ইসরায়েলি বোমা হামলায় পুরোপুরি ধ্বংস গাজার কৃষিজমি
প্রতি গ্রীষ্মে গাজার ক্ষেতগুলোর ফসল পাকতে শুরু করে। এ সময় কৃষকরা খুব ব্যস্ত সময় পার করেন। তবে এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ হবার পর থেকে উপত্যকাটির প্রায় সকল আবাদি জমি ধ্বংস করে ফেলেছে সামরিক বাহিনী (আইডিএফ)। এতে করে গাজা উপত্যকার কৃষি জমিগুলোর খাদ্যশস্য উৎপাদন করার ক্ষমতা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে।
গতকাল মঙ্গলবার (৩ জুলাই) এক প্রতিবেদনে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ তথ্য জানায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর তাণ্ডবে গাজাবাসী দীর্ঘমেয়াদি খাদ্য সংকটের ঝুঁকিতে পড়েছে। জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে গাজার জনসংখ্যার অন্তত ৯৬ শতাংশ অনিরাপদ খাদ্য গ্রহণ করছে। এ ছাড়া প্রতি পাঁচ জন ফিলিস্তিনির মধ্যে কমপক্ষে একজন অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন। এই হিসাব মতে গাজার প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ অনাহারে ভুগছে।
গাজা ভূখণ্ডের মোট জনসংখ্যার ৪ লাখ ৯৫ হাজার মানুষ অনাহারে সময় পার করছেন। এ বিষয়ে বিভিন্ন স্যাটেলাইট চিত্র বিশ্লেষণ করে একটি তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আল জাজিরা। স্যাটেলাইট চিত্রগুলো বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, গাজার কৃষিজমির অর্ধেকেরও বেশি গত নয় মাসে ইসরাইলের হামলায় পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। গণমাধ্যমটির হিসাব মতে উপত্যকা ৬০ শতাংশের বেশি আবাদি জমি ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত প্রায় নয় মাস ধরে ফিলিস্তিনের অধিকৃত ছোট্ট এলাকা গাজায় আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার ইসরায়েল। তাদের ভয়াবহ হামলায় এখন পর্যন্ত ৩৭ হাজার ৯২৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু। এছাড়া আহত হয়েছেন ৮৭ হাজারের অধিক ফিলিস্তিনি। জাতিসংঘের হিসাব মতে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে বাস্তুচ্যুত হয়েছে প্রায় ১৯ লাখ ফিলিস্তিনি।
তবে শুধু গাজায় নয়, এর পাশাপাশি পশ্চিম তীরেও আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার দেশটি। গত ৭ অক্টোবর থেকে সেখান কয়েক শত ফিলিস্তিনিকে নির্বিচারে হত্যা করেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। এছাড়া পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের জমি দখল করে আরও ৫টি বসতি স্থাপন করেছে দখলদাররা।