপন বিষয় নয় যে ইসরায়েলি বাহিনী চায় না ফিলিস্তিনি সাংবাদিকরা তাদের গল্প বলুক।
আমরা আমাদের সহকর্মীদেরও হারিয়েছি। ২০২২ সালে, শিরিন আবু আকলেহ, যিনি জেনিন এলাকা এবং জেনিন শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি অভিযানের কভার করছিলেন, তাকে হত্যা করা হয়েছিল। এবং যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে, আমরা সাংবাদিকদের উপর আরও ক্র্যাকডাউন দেখতে পাচ্ছি। আমরা তাদের অনেককেই ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হতে দেখেছি, জেলে অনেক সময় কাটিয়েছি। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে যে, তারা ইসরায়েলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে উসকানি দিচ্ছে বা তারা সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত।
সূত্র: আল জাজিরা